সাধারণ ফ্লু ভাবলেই বিপদ— কোভিড নিয়ে নয়া নির্দেশিকা রাজ্যের।
ফের কোভিডের বাড়বাড়ন্ত! মাঝে এর প্রকোপ কিছুটা কমলেও নতুন করে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে এই ভাইরাস। তবে অনেকেই কোভিডকে তেমন আর গুরুত্ব দিচ্ছেন না! ভাবছেন, কোভিড তো এখন সাধারণ ইনফ্লুয়েঞ্জার সমান হয়ে গিয়েছে। কিন্তু কোভিডের পরবর্তী পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া নিয়ে এখনও বেশ চিন্তিত চিকিৎসক মহল! কোভিড সংক্রমণ সেরে যাওয়ার পরেও দুর্বলতা কাটছে না। কারও শুকনো কাশি, কারও বুকে ব্যথা কিংবা শ্বাসকষ্ট। দুর্ভাগ্যজনক ভাবে এক মাসের মধ্যে বেশ কিছু কোভিড থেকে সেরে ওঠার পরও আচমকা হার্ট অ্যাটাক বা অন্য কারণে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পুনরায় হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন রোগীরা।
ওমিক্রনকে হালকা ভাবে নেওয়ার কারণে কোভিড নেগেটিভ হওয়ার পরে পরেই স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন মানুষ। আসলে অতিমারি সৃষ্টিকারী এই ভাইরাসের সংক্রমণের পর মানুষের ঠিক কী ধরনের সমস্যা হতে পারে সে বিষয়টা এখনও পরিষ্কার নয়। সাধারণ জ্বর-সর্দির তুলনায় কোভিডের ক্ষেত্রে হৃদ্পিণ্ড, ফুসফুস এবং অন্য অঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি।
জনসাধারারণের মধ্যে কোভিড পরবর্তী স্বাস্থ্য সচেতনতা বাড়ানোর জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দফতরের পক্ষ থেকে এক বিবৃতি জারি করা হয়েছে। জেনে নিন, কোভিভ থেকে সেরে ওঠার পর কী ভাবে নিজের খেয়াল রাখবেন।
প্রতীকী ছবি।
কী কী করবেন?
১) ঘন ঘন হাত ধোওয়ার অভ্যাস ছাড়লে চলবে না। সামাজিক দূরত্ববিধি মেনে চলতে হবে।
২) নির্দিষ্ট সময় অন্তর রুটিন চেকআপ করাতে হবে। উচ্চ রক্তচাপ ডায়াবিটিস ও কোলেস্টেরলের সমস্যা থাকলে সেই রোগগুলিকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। প্রয়োজনে কার্ডিওলজিস্ট ও জেনারেল ফিজিশিয়ানের পরামর্শ নিতে হলে দেরি না করাই শ্রেয়।
৩) স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভাস মেনে চলতে হবে।
৪) সপ্তাহে অন্তত পাঁচ দিন হালকা শরীরচর্চা করতে হবে। রোজের রুটিনে যোগাসন ও ধ্যানও যোগ করতে হবে।
৫) ধূমপান, মদ্যপান ও তামাকজাত পদার্থ সেবনের অভ্যাস ছাড়তে হবে।
৬) কোনও শারীরিক সমস্যা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনও ওষুধ খাবেন না।
৭) যদি কোভিডের দু’টি টিকার ডোজ সম্পূর্ণ না হয়, তা হলে কোভিড থেকে সেরে ওঠার তিন মাসের মধ্যে টিকাকরণ সেরে ফেলতে হবে। বুস্টার ডোজের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম মেনে চলতে হবে।
কী কী করবেন না?
১) কোভিড থেকে সেরে ওঠার পর অন্তত তিন মাস কোনও ভারী কার্ডিওভাসকুলার ব্যায়াম করা যাবে না। হৃদ্রোগীদের ক্ষেত্রে শরীরচর্চা শুরু করার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
২) হৃদ্রোগীদের ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধের ডোজ কমবেশি করা চলবে না।
৩) কোভিড থেকে সেরে ওঠার পরে যদি খুব জ্বর আসে, অক্সিজেনের মাত্রা ৯৩ শতাংশের নীচে নেমে যায়, বুকে ব্যথা হয়, বুকে ধড়ফড়ানি শুরু হয়, ক্লান্ত লাগে— তা হলে এই উপসর্গগুলি লং কোভিডের লক্ষণ হতে পারে। এ রকম কোনও উপসর্গ দেখা দিলে ভুলেও অবহেলা করবেন না।
৪) কোভিড থেকে সেরে উঠেই সঙ্গে সঙ্গে ভারী কাজকর্ম করতে শুরু করবেন না। অন্তত দু’ থেকে তিন সপ্তাহ পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হবে।