কোন লক্ষণ হাইপোথাইরয়েডিজ়মের ইঙ্গিত দেয়? ছবি: শাটারস্টক।
শরীরে থাইরয়েড হরমোনের ক্ষরণ ওঠানামা করলেই শরীরে একাধিক সমস্যা দেখা দিতে শুরু করে। থাইরয়েড একটি গ্রন্থি, যা আমাদের গলায় শ্বাসনালির ঠিক সামনের দিকে অবস্থিত। এই গ্রন্থি থেকে যে হরমোনের ক্ষরণ হয়, তা মানুষের শরীরের বিভিন্ন কাজ নিয়ন্ত্রণ করে। বিপাকক্রিয়া, বাচ্চাদের স্বাভাবিক বেড়ে ওঠা, বুদ্ধির বিকাশ, বয়ঃসন্ধির লক্ষণ, মহিলাদের ক্ষেত্রে ঋতুচক্র, সন্তানধারণ— সবই নির্ভর করে থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত হরমোনের উপরে। থাইরয়েড হরমোন দু’প্রকার— টি-থ্রি ও টি-ফোর। আমাদের শরীরের রক্তে একটি নির্দিষ্ট মাত্রায় এই হরমোন থাকে। কোনও কারণে এই হরমোনগুলি বেড়ে বা কমে গেলেই নানা সমস্যা শুরু হয় শরীরে।
থাইরয়েডের সমস্যা প্রধানত দুই ধরনের— ১) হাইপারথাইরয়েডিজ়ম— এ ক্ষেত্রে রক্তে থাইরয়েড নিঃসৃত হরমোনের পরিমাণ বেড়ে যায়। ২) হাইপোথাইরয়েডিজ়ম— এ ক্ষেত্রে রক্তে থাইরয়েড নিঃসৃত হরমোনের পরিমাণ কমে যায়।
অনেকেই আছেন, যাঁরা হাইপোথাইরয়েডিজ়মে আক্রান্ত হন। শরীরে থাইরয়েড হরমোনের ক্ষরণ কমে গিয়ে শুরু হয় নানা গোলমাল। খাদ্যে আয়োডিনের অভাব, কিছু অটো ইমিউন ডিজ়অর্ডার, থাইরয়েডের গ্রন্থির অস্ত্রোপচার হলে, রেডিয়েশন থেরাপি নিলে হাইপোথাইরয়েডিজ়মের সমস্যা শুরু হয়। এ ছাড়া কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায়, জন্মের সময়ে থাইরয়েড গ্রন্থি তৈরি না হলে, কিছু উৎসেচক ঠিকঠাক কাজ না করলে, বাঁধাকপি, ব্রকোলি, পুঁইশাক, মিষ্টি আলু, মটরশুটি, পিচফল, স্ট্রবেরির মতো খাবার বেশি মাত্রায় খেলে শরীরে থাইরয়েড হরমোনের ক্ষরণ কমে যেতে পারে।
কোন কোন উপসর্গ দেখলে সতর্ক হবেন?
শরীরে থাইরয়েড হরমোনের ক্ষরণ কমে গিয়ে শুরু হয় নানা গোলমাল। ছবি: শাটারস্টক।
হাইপোথাইরয়েডিজ়ম হলে নানা উপসর্গ দেখা দেয়। যেমন, দুর্বলতা, ওজনবৃদ্ধি, বেশি ঠান্ডা লাগা, পেশি এবং অস্থিসন্ধিতে ব্যথা, চুল পড়ে যাওয়া, পা ও মুখ ফুলে যাওয়া, গলার স্বর পাল্টে যাওয়া, ত্বক শুষ্ক হওয়ার মতো লক্ষণ দেখলে সতর্ক হোন। শরীরে থাইরয়েড হরমোনের ক্ষরণ কমে গেলে মনে রাখার ক্ষমতা কমে যায়, মানসিক চাপ বাড়ে, কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা শুরু হয়, অনিয়মিত ও অতিরিক্ত ঋতুস্রাব শুরু হয়। অন্তঃসত্ত্বাদের এই রোগ থাকলে বাচ্চার নানা ধরনের সমস্যা হতে পারে। জন্মের পরেই কোনও শিশু এই রোগে আক্রান্ত হলে তার বুদ্ধির স্বাভাবিক বিকাশ, পড়াশোনা, বয়ঃসন্ধির সময় নানা সমস্যা হতে পারে।