কারা খাবেন না ডাবের জল? ছবি: ফ্রিপিক।
ডাবের জল ভালবাসেন না, এমন মানুষ বিরল। গরমের দিনে পিপাসা মেটাতে নরম পানীয়ের চেয়ে ডাবের জল খাওয়ারই পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। শরীরে জলশূন্যতার সমস্যা হলে বা পেটের গোলমাল হলে তখনও ডাবের জল যেন মহৌষধ। স্বাদে হোক বা পুষ্টিগুণে, এর জুড়ি মেলা ভার। ডাবের জলে ক্যালোরির পরিমাণ খুব কম থাকে। এক গ্লাস ডাবের জলে ক্যালোরির পরিমাণ থাকে মাত্র ৪৫। সোডিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, জজ়িঙ্ক-সহ নানা খনিজে পরিপূর্ণ ডাবের জল। কিন্তু কথা হল, সকলের জন্য কি তা ভাল? কোন কোন রোগ থাকলে ডাবের জল খাওয়া অস্বাস্থ্যকর হতে পারে, তা জেনে রাখা ভাল।
কিডনির অসুখে একদম নয়
ডাবের জলে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম থাকে। চিকিৎসক সোনালি ঘোষ পরামর্শ দিচ্ছেন, যাঁদের কিডনির অসুখ আগে থেকেই আছে, তাঁরা নিয়মিত ডাবের জল খেতে শুরু করলে শরীরে পটাশিয়ামের মাত্রা বেড়ে ‘হাইপারক্যালিমিয়া’ হতে পারে। ফলে শরীরে খনিজ উপাদানগুলির ভারসাম্য বিঘ্নিত হতে পারে।
অ্যালার্জি আছে কি?
বিভিন্ন রকম খাবারে অ্যালার্জি থাকে অনেকের। যদি তেমন থাকে, তা হলে ডাবের জল খাওয়া চলবে না। এতে অ্যালার্জিজনিত সমস্যা আরও বেড়ে যেতে পারে। চিকিৎসকের কথায়, ‘ফুড অ্যালার্জি’-র চিকিৎসা যদি চলে বা কোনও রকম ওষুধ খান, তা হলে ডাবের জল খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। রোগীর অবস্থা দেখে তবেই বলা সম্ভব, তিনি ডাবের জল খেতে পারবেন কি না।
ফুসফুসের রোগ থাকলে
ফুসফুসে দীর্ঘ দিন ধরে সংক্রমণ ও তার থেকে সিস্ট হতে পারে অনেকের। ফুসফুসের সমস্ত সংক্রমণেরই ঠিক ভাবে চিকিৎসা না হলে শেষ পর্যন্ত ফাইব্রোসিসে পরিণত হয়। ফুসফুসের কোষ ক্ষতিগ্রস্ত হয় ও ধীরে ধীরে স্থূল ও কঠিন হয়ে পড়ে শ্বাসকার্যে বাধা তৈরি করে। তখন একে বলে ‘সিস্টিক ফাইব্রোসিস’। এমন অবস্থা থাকলে ডাবের জল স্বাস্থ্যকর না-ও হতে পারে।
রক্তচাপের সমস্যায়
ডাবের জলে প্রচুর পরিমাণে সোডিয়াম ও পটাশিয়াম থাকে। যদি শরীরে সোডিয়ামের মাত্রা বেড়ে যায়, তা হলে রক্তচাপ বাড়বে। আবার পটাশিয়াম বেড়ে গেলে রক্তচাপ কমবে। যাঁদের রক্তচাপের সমস্যা আছে, তাঁদের ডাবের জল না খাওয়াই ভাল। যদি খেতেই হয়, তা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
ডায়াবিটিসে ডাব ভাল না খারাপ?
ডায়াবিটিসে ডাবের জল খাওয়া স্বাস্থ্যকর কি না, সে নিয়ে মতান্তর আছে। চিকিৎসকের কথায়, ডায়াবিটিসের রোগী যদি সপ্তাহে এক দিন ডাবের জল পান করেন, তা হলে তেমন ক্ষতি হবে না। তবে রোজ যদি ডাবের জল খেতে থাকেন, তা হলে চিন্তার কারণ আছে। সাধারণত দেখা গিয়েছে, বাজারচলতি নরম পানীয় বা প্যাকেটজাত ফলের রসের থেকে ডাবের জলে শর্করার মাত্রা অনেকটাই কম। সে দিক থেকে ডাবের জল নিরাপদ। তবে ডায়াবিটিসের রোগী কী মাত্রায় ইনসুলিন নিচ্ছেন অথবা কেমন ওষুধ খাচ্ছেন, তার উপরেই সবটা নির্ভর করবে।