পায়ের পাতায় অসহ্য যন্ত্রণা কমবে কী উপায়ে? ছবি: ফ্রিপিক।
অফিসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা এক ভাবে চেয়ারে বসে থাকা, তার উপর হাঁটাহাঁটির অভ্যাসও নেই। দিনভর পা ঝুলিয়ে বসার পরে হাঁটতে গেলেই পায়ের পাতা যেন টনটনিয়ে ওঠে। রাতে শোয়ার পর বোঝা যায় যন্ত্রণা ক্রমশই বাড়ছে। ফুলে উঠেছে গোড়ালি। সকালে ঘুম থেকে উঠেও রেশ থাকে তার। বিছানা ছেড়ে উঠে মাটিতে পা ফেলতে গেলেই যেন বিদ্যুতের শক লাগে। আর সিঁড়ি ভাঙতে গেলে তো কথাই নেই। মনে হয়, গোটা পা-ই যেন অসাড় হয়ে গেল।
পাতের পাতার যন্ত্রণায় অল্পবিস্তর সকলেই ভোগেন। যাঁদের পেশার কারণে দীর্ঘ ক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে হয়, বা একটানা চেয়ারে পা ঝুলিয়ে বসে থাকতে হয়, তাঁদের এই সমস্যা বেশি। ক্রমাগত দাঁড়িয়ে কাজ করলে পায়ের তলার স্নায়ুতে চাপ পড়ে। তার উপর ভাল জুতো না পরলে বা বেশি হিল জুতো পরলে ব্যথা আরও বাড়ে।
ভেরিকোজ় ভেনের সমস্যা যদি থাকে, তা হলে তো কথাই নেই। পায়ের শিরায় টান ধরতে শুরু করবে। পা তো ফুলবেই, পায়ের ত্বকের উপরে ফুটে উঠবে নীল রঙের শিরা-উপশিরা। মহিলারা এই সমস্যা বেশি ভোগেন। বেশি সময়ে পা মুড়ে বসে থাকা বা একটানা দাঁড়িয়ে রান্না করলে পায়ের পাতার শিরা টান ধরে। তখন পা ফুলতে থাকে। শিরাগুলিতে যে রক্তজালক থাকে সেখানে রক্তের প্রবাহ বিপরীতমুখী হয়, ফলে শিরাগুলি ফুলে ওঠে। তাতে প্রদাহ শুরু হয়। তখন পায়ের যন্ত্রণা বাড়তে থাকে। মধ্যবয়সি মহিলাদের প্রায়ই বলতে শুনবেন, বসে থাকার পর উঠে পায়ের পাতা ফেললেই যন্ত্রণা হয়। তখন হাঁটাচলাও করা যায় না।
কী ভাবে কমবে?
পায়ের যন্ত্রণা কমাতে কাজে আসতে পারে ‘হট ওয়াটার থেরাপি’। একটি গামলায় গরম জল করে তাতে নুন মিশিয়ে নিন। এ বার সেই জলে পায়ের পাতা ডুবিয়ে রাখুন। দিনে তিন বার করলে যন্ত্রণা ধীরে ধীরে কমতে থাকবে।
বরফের সেঁক দিলেও ব্যথা কমবে। গামলায় গরম জলের বদলে কয়েক টুকরো বরফ রাখুন। বরফের উপর পা রেখে বসে থাকুন। আরাম পাবেন। অথবা একটি তোয়ালেতে কয়েক টুকরো বরফ নিয়ে পায়ের পাতার নীচে চেপে ধরে থাকুন ১৫ মিনিট। নিয়মিত করলে উপকার পাবেন।
একদম ঘরোয়া টোটকায় সর্ষের তেল গরম করে পায়ের নীচে মালিশ করতে পারেন। চাইলে অলিভ তেলে দিয়েও মালিশ করা যাবে। পায়ের নীচের স্নায়ুতে চাপ দিয়ে চক্রাকারে মালিশ করতে হবে।
পায়ে ব্যথা হলে অবশ্যই হিল জুতো পরা ছাড়ুন। তার বদলে আরমদায়ক জুতো পরুন। কী ধরনের জুতো পরলে উপকার হবে তা চিকিৎসকের থেকে জেনে নেওয়া ভাল।
অনেক দোকানেই ফুট রোলার পাওয়া যায়। মাটিতে রোলার রেখে তার উপর পা দিয়ে চেয়ারে বসুন। আস্তে আস্তে পা রোল করতে থাকুন। দিনে কয়েকবার করলে শিরায় টান ধরা কমে যাবে।