কেবল খাবার হিসাবেই নয়, প্রসাধনী তৈরিতেও ব্যবহার করা হয় মাশরুম। ছবি: প্রতীকী
বহু যুগ ধরেই বহু নারী-পুরুষ অনন্ত যৌবনের সন্ধান করে। কিন্তু কালের নিয়মে ‘দেহ পট সনে নট সকলই হারায়’, তবু যতটুকু ধরে রাখা যায়, তারই চেষ্টা। বহু প্রসাধনীই বয়স ধরে রাখার কথা বলে। কিন্তু জানেন কি, প্রসাধনীর জগতে বয়স ধরে রাখার কাজে সবচেয়ে বেশি যে জিনিসগুলির দিকে নজর থাকে, তার মধ্যে অন্যতম উপাদান ‘মাশরুম’। শোনা যায়, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও নাকি নিয়মিত মাশরুম খান। পৌষ্টিক উপাদান হিসাবে তো বটেই, ত্বকের বয়স ধরে রাখতেও অত্যন্ত কার্যকর মাশরুম। তাই কেবল খাবার হিসাবেই নয়, প্রসাধনী তৈরিতেও ব্যবহার করা হয় মাশরুম।
‘অয়েস্টার’ ও ‘শিতাকে’ নামক মাশরুমে প্রচুর বিটা গ্লুকান রয়েছে বলে মত বিশেষজ্ঞদের। বিটা গ্লুকান এক ধরনের দ্রবণীয় ফাইবার যা কোলেস্টেরলের সমস্যা দূর করে এবং হৃদ্যন্ত্রের স্বাস্থ্যের উন্নতি করে। ত্বক ভাল রাখতেও সহায়তা করে। তবে এই দু’টি ছাড়াও আরও দুই প্রকার মাশরুম রয়েছে, যেগুলির কদর প্রসাধনী জগতে খুব বেশি, ‘রেইশি’ ও ‘চাগা’। দ্বিতীয়টিকে অনেকে অমরত্বের মাশরুমও বলেন। মূলত জাপান, কোরিয়া ও চিনে এই মাশরুম পাওয়া যায়। ত্বককে শুষ্কতার হাত থেকে রক্ষা করতে সহায়তা করে এই মাশরুম। ইউরোপ ও আমেরিকায় এই মাশরুমের কদর খুব বেশি।
তবে মাশরুম খেলে কারও কারও অ্যালার্জির সমস্যা দেখা দিতে পারে। ছবি: সংগৃহীত
তবে শুধু প্রসাধনী তৈরির ক্ষেত্রে নয়, মাশরুম শরীরের সার্বিক স্বাস্থ্যরক্ষাতেও সহায়তা করে। মাশরুম সেলেনিয়াম নামক অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টে সমৃদ্ধ। অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট, ‘ফ্রি র্যাডিক্যালের’ ক্ষতিকর প্রভাব থেকে শরীরকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। ‘ফ্রি র্যাডিক্যাল’ এমন উপাদান যা হৃদ্রোগ এবং ক্যানসার ডেকে আনতে পারে। তা ছাড়া অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট শরীরকে বার্ধক্যজনিত ক্ষয় থেকেও রক্ষা করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এ ছাড়া মাশরুম ভিটামিন বি-সমৃদ্ধ, মাশরুমে রয়েছে রাইবোফ্লাভিন, নিয়াসিন এবং প্যান্টোথেনিক অ্যাসিড। এই উপাদানগুলি হৃদ্যন্ত্রের স্বাস্থ্যরক্ষা করতে সাহায্য করে। রাইবোফ্লাভিন লোহিত রক্তকণিকার জন্যও ভাল। নিয়াসিন পাচনতন্ত্র ভাল রাখে এবং স্বাস্থ্যকর ত্বক বজায় রাখতে সহায়তা করে।
তবে মাশরুম খেলে কারও কারও অ্যালার্জির সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই প্রথম বার চেখে দেখতে চাইলে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে নেওয়াই ভাল।