ছবি : সংগৃহীত।
ভারতে শিশুদের মধ্যে ডায়াবিটিসে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা ক্রমেই বাড়ছে। পরিসংখ্যান অন্তত তা-ই বলছে।
একটি সাম্প্রতিক রিপোর্টের উল্লেখ করলে বিষয়টি বোঝা যাবে। ২০১৯ সালে জামা নেটওয়ার্ক পত্রিকায় প্রকাশিত ওই রিপোর্টে দেখা গিয়েছে গোটা বিশ্বে শিশুদের ডায়াবিটিসে আক্রান্ত হওয়া এবং তদ্বজনিত মৃত্যুর ঘটনায় ভারত রয়েছে সর্বাগ্রে। ওই রিপোর্ট এ-ও বলা হয়েছিল যে ১৯৯০ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ভারতে ১০-১৪ বছর বয়সিদের ডায়াবিটিসে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা বেড়েছে ১০.৯২ শতাংশ। একই সময়কালে ১-৪ বছরের শিশুদের মধ্যে ওই হার বেড়েছে ১১.৬৮ শতাংশ।
— ফাইল চিত্র।
গুঁড়ো দুধের ভূমিকা কতটা?
কিন্তু ভারতীয় শিশুদের মধ্যে ডায়াবিটিস কেন বাড়ছে, তার যথাযথ উত্তর এখনও অমিল। কয়েকটি গবেষণায় সম্প্রতি ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে, শিশুদের টাইপ টু ডায়াবিটিসে আক্রান্ত হওয়ার একটি অন্যতম কারণ হতে পারে তাদের ছোটবেলার খাদ্যাভ্যাস। স্বাস্থ্য সংক্রান্ত প্রশিক্ষক ইশা লাল জানিয়েছেন, কয়েকটি গবেষণায় এ-ও বলা হয়েছে যে, শিশুদের গুঁড়ো দুধে চিনি থাকে। বিশেষ করে যে সমস্ত গুঁড়ো দুধকে শিশুদের পছন্দের স্বাদের কথা ভেবে বিশেষ ভাব তৈরি করা হয়, তাতে চিনির পরিমাণ থাকে বেশি। খুব ছোট বেলায় নিয়মিত চিনি খাওয়া শুরু হলে তা শরীরে ইনস্যুলিন প্রতিরোধ বাড়িয়ে দিতে পারে। যা থেকে পরে টাইপ টু ডায়াবিটিস হতেও পারে।
—ফাইল চিত্র।
গুঁড়ো দুধ কি ক্ষতিকর?
ইশা জানাচ্ছেন, শিশুদের গুঁড়ো দুধ আদতে সাধারণ দুধকেই বিশেষ প্রক্রিয়ায় শুকিয়ে নেওয়া। ওই প্রক্রিয়ায় দুধের ক্যালসিয়াম এবং প্রোটিনের মতো উপাদানও যথাযথ ভাবে বজায় থাকে। কিন্তু ওই প্রক্রিয়ায় কিছু ক্ষতিও হয়। যেমন লিপাসে নামের একটি এনজ়াইম নষ্ট হয়ে যায়। ওই এনজ়াইন দুধে থাকা ফ্যাটকে ভাঙতে সাহায্য করে। ইশা বলছেন, ‘‘কিছু কিছু গবেষণায় এ-ও বলা হয়েছে যে, দুধকে প্রক্রিয়াজাত করার পরে তাতে অক্সিডাইজ়ড কোলেস্টেরল তৈরি হয়েছে। যা থেকে পরবর্তী কালে প্রদাহ জনিত এবং হার্টের সমস্যা হতে পারে বলে মনে করেছেন গবেষকেরা।’’ তাই ইশার মতে গুঁড়ো দুধ শিশুদের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর না হলেও তাজা দুধের মতো উপকারীও নয়।
—ফাইল চিত্র।
বদলে কী খাওয়া যেতে পারে?
শিশুকে গুঁড়ো দুধ দেওয়া বন্ধ করতে চাইলে হাতে বিকল্পও রয়েছে। গরুর দুধ খাওয়ানো যেতে পারে। যদি সন্তান ল্যাক্টোজ় ইনটলারেন্ট হয় অর্থাৎ দুধ বা দুগ্ধজাত খাবারে সমস্যা থাকে তবে বাড়িতে তৈরি আমন্ড মিল্ক, ওট মিল্ক, নারকেলের দুধ দেওয়া যেতে পারে। তবে যদি শিশু গরুর দুধ না খায়, তবে উপযুক্ত পরিমাণে ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। এ ছাড়া, রাগিতেও ক্যালসিয়াম আছে। শিশুদের রাগির বার্লি খাওয়ানো যেতে পারে।