লিভার ভাল থাকে নিয়মে, ওষুধে নয়। ছবি: শাটারস্টক।
সারা দিনের ইঁদুরদৌড়। তার উপর নামমাত্র খাওয়া, কখনও বা প্রয়োজনের তুলনায় বেশি খেয়ে ফেলা। আবার সপ্তাহান্তে পার্টিতে মদ্যপান। কম ঘুম আর বেশি কাজের এই দুনিয়ায় এ ভাবেই দিন কাটে অধিকাংশ মানুষের। অনিয়মিত জীবনের সঙ্গে শখের বা অভ্যাসের মদ্যপান মিশিয়ে তাকে আরও জটিল করে তোলেন অনেকেই। সঙ্গে অবশ্যই চলে ব্যথার ওষুধ খেয়ে চলার প্রবণতা। সব মিলিয়ে অজান্তেই লিভারের উপর চলে দেদার অত্যচার।
চিকিৎসকদের মতে, হাড় সুস্থ রাখার জন্য ক্যালশিয়ামের ওষুধ খেতে পারেন, তবে লিভার সুস্থ রাখার কোনও ওষুধ নেই। আসলে লিভার ভাল থাকে নিয়মে, ওষুধে নয়। অনিয়মও করে যাব, আবার ওষুধ খাব, এই যুক্তিতে অসুখ দূরে রাখা যায় না। লিভারকে সুস্থ রাখার একমাত্র উপায় হল জীবনশৈলীতে বদল আনা। লিভারের অসুখ খুব দেরিতে ধরা পড়লে কিন্তু প্রাণ সংশয় থাকে। কোনও ওষুধ কিন্তু সে ক্ষেত্রে খুব বেশি কাজে আসে না।
লিভার বিগড়োচ্ছে, কী কী উপসর্গ দেখে সতর্ক হবেন?
ফ্যাটি লিভার ঠেকাতে লো ক্যালোরি ডায়েটে ভরসা রাখুন।
কী ভাবে জীবনশৈলীতে বদল আনবেন?
প্রতি দিন একটানা আধ ঘণ্টা থেকে চল্লিশ মিনিট হাঁটুন বা আধ ঘণ্টা শরীরচর্চা করুন। মেদযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন। ফ্যাটি লিভার রুখতে ঘন ঘন বাইরে খাওয়া বন্ধ করতে হবে। কারণ এর সঙ্গেই যুক্ত কোলেস্টেরল, ট্রাইগ্লিসারাইড ও ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্সের নানাবিধ সমস্যা, যাকে ‘মেটাবলিক সিনড্রোম’ বলে। ফ্যাটি লিভার ঠেকাতে লো ক্যালোরি ডায়েটে ভরসা রাখুন। ভাজা, তেলমশলা, মিষ্টি, ফাস্টফুড— এ সব বাদ দিতে পারলেই ভাল। একান্তই দু’-এক দিন খেতে চাইলে বাড়িতে খান। রান্নায় তেলের ব্যবহার কমাতে হবে। কিছু কিছু ভাজা ডুবো তেল ছাড়া হয় না, সে সব এড়িয়ে চলুন। খুব ইচ্ছে করলে মাসে এক-আধ বার খান। ভারতে লিভার খারাপ হয়ে যাওয়া মানুষের মধ্যে অধিকাংশই মদ্যপায়ী। মদ্যপানের পরিমাণও এক এক জনের শরীরের ক্ষমতার উপর নির্ভর করে। আপাত ভাবে ক্ষতি হচ্ছে না ভাবলেও জানবেন, দু’-এক পেগেও ক্ষতি হয় লিভারের। সিরোসিস অব লিভার ও লিভারের অন্যান্য রোগ ঠেকাতে তাই মদ্যপান ছাড়তেই হবে। মদ বর্জনই লিভারকে সুস্থ রাখার সেরা উপায়।