সন্তানধারণের ক্ষেত্রে কি শরীরের বাড়তি মেদ বাধা হতে পারে?
দাম্পত্য জীবনে এক ছোট্ট অতিথির আগমন অনেক সময়ে বদলে দেয় সম্পর্কের সমীকরণ। তবে চাইলেই কি সব সময়ে তা হয়? বেশি বয়সে বিয়ে, খাওয়াদাওয়ায় অনিয়ম ও মানসিক চাপ সন্তান জন্মের পথেও দাঁড়ি দিয়ে দিচ্ছে প্রায়শই। বিশেষজ্ঞদের দাবি, মহিলা বা পুরুষ, উভয়ের সন্তানহীনতার নেপথ্যেই রয়েছে বর্তমান জীবনযাত্রা। এক সময় পর্যন্ত নানা কুসংস্কারের বশে বন্ধ্যত্বের জন্য নারীকেই দায়ভার বইতে হত বেশি। কিন্তু আধুনিক গবেষণা ও বিজ্ঞান বুঝিয়েছে, একা নারী নয়, এই সমস্যা পুরুষদেরও থাকে।
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে, বন্ধ্যত্বের পিছনে মূলত যে কারণগুলি সবচেয়ে বেশি দায়ী, তার মধ্যে ডায়াবিটিস ও ওবিসিটি অন্যতম।
বিষেষজ্ঞরা বলছেন, মহিলাদের ক্ষেত্রে স্থূলতা ও ডায়াবিটিস অনিয়মিত ঋতুস্রাব এবং অকাল ঋতুবন্ধের সমস্যা ডেকে আনে। তা ছাড়াও ডায়াবিটিস থাকলে গর্ভপাতের ঝুঁকি, সময়ের আগেই প্রসব এবং বন্ধ্যত্বজনিত সমস্যা বাড়ে। স্থূলতার কারণে এখন অনেক মহিলাই পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রমের সমস্যায় ভোগেন। এই রোগে আক্রান্ত হলে শরীরে হরমোনের ভারসাম্য বিঘ্নিত হয়। এর ফলে বন্ধ্যত্বের আশঙ্কা আরও বাড়ে।
প্রতীকী ছবি
পুরুষদের ক্ষেত্রেও ডায়াবিটিস ও স্থূলতা যৌনক্ষমতার উপর ব্যাপক প্রভাব ফেলে। এই দুই সমস্যা ডেকে আনে ইরেকটাইল ডিসঅর্ডারের মতো রোগ। শরীরে শর্করার মাত্রা বাড়লে কিংবা ওজন বাড়লে পুরুষদের যৌনইচ্ছাও কমে যায়। ডায়াবেটিক রোগীদের শুক্রাণুর গুণগত মানও কমে যায় ফলে বন্ধ্যত্বের সমস্যা বাড়ে। তা ছাড়া স্থূলতা বেশি হলে পুরুষ শরীরে টেস্টোস্টেরন হরমোনের ভারসাম্য বিঘ্নিত হয়, এর প্রভাবও তাঁদের যৌনজীবনের উপর পড়ে।
তাই কোনও দম্পতি যদি সন্তানধারণের পরিকল্পনা করতে শুরু করেন, সে ক্ষেত্রে মহিলা ও পুরুষ উভয়কেই নিজেদের ওজন সম্পর্কে সচেতন হতে হবে। খুব কম বা খুব বেশি ওজন, দু’টিই কিন্তু প্রজনন ক্ষমতার পক্ষে বড় বালাই। উচ্চতা অনুযায়ী তাই ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা ভীষণ দরকার। প্রয়োজনে পুষ্টিবিদের পরামর্শ মেনে ডায়েট করুন, শরীরচর্চা শুরু করুন। এ ছাড়া রক্তে শর্করার মাত্রাকেও রাখতে হবে নিয়ন্ত্রণে।