—প্রতীকী ছবি।
মাথায় কোনও চিন্তা ঘুরপাক খেতে থাকলেই দাঁত দিয়ে নখ কাটেন। কাজ থেকে একটু অবসর মিলতেই বসে বসে পায়ের ফাটা গোড়ালি থেকে ছাল তুলছেন। এমন দৃশ্য আমাদের আশপাশে হামেশাই ঘটতে দেখা যায়। অনেকে আবার নিজের মাথার নির্দিষ্ট কিছু অঞ্চল থেকে অভ্যাসবশত চুল তুলতে থাকেন। ফলে মাথার ওই অংশটি ক্রমে ফাঁকা হতে থাকে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় একে ‘ট্রিকোটিল্লোম্যানিয়া’ বলা হয়। নিজের মধ্যে এই অভ্যাসগুলি ত্যাগ করার মানসিকতা তৈরি না হলে এই ‘রোগ’ সারানো সম্ভব নয় বলেই সকলে জানতেন এত দিন। তবে সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, এই ধরনের অভ্যাস বদলের ‘স্ট্র্যাটেজি’ হতে পারে হাতের আলতো ছোঁয়া বা বিশেষ পদ্ধতিতে হাত ঘষা।
—প্রতীকী ছবি।
‘জামা ডার্মাটোলজি’ নামে এক জার্নালে গবেষণাপত্রে প্রকাশিত তথ্যে বলা হয়েছে, দিনে অনন্ত দু’বার দুটি হাতের তালু, আঙুলের ডগা বা কনুইয়ের বিপরীত দিক একত্রিত করে ঘষতে পারলে এই অভ্যাসে ইতি টানা যেতে পারে। ছ’সপ্তাহ ধরে প্রায় ২৭০ জন ‘ট্রিকোটিল্লোম্যানিয়া’ আক্রান্ত রোগীর উপর সমীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, তাঁদের মধ্যে ৫৩ শতাংশই এই পদ্ধতিতে উপকার পেয়েছেন। ‘টিএলসি ফাউন্ডেশন ফর বডি-ফোকাস্ড রিপিটেটিভ বিহেভিয়ার্স’-এর দেওয়া রিপোর্ট বলছে, বিশ্বের প্রায় ৫ শতাংশ মানুষের মধ্যেই দাঁত দিয়ে নখ কাটা, ছাল তোলা বা মাথার চুল ছেঁড়ার অভ্যাস রয়েছে।
সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের দু'টি দলে ভাগ করে প্রথম দলটিকে এই অভ্যাস ছাড়ানোর চিকিৎসার মধ্যে দিয়ে এবং দ্বিতীয় দলটিকে ওই বিশেষ ‘স্ট্র্যাটেজি’র মধ্যে রাখা হয়। দ্বিতীয় দলটির মধ্যে ৮০ শতাংশই জানিয়েছেন তাঁদের অভ্যাসে বদল এসেছে। জার্মানির ইউনিভার্সিটি মেডিক্যাল সেন্টার হামবার্গ-এপেনডর্ফের ক্লিনিক্যাল নিউরোসাইকোলজি বিভাগের প্রধান গবেষক স্টিফেন মর্টিজ় বলেন, “বিকল্প এই চিকিৎসার নিয়ম হল শুধু নিজের দেহে আলতো করে ছোঁয়া। মানসিক উদ্বেগ বা চাপের মধ্যে থাকলে একটু জোরেও হাতের তালু ঘষতে পারেন। কিন্তু গায়ের জোরে কখনই নয়।”