কনজাঙ্কটিভাইটিস হলেই কি আই ড্রপ ব্যবহার করা উচিত? ছবি: শাটারস্টক।
রাঙা চোখ প্রচণ্ড কড়কড় করছে। ঘুম থেকে উঠেই পিচুটির জ্বালায় চোখ খোলা যাচ্ছে না, ফুলেও রয়েছে বেশ। ঘরে ঘরে এখন এই সমস্যা। এমন পরিস্থিতিতে ওষুধের দোকানে ভিড় করছেন অনেকে। নিজেরাই দাবি করছেন, কনজাঙ্কটিভাইটিস হয়েছে। এর পরেই দোকানদারের থেকে চেয়ে নিচ্ছেন চোখের ড্রপ। প্রেসক্রিপশন লাগবে জানিয়ে কিছু দোকান ফিরিয়ে দিচ্ছে বটে, তবে কিছু দোকানদার আবার কোনও প্রশ্ন ছাড়াই দিয়ে দিচ্ছেন স্টেরয়েড আই ড্রপ। এতে কতটা লাভ হচ্ছে?
এই প্রবণতাকে একেবারেই সমর্থন করছেন না চিকিৎসকেরা। এ ভাবে নেওয়া ড্রপই এই মুহূর্তে চোখের বড় ক্ষতি করতে পারে বলে সতর্ক করছেন তাঁরা। চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামী বলছেন, ‘‘কনজাঙ্কটিভাইটিস অনেক কারণেই হয়। তবে এখন চারপাশে যে ধরনের কনজাঙ্কটিভাইটিসে আক্রান্ত হচ্ছেন লোজকন, তার মূল কারণ ভাইরাস কিংবা ব্যাক্টেরিয়া। ভাইরাল কনজাঙ্কটিভাইটিসের ক্ষেত্রে মূলত অ্যান্টিবায়োটিক আইড্রপ দিয়ে থাকি আমরা। তবে ভাইরাসের কারণে সংক্রমণ হলে সাধারণত আইড্রপ দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে না, চোখ খুব বেশি কড়কড় করলে, চোখ জল শুকিয়ে এলে রোগীকে খুব বেশি হলে টিয়ার ড্রপ দেওয়া হয়। আর এক ধরনের কনজাঙ্কটিভাইটিস হয় মূলত বসন্তকালে। ফুলের পরাগরেণুর কারণে অ্যালার্জি থেকে এই ধরনের কনজাঙ্কটিভাইটিসে আক্রান্ত হন রোগী। সেই ক্ষেত্রেই কেবল স্টেরয়েডজাতীয় আইড্রপ দিয়ে থাকি আমরা। চিকিৎসকেরা চোখ পরীক্ষা করার পরেই প্রয়োজন বুঝে আই ড্রপ দেন রোগীকে। সংক্রমণ ব্যাক্টেরিয়াঘটিত না কি ভাইরাসঘটিত, সে সব না বুঝে আন্দাজে ড্রপ ব্যবহার করলে তা সরাসরি কর্নিয়ার ক্ষতির কারণ হতে পারে। কর্নিয়া ঝাপসা হয়ে কমতে পারে দৃষ্টিশক্তি।’’
স্টেরয়েড থেকে সাবধান। ছবি: সংগৃহীত।
কনজাঙ্কটিভাইটিসের হাত থেকে রেহাই পেতে অনেকে আবার আগাম সতর্কতা নিয়ে আই ড্রপের ব্যবহার শুরু করেন। তাতে কোনও লাভ হয় না, উল্টে পরে এই রোগে আক্রান্ত হলে তখন আর ভাল করে ওষুধটি কাজ করতে পারে না। সুবর্ণ জানিয়েছেন, ‘‘যাঁদের গ্লকোমা আছে কিংবা ডায়াবিটিস আছে, তাঁদের ক্ষেত্রে এই অভ্যাস বড় ক্ষতির কারণ হতে পারে। দৃষ্টিশক্তি চলে যাওয়ারও ঝুঁকি থাকে।’’