Rare Disease Bickerstaff’s Brainstem Encephalitis

গিয়ান-ব্যারের পর আরও এক বিরল স্নায়ুর রোগ পুণেতে, অসাড় হয়ে যাচ্ছে শরীর, মৃত্যু বৃদ্ধের

গিয়ান-ব্যারেয় আক্রান্তের মধ্যেই দেখা দিয়েছে আরও এর বিরল স্নায়ুর রোগ। অসাড় হয়ে যাচ্ছে শরীরের নিম্নাঙ্গ, ঝাপসা হচ্ছে দৃষ্টি। হারিয়ে যাচ্ছে হাঁটাচলা করার ক্ষমতা।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১১:৩১
Share:
After GBS a rare disorder named Bickerstaff’s Brainstem Encephalitis reported in Pune

গিয়ান-ব্যারের থেকেও মারাত্মক স্নায়ুর রোগের হানা পুণেয়। প্রতীকী ছবি।

গিয়ান-ব্যারে সিনড্রোম নিয়ে আতঙ্কের শেষ নেই। তার মধ্যেই আরও এক বিরলের মধ্যে বিরলতম স্নায়ুর রোগ দেখা দিল পুণেয়। গিয়ান-ব্যারে আক্রান্তের মধ্যেই এমন রোগ হানা দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন সেখানকার চিকিৎসকেরা। ইতিমধ্যেই সেই রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে এক বৃদ্ধের। জানা গিয়েছে, ওই ব্যক্তি গিয়ান-ব্যারেয় আক্রান্ত ছিলেন। পরে আরও এক রোগ বাসা বাঁধে তাঁর শরীরে। স্নায়ুর দু’রকম রোগের ধাক্কা সামলাতে না পেরে হৃদ‌্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় তাঁর।

Advertisement

পুণে হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টারের স্নায়ুরোগ চিকিৎসক সুধীর কোঠারি ওই ব্যক্তির চিকিৎসার দায়িত্বে ছিলেন। তিনি জানিয়েছেন, বৃদ্ধের শরীরে যে বিরল স্নায়ুর রোগ হানা দিয়েছিল তার নাম ‘বিকারস্টাফ ব্রেনস্টেম এনসেফেলাইটিস’ (বিবিই)। এটিও জীবাণু সংক্রমণ থেকেই হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। গিয়ান-ব্যারেতে আক্রান্ত হয়ে ভেন্টিলেশনে ছিলেন ওই বৃদ্ধ। এর পরেই তাঁর মস্তিষ্কে প্রদাহ শুরু হয়। শরীরের নিম্নভাগ অসাড় হয়ে যেতে থাকে। এমআরআই করে ধরা পড়ে তিনি ‘বিকারস্টাফ ব্রেনস্টেম এনসেফেলাইটিস’-এ আক্রান্ত।

কী এই রোগ?

Advertisement

‘বিকারস্টাফ ব্রেনস্টেম এনসেফেলাইটিস’ রোগটি খুবই বিরল। বছরে প্রতি এক লক্ষ জনের মধ্যে ০.৭৮ শতাংশের হতে পারে। এটি একরকমের ‘ইনফ্ল্যামেটরি ডিজ়অর্ডার’ যা মস্তিষ্কের পেশি ও কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রকে প্রভাবিত করে। গিয়ান-ব্যারের মতোই এই রোগ হলে শরীর অসাড় হতে শুরু করে। তবে বিবিই-র আরও কিছু উপসর্গ আছে। একে ‘বাইল্যাটেরাল অপথ্যালমোপ্লেজিয়া’ বলা হয় চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায়। চোখের স্নায়ুতেও প্রভাব ফেলে এই রোগ। দৃষ্টি পুরোপুরি ঝাপসা হতে শুরু করে। হাঁটাচলায় সমস্যা হয়, চিন্তাভাবনাও গুলিয়ে যেতে থাকে।

বিবিই-র লক্ষণ কি জিবিএসের মতোই?

পুণের চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, রোগীর ডায়েরিয়া হচ্ছে শুরুতে। এর পরেই শ্বাসকষ্ট শুরু হচ্ছে। শরীরের নিম্নাঙ্গের পেশিতে প্রচণ্ড যন্ত্রণা হচ্ছে এবং ধীরে ধীরে তা অসাড় হতে শুরু করছে। গিয়ান-ব্যারের সঙ্গে মিল থাকলেও, ‘বিকারস্টাফ ব্রেনস্টেম এনসেফেলাইটিস’ রোগটি আরও মারাত্মক হতে পারে বলেই মত চিকিৎসকদের। এই রোগে সরাসরি কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকে, ফলে হাত-পা অচল হতে শুরু করে।

বিবিই হলে মস্তিষ্কে প্রদাহ শুরু হয়। ফলে রোগীর চিন্তাভাবনা গুলিয়ে যেতে পারে। কথা জড়িয়ে যাবে, মুখে পক্ষাঘাতও হতে পারে। সেই সঙ্গেই চোখে সংক্রমণ দেখা দেবে।

কী থেকে হচ্ছে এই রোগ? চিকিৎসা কী?

চিকিৎসকদের অনুমান গিয়ান-ব্যারেতে আক্রান্তদের এই রোগ হওয়ার ঝুঁকি বেশি। কারণ ব্যাক্টেরিয়া বা ভাইরাস সংক্রমণের পরেই এই রোগ হতে পারে। ক্যাম্পাইলোব্যাক্টর জেজুনি, মাইকোপ্লাজমা নিউমোনিয়া বা হিমোফিলাস ইনফ্লুয়েঞ্জা নামক জীবাণুদের সংক্রমণে এই রোগ হতে পারে। দূষিত খাবার, জল, ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় এই রোগ হওয়ার আশঙ্কা বেশি।

গিয়ান-ব্যারের মতোই এমআরআই, ‘সেরিব্রোস্পাইনাল ফ্লুইড’(সিএসএফ) টেস্ট করলে এই রোগ ধরা পড়বে। এর চিকিৎসাও একই রকম। ‘ইন্ট্রাভেনাস ইমিউনোগ্লোবিউলিন’ (আইভিআইজি) ও প্লাজ়মা থেরাপি করে চিকিৎসা করা হবে রোগীর। গিয়ান-ব্যারের মতো এই রোগও ছোঁয়াচে নয়, তবে ভাইরাস বা ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমণ থেকে বাঁচতে মাস্ক পরা, পরিচ্ছন্ন থাকা ও বাইরের খাবার, জল, প্যাকেটজাত ঠান্ডা পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাবার না খাওয়ারই পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement