অ্যামিবার আক্রমণে মৃত্যু হল আমেরিকার লাস ভেগাসের এক ব্যক্তির। প্রতীকী ছবি।
বিজ্ঞানসম্মত নাম নায়েগ্লেরিয়া ফাউলেরি। লোকে বলে ‘ঘিলুখেকো অ্যামিবা’। শরীরে প্রবেশ করে এই অণুজীব বাসা বাঁধে মস্তিষ্কে। তার পরে কুরে কুরে খেতে থাকে মাথার কোষ। এমনই অ্যামিবার আক্রমণে মৃত্যু হল আমেরিকার লাস ভেগাসের এক ব্যক্তির। আর তাতেই ছড়িয়ে পড়েছে উদ্বেগ।
মূলত ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৪৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস উষ্ণতার জলে বাস করে এই অণুজীব। আমেরিকার দক্ষিণ নেভেডার স্বাস্থ্য আধিকারিকরা জানিয়েছেন, ৩০ সেপ্টেম্বর নাগাদ ওই ব্যক্তি হুভার ড্যামের পিছনে কলোরাডো নদীর একটি রিজ়ার্ভারে সাঁতার কাটতে নামেন। প্রশাসনের ধারণা, তখনই ওই পরজীবী নাক দিয়ে ওই ব্যক্তির শরীরে ঢুকে যায়।
আমেরিকার সেন্টার ফর ডিজ়িজ় কন্ট্রোল বলছে, সাধারণত নাক থেকে এই আণুবীক্ষণিক জীব চলে যায় মস্তিষ্কে। এক বার মাথায় প্রবেশ করলে প্রায় ৯৭ শতাংশ ক্ষেত্রেই প্রাণঘাতী হয়ে ওঠে এই অ্যামিবা। এই প্রাণঘাতী অনুজীবের আক্রমণে ‘প্রাইমারি অ্যামিবিক মেনিনজিয়োএনসেফেলাইটিস’ নামের একটি রোগ দেখা দেয়। ১৯৬২ সালের পর থেকে এখনও পর্যন্ত ১৫৪ জনের দেহে দেখা দিয়েছে এই অ্যামিবার প্রকোপ।
অ্যামিবা দেহে প্রবেশ করলে প্রাথমিক পর্যায়ে মাথাযন্ত্রণা, জ্বর ও বমি শুরু হয়। প্রতীকী ছবি।
অ্যামিবা দেহে প্রবেশ করলে একই সঙ্গে মেনিনজাইটিস ও এনসেফেলাইটিসের মতো উপসর্গ দেখা দেয় রোগীর দেহে। প্রাথমিক পর্যায়ে মাথা যন্ত্রণা, জ্বর ও বমি শুরু হয়। শেষ পর্যন্ত কোমা ও তার পর মৃত্যু। অণুজীবটি দেহে প্রবেশ করার ১ থেকে বারো দিনের মধ্যে উপসর্গ দেখা দেয়। উপসর্গ সৃষ্টির ৫ দিনের মধ্যেই সাধারণত মৃত্যু হয় রোগীর।
বিষয়টি নিয়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লেও এখনই ভয় পাওয়ার দরকার নেই বলেই মনে করছেন গবেষকদের একাংশ। জর্জিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক বলছেন, সতর্ক থাকলেই ৯৯ শতাংশ ক্ষেত্রে এড়ানো যেতে পারে এই অ্যামিবার আক্রমণ। তাঁদের পরামর্শ, আপাতত উষ্ণ জলের হ্রদ কিংবা নদী থেকে দূরে থাকাই ভাল। যদি জলে নামতেই হয়, তবে খেয়াল রাখতে হবে যেন নাকে কোনও ভাবেই জল না ঢোকে।