হ্যান্ড, ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজিস এবং টম্যাটো ফ্লু কি একই রোগ?
করোনা এবং মাঙ্কিপক্স আবহের মধ্যেই নতুন উদ্বেগের নাম হ্যান্ড, ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজিস বা টম্যাটো ফ্লু। ‘ল্যানসেট রেসপিরেটরি জার্নাল’-এর রিপোর্ট বলছে, কেরলের কোল্লামে ‘টম্যাটো ফিভার’-এর প্রথম আক্রান্তের হদিস মিলেছিল ৬ মে। জুলাইয়ের ২৬ তারিখ পর্যন্ত কেরলে পাঁচ বছরের কম বয়সি শিশুদের মধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাড়িয়েছিল ৮২।
ল্যানসেটের মতে, কেরলে আঁচল, আরিয়ানকাভু এবং নেদুভাথুর অঞ্চলে এই রোগের প্রকোপ বেড়েছে। প্রতিবেশী রাজ্য তামিলনাড়ু এবং কর্নাটকেও এই রোগ নিয়ে বিশেষ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এ ছাড়াও ওড়িশা-সহ দেশের অন্যান্য রাজ্যেও এই রোগে আক্রান্ত শিশুর হদিস মিলেছে।
চিকিৎসকদের মতে, শিশুদের যে কোনও সময়েই এই অসুখ হতে পারে। তবে সাধারণত দুই থেকে আট বছরের শিশুদের মধ্যে এ রোগ বেশি দেখা যায়। এই রোগ আটকানোর তেমন কোনও উপায় নেই। টিকাও নেই। অসুখটি ছোঁয়াচে ধরনের। স্কুলে যদি শিশুদের মধ্যে সংক্রমণ শুরু হয়, তবে আক্রান্ত শিশুর সংস্পর্শে আসা অন্য শিশুদের মধ্যেও তা সহজেই ছড়িয়ে পড়তে পারে।
এই অসুখে সাধারণত মুখ, পায়ের পাতা, হাঁটুর উপরে, হাতের তালুতে ফোস্কার মতো র্যাশ বেরোয়। সেই র্যাশগুলি ফেটে গেলে সংক্রমণ সারা গায়ে ছড়িয়ে পড়তে পারে। সঙ্গে থাকে জ্বর। দুর্বল করে দেয় এই অসুখ। এক বার অসুখ শুরু হলে তা পুরোপুরি সারতে সাত থেকে ১৪ দিন সময় লাগে। র্যাশ বেরোনোর কারণে শিশুদের মুখ, গলায় বেশ ব্যথাও থাকে। খেতে গেলেই সমস্যা দেখা দেয়।
প্রতীকী ছবি
রিপোর্ট বলছে, এই রোগের নির্দিষ্ট কোনও ওষুধ নেই। অ্যান্টিভাইরাল ওষুধও এ ক্ষেত্রে তেমন কাজ করে না। জ্বর কমানোর জন্য প্যারাসিটামল দেওয়া হয়। মুখের ব্যথা সারাতে মাউথওয়াশ, লোকাল অ্যানাস্থেটিক জেলি লাগানোর পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা।
এই রোগে আক্রান্ত শিশুদের খাবার গিলতে সমস্যা হয় বলে চিকিৎসকরা তাদের পায়েস, কাস্টার্ড, গলা ভাতের মতো ‘সেমি সলিড’ খাবার খাওয়ানোর পরামর্শ দিচ্ছেন। কারণ, পুরোপুরি তরল বা কঠিন— কোনও খাবারই এ সময়ে শিশুরা খেতে পারে না। এই অসুখে দুর্বলতা পুরোপুরি কাটতে বেশ কিছু দিন সময় লাগে। তাই শিশুকে মাল্টিভিটামিন ওষুধও চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী খাওয়ানো যেতে পারে। আক্রান্ত হলে অন্তত সপ্তাহ দুয়েক স্কুলে না যাওয়াই ভাল বলে পরামর্শ দিচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।