প্রতীকী চিত্র
‘অঙ্গদান’ বিষয়টির সঙ্গে বর্তমানে আমরা কমবেশি সকলেই পরিচিত। অঙ্গদান আদতে মানবিকতার পরিচয়। কিন্তু এই সম্পর্কে বিস্তারিত জ্ঞান বা সচেতনতা না থাকায় অনেকেই নিজে অঙ্গদানের মতো মহৎ কাজে নিজেকে সামিল হতে পারে না। ভারতের মতো দেশে বিপুল হারে অঙ্গদানের প্রয়োজন রয়েছে। তবে ভারতের অঙ্গদানের হার খুবই হতাশাজনক। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, প্রতি ১০ লাখে একেরও কম ভারতীয় তাঁদের অঙ্গ দান করেন, যা বিশ্বব্যাপী সর্বনিম্ন।
অঙ্গ প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে মুমূর্ষু রোগীকে বাঁচানো যায়। কিন্তু মানুষের সমস্ত রকমের অঙ্গ কৃত্রিম ভাবে তৈরি করা এখনও সম্ভব হয়নি৷ কৃত্রিম হৃদযন্ত্রের সাহায্যে মরণাপন্ন রোগীকে বাঁচানো সম্ভব হলেও তা মাত্র দশ বছরের জন্য কার্যকর থাকে৷ এ ছাড়া অন্য কোনও অঙ্গ বিকল হয়ে গেলে অন্য মানব শরীর থেকে সেই অঙ্গ প্রতিস্থাপনই একমাত্র বাঁচার পথ৷ অস্ত্রোপচার সফল হলে রোগীকে একটা সময় পর্যন্ত পর্যবেক্ষণে রাখতে হয়৷ তবে বিশেষজ্ঞদের মতে,অঙ্গ প্রতিস্থাপনের পরে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে খুব বেশি সময় লাগে না।
স্বাস্থ্য, বয়স, জাতি বা ধর্ম নির্বিশেষে প্রতিটি ব্যক্তিই অঙ্গ দান করতে সক্ষম। কিন্তু চাইলেই শরীরের যে কোনও অঙ্গ দান করা সম্ভব নয়। সে ক্ষেত্রে চিকিৎসকদের নিদিষ্ট কিছু নির্দেশিকা রয়েছে। বর্তমানে চিকিত্সাবিজ্ঞানে উন্নতির ফলে মানুষের শরীর থেকে কমপক্ষে ১২ রকমের অঙ্গ প্রতিস্থাপন করা সম্ভব৷ মূল অঙ্গের মধ্যে ফুসফুস, হৃদযন্ত্র, কিডনি, অন্ত্র, অগ্ন্যাশয় এবং যকৃত্ (লিভার) প্রতিস্থাপন করা সম্ভব৷
কোনও ব্যক্তির মৃত্যুর তিন ঘণ্টার মধ্যে এই সমস্ত অঙ্গ কেটে নেওয়া হলে প্রতিস্থাপন করা সম্ভব৷ এ ছাড়া কোনও ব্যক্তির যদি ‘ব্রেন ডেথ’ বা মস্তিষ্কের মৃত্যু ঘটে, তা হলেও এই সমস্ত অঙ্গ প্রতিস্থাপিত করা সম্ভব৷ পাশাপাশি সম্ভব মানুষের মৃত্যুর তিন ঘণ্টার মধ্যে শরীরের বেশ কিছু অংশের ‘টিস্যু’ বা তন্ত্র প্রতিস্থাপনও৷ যেমন, চোখের কর্ণিয়া, ত্বক, হৃদযন্ত্রের কপাটিকা (ভালভ), হাড়, শিরা৷
জীবিত ব্যক্তিরাও অঙ্গদানে সক্ষম। তবে তাঁরা কেবলমাত্র আত্মীয়, পরিজনদেরকেই অঙ্গ দান করতে পারেন। খুব কম ক্ষেত্রেই এর ব্যতিক্রম হয়। জীবিত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে তাঁরা কিডনি, লিভারের খানিক অংশ, অস্থিমজ্জা, ইত্যাদি দান করতে পারেন। তবে মনে রাখতে হবে, জীবিত ব্যক্তিদের অঙ্গদানের ক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি আইনি জটিলতা রয়েছে। পাশাপাশি, চিকিৎসকের ছাড়পত্র না পাওয়া পর্যন্ত তাঁরা অঙ্গদান করতে পারেন না।
অন্যকে নতুন জীবন দিন। এগিয়ে আসুন এবং অঙ্গীকার করুন অঙ্গদানের। ক্লিক করুন পাশের লিঙ্কে — bit.ly/47a6kLV