‘অমল’ যখন বাগানে চারুলতার পাশে বসে গদ্যের খাতা ভরাট করত, সে কি জানত যে তারও একদিন একটা কবিতা সমগ্র বেরোবে?
তার অনেক আগে থেকেই জানত। কারণ সে অনেক দিন ধরেই কবিতা লিখত। আমি তো আর সত্যিকারের অমল নই যে, হাজারটা ঘেরাটোপের মধ্যে আটকে থাকতে হবে। অমলের মধ্যে খানিকটা আমি থাকতে পারে। কিন্তু আমার মধ্যে কতটা অমল আছে, সে বিষয়ে সন্দেহ আছে। ‘অপুর সংসার’য়ের অপু তো শেষের দিকে তার লেখা উপন্যাসের পাতাগুলো হাওয়ায় উড়িয়ে দিয়েছিল। অপুর উপন্যাস প্রকাশিত হয়নি। আমার কবিতা সমগ্র বেরিয়েছে।
এবং আগামী কাল তার আনুষ্ঠানিক উন্মোচন... কেমন লাগছে?
বেশ ভাল। সেখানে শঙ্খ ঘোষের মতো জ্ঞানীগুণী-পণ্ডিত মানুষ থাকবেন। তিনি বড় কবি, সমালোচকও। থাকবেন আমার বাল্যবন্ধু সুধীর চক্রবর্তী। তিনিও বিদগ্ধজন। পরবর্তী কালে কবি হিসেবে যদি কেউ আমাকে বিচার করতে চান, তা হলে তার একটা সামগ্রিক চিত্র এই বইয়ে ধরা থাকবে। হয়তো কিছু পাঠক পাব।
তা হঠাত্ কাব্য সংগ্রহ বেরোলো?
যখন আমি আনন্দবাজার গোষ্ঠীর রেডিও চ্যানেল ফ্রেন্ডস এফ এমের জন্য অনুষ্ঠান করছি ‘তোমার আকাশ, তোমার বাতাস’ সেই সময় আনন্দ পাবলিশার্সের এম ডি সুবীর মিত্র বারবারই বলেছিলেন আমার কিছু লেখালেখি তিনি প্রকাশ করতে চান। নাট্য সংগ্রহ প্রকাশেরই ইচ্ছে ছিল তাঁর। কিন্তু আমার ইচ্ছে হল কবিতার একটা সম্পূর্ণ সংগ্রহ বেরোক। সেটাই হল। কাজটা শেষ করতে ছ’মাস লেগেছে। তবে ভুল একটাই হয়েছে। আমারই ভুল। কবি হিসেবে ফাইনাল প্রুফ খুব যত্ন নিয়ে দেখা হয়নি। লাগাতার কাজের ব্যস্ততা আর শ্যুটিং থাকায়। এরই জন্য একটা মন খুঁতখুঁত রয়ে গেল।
আপনার ছবির নায়িকারা আপনার কবিতা পড়েন? বা পড়তেন?
না। কখনও সে ভাবে পড়তে বলিনি। বা পড়ে কেউ কোনও মন্তব্য করেনি।
আপনাকে তো মহিলারা খুব পছন্দ করেন। নিজের কবিতা শুনিয়েছেন অভিনেত্রীদের?
না। তেমন অভিনেত্রী শ্রোতা পাইনি।
ইন্ডাস্ট্রিতে আপনার কবিতার কোনও শ্রোতা নেই তা হলে?
দীপঙ্কর দে-কে কবিতা শোনাই। আগে বেশ কিছু শ্রোতা ছিলেন। যেমন উত্পল দত্ত। শিল্প-সাহিত্যের অনুরাগী মানুষ।
অপর্ণা সেনকে কখনও শুনিয়েছেন? আপনার কাব্যের রসগ্রহণ উনি করেননি?
অপর্ণার সঙ্গে তো খুব বেশি কাজ করা হয়নি যে কবিতা শোনাবার অবসর পাব।
সুচিত্রা সেন জানতেন আপনি কবিতা লেখেন? ওঁর সঙ্গে যখন আলাপ তখন পুরোদস্তুর কাব্যচর্চায় আপনি...
দেখুন আমার কাছে সোজা কথা, বায়োস্কোপের নায়িকারা কবিতার জন্য নন। তাঁদের জগত্টা আলাদা। আর কবিতার প্রতিমারাও আলাদা।
কবিতার প্রতিমা কেমন হয়?
তাঁরা ঠিক কবিতার লাইনের মতো হয়। সারা জীবন থেকে যায়।
এই বই বেরোনোর পর কি কবিতা লেখা বেড়ে যাবে?
কবিতা আমি লেখার কে? না। কবিতা আমার দ্বারা লিখিত হয়। যাঁরা নিয়মিত কবিতা লেখেন, তাঁরা কবিতা সম্পর্কে অনেক বেশি মনোযোগী। আমি পাঁচ কাজের লোক। তবে অভিনয় ছাড়া যে কাজটা প্রায় কৈশোর থেকে করে আসছি সেটা কবিতা লেখাই।
কখনও শ্যুটিংয়ের ফাঁকে কবিতা লেখেন?
হ্যাঁ, খুব বাস্তব মুহূর্তে। দুটো শটের মাঝখানেও কবিতা লিখে ফেলি। বাড়িতে এসে রাত্রে মেজে ঘষে ঠিক করি। অনেক সময় এমন হয় সারাদিন মাথায় নানা কাজের ফাঁকে একটা দু’টো লাইন ঘুরঘুর করছে। বাড়ি ফিরে রাতে যখন বসলাম সেই লাইন থেকেই কবিতা জন্ম নেয়।
আবার কখনও কোনও ইমেজ বা চিত্রকল্প মনে আসে। রাতে সেই চিত্রকল্পই হয়ে ওঠে কবিতার ভাষা। এক লহমায় খসখস করে একটা গোটা কবিতা লিখে ফেলি কখনও।
কখনও বা একটা কবিতাই দু’চারদিন ধরে কাটাকুটি সংশোধন করে তৈরি হয়। বিভিন্ন সময় কবিতার যে মূল ভাবনাগুলো আছে সেগুলোকে রক্ষার চেষ্টা করি। তার জন্য একটা লাল খাতা আছে আমার। তাতে টুকে নিই। বাকিটা রাত্রে।
কৈশোরে যে কবিতা লিখতে শুরু করলেন সেটা কি কোনও মেয়ের প্রেমে পড়ে?
হ্যাঁ, একেবারেই রোম্যান্টিক ইনভলভ্মেন্ট থেকে। আঠারো বছর বয়স কী দুঃসহ! স্পর্ধা নিত মাথা তোলবার ঝুঁকি। আর সেই আমিকে প্রকাশ করতে গিয়েই কবিতা। অভিনয়ে যে ব্যাপারটা হয়, তা হল কী ভাবে নিজের মনোভাব আড়াল করা যায়। অন্য লোকের চরিত্রের আড়ালে। কারণ নিজেকে আড়াল করাটাই অভিনেতার কাজ। যারা নিজেকে দেখায় তারা অভিনেতা নয়। শো-ম্যান হতে পারে। কবিতার ক্ষেত্রে বেরিয়ে আসে আমার সেই আমি, যে নিজেকে আড়াল থেকে টেনে এনে প্রকাশ করতে চায়। সেই আমি মুক্ত। কবিতা আমাকে মুক্ত করে দেয়। কবিতা সমগ্রের ভূমিকাতে আমি লিখেছি, “আমি কবিতা লিখতে শুরু করেছিলাম কৈশোরের নতুন জন্মানো প্রেমাকাঙ্ক্ষার আন্দোলনে।.....পরবর্তী কালে অবশ্য একটু একটু করে প্রকৃতি, সমাজ, বেঁচে থাকার অপরিহার্য অভিজ্ঞতাগুলিও কবিতার মধ্যে ফুটে উঠতে আরম্ভ হল। আমি যত দূর জানি, কোনও বড় ভাব বা আদর্শের প্রভাবে আমার লেখা শুরু হয়নি”।
তার মানে স্ত্রী দীপা চট্টোপাধ্যায়ই আপনার আকৈশোর প্রেমের উত্স? ওঁকে চিঠির বদলে কবিতা দিতেন?
হ্যাঁ। দিয়েছি। কখনও বা চিঠির ফর্মে না দিয়ে ওর প্রতি আমার অনুভূতিগুলো কবিতার আকারে পড়ে শুনিয়েছি। দীপা বরাবরই আমার কবিতার বড় শ্রোতা।
এটাও সম্ভব! কবিতার উত্সে তো বিভিন্ন নারী থাকে এক পুরুষের....
আমার নিজের মনে হয় কবিতার একটা কেন্দ্রবিন্দু থাকে। একনিষ্ঠ জীবনযাপন না করলেও কবিতার ক্ষেত্রে একটা একনিষ্ঠতা থাকে।
সারা জীবন কবিতা লিখলেন। কিন্তু সৌমিত্রের অভিনেতা ইমেজের পাশে কবিতা কিন্তু এসে দাঁড়াতে পারল না...
কবিতাকে আমি দৈনন্দিনের বেঁচে থাকার মাধ্যম মনে করিনি। তবে আমার কবিসত্তার পরিচয় অভিনয়ের মধ্যে পাওয়া যায়। অ পুর মধ্যে, ‘চারুলতা’র অমলের মধ্যে আমার কবিসত্তা আছে। গৌতম ঘোষের ‘দেখা’ ছবিতে রয়েছে সেই সত্তার উদ্ভাস। যখন আমি বলি, “এই মৃত্যু উপত্যকা আমার দেশ নয়”।
এই এ বারের নির্বাচনে আপনার বামপন্থী বিশ্বাসের যে দলটি ছিল, তা একেবারে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেল বলা চলে। তা নিয়ে কোনও কবিতা লিখবেন না? লিখেছেন কিছু?
দেশ-কাল নিয়ে অনেক কবিতা লিখেছি আমি। কিন্তু এই মুহূর্তের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে কোনও কবিতা আমার মধ্যে খেলছে না। সত্তরের দশক নিয়ে আমার কবিতা ছিল ‘রোল কল’ এখনও মনে পড়ে লিখেছি “কতগুলো ভীরু বারুদকে আমি/ প্রচণ্ড রেগে গিয়ে ঘেন্নায়/ বোমা আর পাইপগান দিয়ে/ ভীষণ চমকে দিয়েছিলাম।”
অথচ আপনি ‘প্রতিদ্বন্দ্বী’র সিদ্ধার্থ নন, নন ‘ইন্টারভিউ’য়ের সেই যুবক, যার চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন রঞ্জিত মল্লিক। নন কলকাতা ’৭১-এর গলির মধ্যে পুলিশের তাড়া খেয়ে ছুটে আসা কোনও তরুণ উত্তাল সময়ের সঙ্গে এমন কোনও সরাসরি যোগ না থাকার ফলেই কি কবিতা ধারালো হয়েছে?
আমি এই চরিত্রগুলো হয়তো করিনি। কিন্তু এমন অনেক চরিত্র করেছি, যা অন্য কেউ করেনি।
আমার ইচ্ছে করে হ্যামলেট করতে, ইচ্ছে করে পৃথিবীর সব বড় ক্ল্যাসিকের চরিত্র করতে। ইচ্ছের কি শেষ আছে? আর একটা কবিতা শোনাই....“সত্বর ফিরে এসো বাতাসের কাছে/ বাতাসে কি বেয়নেট আছে?/ বিঁধেছে কি সাঁওতাল পাড়া?/ তোমার কি মনে আছে? মনে পড়ে শূন্য গ্রাম/ তছনছ তল্লাশ করেছে কার নাম?”
আপনার কবিতা লেখার দোসর ছিলেন তো কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়ও...
শক্তির জন্যই তো আমার প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘জলপ্রপাতের ধারে দাঁড়াব বলে’ প্রকাশিত হল। অনেক দিন ধরেই ও বলছিল ‘পুলুবাবু একটা কবিতার বই বের করো”। কিন্তু আমার মনে হত তখনও সময় আসেনি। এই করতে করতে চল্লিশ বছর বয়সে শক্তি উঠে পড়ে লাগল। এক প্রকাশক ওর কাছে এসে হাজির আমার কবিতাগুলো বই আকারে বের করবে বলে। শক্তি আমায় বলল, “ দ্যাখ পুলু, প্রকাশক নিজে এসেছে। আমরা চেষ্টাচরিত্র করে যোগাড় করিনি যখন এ বার বই বের হওয়া উচিত।” শক্তি মাঝে মাঝে আমার কবিতা পড়ে বলত, “এই কবিতাটা একটু রবীন্দ্রনাথের মতো হয়েছে”। সেই শুনে কবিতা আমি বাতিল করে দিতাম। আসলে তখন আমাদের প্রভাবিত করছে জীবনানন্দ দাশ, সুভাষ মুখোপাধ্যায়েরা। লেখায় রবীন্দ্রনাথের প্রভাব থাকুক আমরা চাইতাম না। সেটা থাকুক জীবনে।
আর সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়?
বহু দিনের সুখদুঃখের বন্ধুত্ব। সাহিত্যের বন্ধুত্ব। কত আড্ডা দিয়েছি। সে সব দিন খুব মনে পড়ে। সুনীলই আমার শ্রেষ্ঠ কবিতা সংকলন সম্পাদনা করেছিল খুব যত্ন করে। কাল উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে শক্তি আর সুনীলকে খুব মিস করব। ওরা থাকলে কাল নিশ্চয়ই আসত।
আর এক বন্ধুর কথা বলছেন না তো?
কে নির্মাল্য আচার্য? সে তো অনেক কথা। আমাকে কী নাছোড় ভাবেই না রাজি করিয়েছিল তাঁর সাহিত্যপত্রের যুগ্ম সম্পাদক হওয়ার জন্য। সেই পত্রিকার নামকরণ করলেন সত্যজিত্ ‘এক্ষণ’। প্রচ্ছদও এঁকে দিলেন। লিখেছিলেন রবীন্দ্রসঙ্গীত নিয়ে অসাধারণ এক লেখা। এক্ষণের জন্যই।
সত্যজিত্ রায় আপনার চারটে কাব্যগ্রন্থের প্রচ্ছদ এঁকেছিলেন। এটা কি আপনার অনুরোধে?
হ্যাঁ, আমিই গিয়ে বলেছিলাম। তবে প্রচ্ছদ এঁকে খুব খুশি হয়েছিলেন। উনি অত বড় মাপের মানুষ। না বললে কেন করবেন?
সত্যজিত্ রায় আপনার কবিতা পড়তেন?
এ নিয়ে কোনও দিন কিছু জিজ্ঞাসাও করিনি। কিন্তু আমি সন্দেশের জন্য সত্যজিত্ রায়কে নিয়েই ছড়া লিখেছিলাম। নাম ‘বিষয় সত্যজিত্’। লিখেছিলাম এই রকম “যখন হালদার শৈলেন. লিখিতে কইলেন/ সত্যজিতের ছড়া/ হল চক্ষু ছানা বড়া..... তবু কী অধিকার তার/ লিখতে হেন ছড়ার/ যাতে সত্যজিতের কথা/ হয়নি সত্য যথা/....এই সাত পাঁচ ভাবি/ আমি মুখে দিলাম চাবি/ আমার নেহাত জোর কপাল/ জন্মে দেখি অবাক একি/ এ তো সত্যজিতের কাল”এই কবিতা শুনে খুব নাটকীয় ভাবে কেটে কেটে উত্পল দত্ত বলেছিলেন “ইয়েস দ্য এজ অফ সত্যজিত্।”
আজকালকার কবিদের কবিতা পড়েন?
জয় গোস্বামী, শ্রীজাত এঁদের কিছু কিছু কবিতা পড়া হয়। যখন যেখানে দেখি। কিন্তু নিয়মিত যে সব পত্রিকায় বেরোয় তা ফলো করা হয় না।
আচ্ছা, ব্যান্ডের গান আপনার কেমন লাগে?
না না। এ নিয়ে আমি কোনও কথা বলতে চাই না। দিস ইজ নট মাই এরিয়া। আমার কাছে বাংলা আধুনিক গান শেষ হয়ে গিয়েছে সুমন চট্টোপাধ্যায়ের গানে। আর অঞ্জন দত্তের কিছু গানে।
আপনারও অনেক প্রেমের কবিতা আছে। কিন্তু কোনও বনলতা সেন, নীরা নেই। অরুণিমা সান্যাল বা বরুণাও নেই। মানসীর নামকরণ করেননি কেন?
মানসী আছে। যাকে ‘তুমি’ সম্বোধন করে বার বার কবিতা লিখেছি। লিখেছি “প্রত্যেক ভ্রমণ শুরু হয় এক পদক্ষেপ দিয়ে/ তুমি কি এক পা এগিয়ে আসবে না?”
আপনার কবিতায় বহু বার ভ্রমণ শব্দটা এসেছে...
কারণ জন্মে ইস্তক বাবার বদলির চাকরির দরুন অনেক ঘুরেছি আমি। নদী, সমুদ্র, পাহাড়, জঙ্গল অনেক দেখেছি। আমার কবিতায় যৌবনবেলা থেকেই বারবারই এসেছে সে সব স্মৃতি।
কিন্তু যৌবনে অত স্মৃতি তো নির্মাণ হয় না?
প্রিয়জনের বিচ্ছেদ, সম্পর্কের ব্যর্থতা, ফেলে আসা দিন সব স্মৃতিও থেকেছে। স্মৃতি না থাকলে তো কবিতা হয় না। এ কবিতা লিখতে গেলে যেটা দরকার তা হল ‘ইমোশন রিকালেকটেড ইন ট্র্যাঙ্কুইলিটি’। অর্থাত্ প্রশান্তির মধ্যে আবেগের স্মৃতি অনুভব। সেটাই হয়েছে আমার বারবার। আমার বাবা যখন চলে যান তখন ভীষণ ভেঙে পড়েছিলাম। উনি আমার বন্ধুর মতো ছিলেন। সব শোকেরই একটা আয়ু থাকে। বাবার শোক কাটতে আমার তিন বছর লেগেছিল। শোকে যখন মুহ্যমান লিখেছি, “কেবল রোরুদ্যমান স্মৃতিখানি যা আমারই জীবন এবং তোমারই দান/ ইহসংসার এখনও তারই সুষমায় বিন্যস্ত দেখতে পাই।”
কবিতা সমগ্র বেরোচ্ছে। আনন্দ, রোমাঞ্চ.....ঠিক কী অনুভূতি?
কিছুটা আনন্দ। আর বেশিটাই নিরাসক্তি। নিরাসক্তি বা বৈরাগ্য না থাকলে জীবন চলে না। সৃষ্টি তো হয়ই না। বৈরাগ্য মানুষের ধর্ম। এই নিরাসক্তি নিয়েই কালকের দিনটা আনন্দে কাটাতে চাই। নিরাসক্তি থাকলেই আগামী দিনের দিকে এগোনো যায়। পরের কবিতা লেখা যায়।
ইদানীং কোনও ছবির জন্য বড় চরিত্র আর কী করলেন?
‘শেষ বলে কিছু নেই’ অঞ্জন দত্তের এই ছবিতে বেশ গুরুত্বপূর্ণ একটা চরিত্রে অভিনয় করছি।
‘হোমাপাখি’ যার লেখা সেই লন্ডনপ্রবাসী চিকিত্সক ডা. অমিত বিশ্বাসের ছবি ‘ব্রিজ’য়ে মুখ্য চরিত্রে আছি।
‘সেলফি’ ছবিতে অভিনয় করছি সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের চরিত্রে। মানে নিজেরই চরিত্রে। এবং আমার চার পাশের কিছু ঘটনা নিয়ে গল্প। পরিচালক শোভন তরফদার।
‘সেলফি’ ছবিটা নাকি আটকে গিয়েছিল। অনেক দিন কাজ হয়নি।
সে তো অনেক আগের কথা। এই তো কয়েক দিন আগে ছবির কাজ শেষ হল।
ইন্টারভিউয়ের শেষে একটা আর কবিতা হবে নাকি?
হতেই পারে.....এটা আমার ‘পদ্মবীজের মালা’ কাব্যগ্রন্থের কবিতা....
“বেলা যেমন নিভু নিভু তেমনই প্রত্যাশা/
শুধু কেবল নিভতে চায় না ভোরের ভালবাসা/
ভালবাসার নাম ধরে কে ডাকল সেই ভোরে/
সে ডাক শুনি বেলাশেষের প্রচ্ছায়া মর্মরে.....”
ছবি: সুব্রত কুমার মণ্ডল।