১৭ ডিসেম্বর শুটিং ফ্লোরে আচমকা অসুস্থ বোধ করেন সন্দীপ। তার পর তাঁকে দক্ষিণ কলকাতার একটি নার্সিং হোমে ভর্তি করা হয়। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
সময়ের সঙ্গে সিরিয়াল বা সিনেমার শুটিং ফ্লোরই হয়ে ওঠে শিল্পীর ‘বাড়ি’। কাজের প্রতি ভালবাসা এবং দায়বদ্ধতা বজায় রাখতে অনেক সময়েই নিজের খেয়াল রাখা সম্ভব হয় না। ঠিক যেমনটি ঘটেছিল টলিপাড়ার পরিচালক সন্দীপ চৌধুরীর ক্ষেত্রে। গত ১৭ ডিসেম্বর শুটিং ফ্লোরে আচমকা অসুস্থ বোধ করেন সন্দীপ। তার পর তাঁকে দক্ষিণ কলকাতার একটি নার্সিং হোমে ভর্তি করা হয়। ৩ জানুয়ারি মঙ্গলবার সকালে সেখানেই তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে প্রয়াত পরিচালকের দীর্ঘকালীন অসুস্থতার কথাই উঠেছে। শুটিং ফ্লোরে সে দিন ছিল না কোনও চিকিৎসক। কিন্তু কেন? শুটিং ফ্লোরে অভিনেতা এবং কলাকুশলীর অসুস্থতার মোকাবিলায় কী কী ব্যবস্থা থাকা উচিত?
এই প্রসঙ্গে আনন্দবাজার অনলাইনের তরফে ফেডারেশনের (ফেডারেশন অফ সিনে টেকনিশিয়ানস অ্যান্ড ওয়াকার্স অব ইর্স্টান ইন্ডিয়া) সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তিনি বলেন, ‘‘এগুলো খুবই বিরল ঘটনা। সত্যিই বলছি প্রত্যেকটা ফ্লোরে ডাক্তার বা অ্যাম্বুল্যান্স থাকবে— ভাবনাটা নিঃসন্দেহে ভাল। কিন্তু সেখানে একটা সমস্যা রয়েছে। আসলে টলিপাড়ার অধিকাংশ এখন ব্যক্তিগত মালিকানাধীন। তাই সে ক্ষেত্রে ফ্লোরে নিয়মিত চিকিৎসকের উপস্থিতির জন্য আগে অনুমতির প্রয়োজন রয়েছে। সেই সঙ্গে স্টুডিয়োর পরিকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধা নিয়েও প্রাথমিক আলোচনা প্রয়োজন।”
পরিচালক অঞ্জন চৌধুরীর পুত্র সন্দীপ দীর্ঘ দিন ধরে ব্লাড সুগারের সমস্যায় ভুগছিলেন। সেই সঙ্গে ছিল কিডনির সমস্যাও। সেই প্রসঙ্গ মনে করিয়ে দিয়ে স্বরূপ বললেন, ‘‘বাবুর (সন্দীপ চৌধুরী) ক্ষেত্রে বিষয়টা কিন্তু আলাদা। ওর কাছে শুটিং মানেই প্যাশন। হয়তো ঠিক মতো নিজের খেয়াল রাখত না। তাই অসুস্থতা বাড়তে বাড়তে আজকে এই দুঃসংবাদ।’’
সাধারণত, টলিপাড়ায় সিনেমার শুটিং অনিয়মিত। তা নির্ভর করে লোকেশন এবং শিডিউলের উপর। বিপরীতে সিরিয়ালের শুটিং কিন্তু প্রায় দৈনন্দিন রুটিনের সমান। তাই জরুরি অবস্থার মোকাবিলায় ফ্লোরে ডাক্তারের উপস্থিতি যে গুরুত্বপূর্ণ তা অস্বীকার করছেন না ফেডেরেশন সভাপতি। তাঁর কথায়, ‘‘আসলে সিনেমায় অ্যাকশন স্টান্ট-এর দৃশ্যের শুটিংয়ের সময় কলাকুশলীর সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে লোকেশনে আমরা ডাক্তার এবং অ্যাম্বুল্যান্স রাখার ব্যবস্থা করি। কিন্তু সন্দীপের ঘটনায় আমরা সিরিয়াল নিয়ে নতুন করে ভাবতে বাধ্য হচ্ছি।’’ আপৎকালীন সমস্যার মোকাবিলায় কলাকুশলীর স্বার্থে ফেডারেশন এখন কী পদক্ষেপ করে, সে দিকে নজর থাকবে।