সুদীপা এবং কোয়েল।— ফাইল চিত্র
সেলেবদের বাড়ির দুগ্গা পুজো কেমন হয়? এই কৌতূহল নিয়েই প্রতি বছর দর্শনার্থীর ঢল কোয়েল মল্লিক, অভিজিৎ ভট্টাচার্য, সুদীপা চট্টোপাধ্যায়, ভাস্বর চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে।
এ বছরেও কি তাই-ই?
সর্বজনীন নয়, পুজো এবার অভ্যন্তরীণ।
ইতিমধ্যেই সুদীপা এবং অগ্নিদেব সোশ্যাল মিডিয়ায় বার্তা পাঠিয়েছেন, ‘অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে, এবছর আমাদের চ্যাটার্জি বাড়ির পুজো একেবারেই পারিবারিক আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুবান্ধবদের মধ্যে সীমিত থাকছে।’
অর্থাৎ, এ বছর সবার মঙ্গল চেয়ে অনুরাগীদের থেকে কিছুটা হলেও নিজেদের গুটিয়ে নিয়েছেন তাঁরা। এ বিষয়ে সুদীপার মত, পুজোও ছোট করা হচ্ছে আকারে। কারণ করোনা। তার জন্য চট্টোপাধ্যায় পরিবারের ভীষণ মনখারাপ।
আরও পড়ুন: দর্শক ঢোকাতে পুজো কমিটিগুলির আর্জি খারিজ হাইকোর্টে
পুজোর পাশাপাশি তারকাদেরও হাট বসে চট্টোপাধ্যায় পরিবারে। সেসবও দেখতে পাবেন না অনুরাগীরা?
না, একেবারে হতাশ করছেন না তারকা দম্পতি। পুজোর কিছু অংশ, পারিবারিক কিছু মুহূর্ত তাঁরা দেখানোর চেষ্টা করবেন ভার্চুয়ালি।
আমন্ত্রণ একান্তই ব্যক্তিগত
কোয়েল মল্লিক এবং রঞ্জিত মল্লিক। সঙ্গে যদি নিসপাল সিং রানের দেখা মেলে, উপরি পাওনা সেটা। পুজো দেখার পাশাপাশি এই তিন আকর্ষণের জন্য অষ্টমীতে তিল ধারণের জায়গা থাকে না মল্লিক বাড়িতে। এ বছর সেখানেও রুদ্ধদ্বারে পুজো!
মল্লিক বাড়ির সদস্যরা এক সঙ্গে এই সিদ্ধান্ত নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় জানিয়েছেন, ‘‘এই বছর প্রসিদ্ধ মল্লিক বাড়ির দুর্গাপুজো একটি পারিবারিক অনুষ্ঠান হতে চলেছে। বর্তমান পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে দর্শনার্থী ও সংবাদমাধ্যমকে আমরা আমন্ত্রণ জানাতে পারছি না। সকলের সুরক্ষাকে প্রাধান্য দিয়েই আমাদের এই সিদ্ধান্ত।’’
সদ্য করোনামুক্ত মল্লিক পরিবার এবং রানে। তাই বাড়তি সতর্কতা হিসেবে এটুকু তাঁরা চাইতেই পারেন অনুরাগীদের থেকে। তাছাড়া, যেভাবে করোনা বাড়ছে উৎসব আবহে সেটাও মনে রাখতে হবে সবাইকে।
ভার্চুয়ালি ২৫ বছরের পুজো দেখুন
গায়ক অভিজিৎ ভট্টাচার্যের পুজো এ বছর ২৫-এ পা দিচ্ছে। স্বাভাবিক ভাবেই জমকাল আয়োজনের কথা বছরের শুরু থেকেই ভেবে রেখেছিলেন তিনি এবং তাঁর পরিবার। ভেস্তে গিয়েছে সেই পরিকল্পনা। লোখান্ডওয়ালায় এক ডাকে পরিচিত ভট্টাচার্য বাড়ির পুজো এবার একদম ঘরোয়া, জানিয়েছেন অভিজিৎ। তাঁর যুক্তি, ‘‘করোনার এই সাঙ্ঘাতিক পরিস্থিতিতে অন্য বারের মতো করে উদযাপনের কথা ভাবতেই পারছি না। তাই মানুষের নিরাপত্তা আর সুস্থতার কথা ভেবে এ বছর পুজোর চেনা উদযাপন বন্ধ রাখছি আমরা।’’
অভিজিৎ এবং ভাস্বর।— ফাইল চিত্র
আরও পড়ুন: এক ছবিতে শঙ্কু ও ফেলুদা, সত্যজিতের জন্মশতবার্ষিকীতে জোড়া চমক
পাশাপাশি আশ্বস্ত করেন অনুরাগীদের, ‘‘এ বছরটা আমাদের কাছে ভীষণ স্পেশাল। কারণ এ বছর আমাদের বাড়ির পুজোর ২৫ বছর হল। তাই ভিড়ে ঠাসা উৎসব না হলেও এ বছরটা মানুষের পুজোয় মাততে চাইছি। এই উপলক্ষে তাই আমাদের পুজোর পুরনো উদযাপনগুলো থেকে সবটুকু আনন্দের মুহূর্তের কোলাজ একটা ভিডিও-র আকারে মানুষের কাছে পৌঁছে দিচ্ছি আমরা। আর পুজো বন্ধ তো কী হল! গত ২৫ বছর ধরে মুর্শিদাবাদ থেকে যে ঢাকি, ডেকরেটরস, শিল্পীরা এসে আমার লোখান্ডওয়ালার পুজোকে এত জমকালো করে তুলেছেন, তাঁদের মুখের হাসি কি মলিন হতে দেওয়া যায়?
পুজোয় ওঁদের মুখে হাসি ফোটানোর দায়িত্ব তাই আমরাই কাঁধে তুলে নিয়েছি।’’
দর্শনার্থী আসবেন হাতে গোনা
অভিনেতা ভাস্বর চট্টোপা ধ্যায়ের দেশের বাড়িতে ঘটা করে দুর্গা পুজো হয়। এ বছর পুজো ৮০ বছরে পা রাখছে। ‘‘আর এই বছরেই করোনা হতে হল!’’ পুজো নিয়ে আড্ডা দেওয়ার সময় হাল্কা হতাশা প্রকাশ করেই ফেলেছিলেন অভিনেতা। তিনিই জানালেন, আত্মীয়-পরিজন ছাড়াও আশপাশ থেকে প্রচুর দর্শনার্থী আসেন। কলকাতা থেকেও ইন্ডাস্ট্রির অনেকে যান দেশের বাড়ির পুজো দেখতে। বেশি ভিড় হয় অষ্টমীর অঞ্জলির সময়।
এ বার সে সবে দাঁড়ি। হাতেগোনা কিছু মানুষ হয়ত পুজো দালানে পা রাখার অনুমতি পাবেন। এক সঙ্গে অনেক জনকে ঢুকতে দেওয়া হবে না। প্রত্যেকেই ঢুকবেন অবশ্যই নিরাপত্তা এবং সামাজিক দূরত্ব মেনে। এ বছর সবার কথা ভেবে তাই ‘নো নিমন্ত্রণ’।