Rekha

বিনোদকে বিয়ে করে শ্বশুরবাড়ি ঢুকতেই রেখাকে চপ্পল খুলে মারতে গিয়েছিলেন শাশুড়ি!

বিনোদ মেহরা যেন দেবদূত হয়ে ধরা দিলেন অভিনেত্রীর জীবনে। ১৯৭৮ সালে মানিক চট্টোপাধ্যায় পরিচালিত ‘ঘর’ রেখার চোখে আরও এক বার সুখী সংসারের ছবি এঁকে দিল।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০২০ ১৬:৪৭
Share:

অমিতাভ-রেখার প্রেমের তুলনায় কম আলোচিত বিনোদ মেহরা-রেখার প্রেম। —ফাইল চিত্র।

অভিনয় নিয়ে তো কোনও কথাই হবে না, সৌন্দর্যেও বিদ্যুৎরেখা ভানুরেখা গণেশন। কিন্তু প্রেমভাগ্য রীতিমতো গ্রহণ লাগা। যত বার প্রেমে পড়েছেন হয় প্রেম ভেঙেছে, নয়তো বিবাহিত পুরুষ তাঁর জীবনে এসেছেন।

Advertisement

অমিতাভ বচ্চন-রেখার প্রেম বলিউডি প্রেমের জলসার মধ্যমণি। তুলনায় কম আলোচিত বিনোদ মেহরা-রেখার প্রেম। জয়ার চোখের জল অমিতকে তখন একটু একটু করে সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে রেখার থেকে। ঋষি কপূর-নীতু সিংহের বিয়ের রাতে রেখা যতই সিঁথিতে সিঁদুররেখা টেনে সিমন্তিনী সাজুন, বিগ বি-র ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করুন, তাঁর কাছে ঘেষতে চান, অমিত কিন্তু তত দিনে পরিযায়ী প্রেম সেরে আবার সুরক্ষিত বাসায় ফিরে গিয়েছেন।

অমিত যেতেই রেখা আবার একা। নিশিদিন জ্বলছেন, পুড়ছেন বিরহের তাপে। কিন্তু আগুন নেভানোর মতো কাউকেই পাচ্ছেন না। সেই সময় বিনোদ মেহরা যেন দেবদূত হয়ে ধরা দিলেন অভিনেত্রীর জীবনে। ১৯৭৮ সালে মানিক চট্টোপাধ্যায় পরিচালিত ‘ঘর’ রেখার চোখে আরও এক বার সুখী সংসারের ছবি এঁকে দিল। কোনও দিকে না তাকিয়ে রেখা চোখ বুজে আবার প্রেমে পড়লেন ছবির নায়ক বিনোদ মেহরার।

Advertisement

আরও পড়ুন: ‘রিয়ার সঙ্গে বিয়ে! আমার কাছে অঙ্কিতাই সুশান্তের শেষ প্রেম’​

কিন্তু এই নায়কও যে বিবাহিত!

রেখার মনে যখন প্রেমের নেশা তাকে ঠেকানোর সাধ্যি কোন পুরুষের থাকে? বিনোদও পারেননি। ফলে, প্রেম এল দুদ্দাড়িয়ে। অমিতের ছেড়ে যাওয়া রেখা তখনও ভোলেননি। এ বার তাই তড়িঘড়ি প্রেমিককে নিয়ে কলকাতায় চলে এলেন নায়িকা। কালীঘাটে দেবী কালিকাকে সাক্ষী রেখে বিয়ে সেরে নিলেন সবার আগে। যাতে অমিতের মতো বিনোদও তাঁকে ফাঁকি দিতে না পারেন!

কিন্তু যাঁর প্রেম আর বিয়ের ঘরে রাহু-কেতু-শনির দশা তাঁর কপালে এত সহজে সুখ মেলে? বিয়ে-থা সেরে রেখা বিনোদের হাত ধরে চললেন শ্বশুরঘর করতে। দু’জনেরই ধারণা ছিল, জোড়ে দেখলে পরিবার তাঁদের ফেলতে পারবে না।

পরবর্তী কালে বিনোদকে ‘ভাল বন্ধু’ বলে উল্লেখ করেন রেখা। —ফাইল চিত্র।

কিন্তু সে গুড়ে বালি! লিফটে করে বিনোদের ফ্ল্যাটে পৌঁছে ডোর বেল বাজাতেই মুখোমুখি শাশুড়ি। শাড়ির আঁচল ভাল করে গায়ে জড়িয়ে নিচু হয়ে রেখা যেই পা ছুঁতে গেলেন অমনি ধাক্কা মেরে সরিয়ে দিলেন বিনোদের মা! তার পর অবিশ্রান্ত গালিগালাজ আর গায়ে হাত!

কিংকর্তব্যবিমূঢ় রেখা তখনও দরজায় দাঁড়িয়ে। পাশে মাথা নিচু করে বিনোদ মেহরা। এতর পরেও রেখা যাচ্ছেন না দেখে, শেষে চপ্পল খুলে রেখাকে ঘা কতক বসিয়ে দিলেন তিনি। এ বার যেন হুঁশ ফিরল ‘ঘর’-এর স্বপ্ন দেখা নায়িকা ‘আরতি’ রেখার। বিনোদকে একটাও কথা বলতে না দেখে বুঝলেন, ঘর তাঁর কোনও দিনই হবে না!

মাথা নিচু বিনোদের পাশ কাটিয়ে যখন রেখা ‘মেহরা হাউজ’ ছেড়ে লিফটের দিকে এগোচ্ছেন, দু’চোখে জল টলমল করছে। লিফটের চারপাশে, বাড়ির বাইরে বহু জন তখন তামাশা দেখতে ব্যস্ত!

রেখার জীবনে ঘর না হওয়ার এই জ্বালা ধরা আছে ইয়াসির উসমানের ‘রেখা: দ্য আনটোল্ড স্টোরি’ জীবনীতে।

আরও পড়ুন: চাঁদের হাটে গ্রহণ? ‘কফি উইথ কর্ণ’-এর ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত​

পরে সিমি গারেওয়াল তাঁর শো-তে সেই নিয়ে প্রশ্ন করলে, রেখা দুই চোখে এক সমুদ্র জল আটকে হাসতে হাসতে বলেছিলেন, ‘‘ধুর! সব রটনা। ও সব বিশ্বাস কোর না। বিনোদ খুব ভাল বন্ধু ছিলেন!’’

এতটাই ‘ভাল বন্ধু’ যে মায়ের মারধর আটকে বাঁচাতে পারেননি রেখার সম্মান!

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement