মহেন্দ্র সিংহ ধোনি, উরফি জাভেদ এবং বিরাট কোহলী ফাইল চিত্র
তিনি পোশাকের জন্যই ‘বিখ্যাত’। আবার বিতর্কেও জড়ান তাঁর কিম্ভূত ফ্যাশনের জন্যই। এটুকু বললেই সবাই বুঝবেন, কথা হচ্ছে উরফি জাভেদকে নিয়ে। তবে শুধুই কি কাচ, বস্তা, বেলুন কিংবা ঝিনুকের পোশাক দিয়েই উরফিকে গোটাটা বুঝে ফেলা যায়? তাঁকে নিয়ে যত খুশি কটাক্ষ করা যায়? না।কিছু দিন আগে এক সাংবাদিককে কাঁদিয়ে ছেড়েছেন প্রাক্তন বিগ বস্ প্রতিযোগী। কী ঘটেছিল? দেখা যায়, লাল টুকটুকে হৃদয় দ্বিখণ্ডিত। দুটি ভাগ শিকল দিয়ে জোড়া। হৃদয় ভাঙার সেই চিহ্ন বুকে বেঁধে রাস্তায় বেরিয়েছিলেন উরফি। যাচ্ছিলেন কোনও এক অনুষ্ঠানে। তবে পাপারাৎজি ঘিরে ধরতেই দাঁড়িয়ে গেলেন। ছুটে এল ব্যক্তিগত প্রশ্নের বাণ।
‘আপনার বুঝি হৃদয় ভেঙেছে? জামাটা কি চামড়ার তৈরি? অমুকের সঙ্গে আপনার সম্পর্ক কী ভাবে ভাঙল? সেই জন্যই কি এ রকম জামা পরেছেন?...’ উরফি স্পষ্টতই এগুলোর উত্তর দিতে চাইছিলেন না। তাঁর চোখেমুখে অস্বস্তি। পাশ কাটিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু হঠাৎ রুখে দাঁড়ালেন। সাংবাদিককে পাল্টা জিজ্ঞেস করে বসলেন, “দেখি দেখি, এসব কী পরেছেন মুম্বইয়ের গরমে? হুডি নাকি? কষ্ট হচ্ছে না?” বলেই হাত দিয়ে পরখ করতে গেলেন। সাংবাদিক এ বার পাকে পড়েছেন। তাঁকে আরও একটু প্যাঁচে ফেলেন উরফি। পিছনে ঘুরে তাঁর সহকারীকে ডাক দিয়ে তারকা বললেন, “আরে ওঁকে আমার পোশাক কয়েকটা এনে দাও। কত আরাম! পরে বাঁচুক।” এর পর পালিয়ে বাঁচলেন সাংবাদিক। বোল্ড হওয়ার বদলে সেই ব্যাটেই ছয় মেরে দিলেন উরফি।
সাংবাদিকদের নাস্তানাবুদ করার ঘটনা এই প্রথম নয়। বহু রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, খেলোয়াড় কিংবা অভিনেতাই সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে পড়ে তাঁদের পাল্টা ভয় দেখিয়ে ছেড়েছেন। যেমন মনে পড়ে যায় ভারতীয় ক্রিকেটের প্রাক্তন অধিনায়ক মহেন্দ্র সিংহ ধোনির কথা। ২০১৬ সাল। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বিশ্রী রকম হার হয়েছে ভারতের। তার মধ্যেই এক অস্ট্রেলিয়ান সাংবাদিক ধোনিকে তাঁর অবসর নেওয়ার পরিকল্পনা নিয়ে প্রশ্ন করে বসেন। এতে চটে যাওয়ার বদলে আশ্চর্য শান্ত দেখায় অধিনায়ককে। একগাল হেসে সেই সাংবাদিককে বলেন, “আসুন পাশে এসে বসুন। আমরা একসঙ্গে এই প্ল্যানটা সেরে ফেলি।” সে দিন আসলে সাংবাদিককে হেনস্থা করতে চাননি ধোনি। কেবল বুঝিয়ে দিতে চেয়েছিলেন গোটা বিশ্বকে, যে এখনই অবসর নেওয়ার পরিকল্পনা তাঁর নেই। আর কেউ যেন এই প্রশ্ন না করেন।
একই ভাবে ক্রিকেট দলের পরবর্তী অধিনায়ক বিরাট কোহলীর বিয়ের সময়ও পালিয়ে বেঁচেছিলেন এক সাংবাদিক। জানা যায়, অনুষ্কা শর্মা এবং বিরাটের বিয়ে নিয়ে একটু বেশিই রসালো খবর ছেপেছিলেন তিনি। যাঁর অধিকাংশই ভিত্তিহীন বলে জানিয়েছিলেন বিরাট। পরে যখন এক সম্মেলনে সেই সাংবাদিককে দেখেন, ভিড়ের মধ্যে গলা তুলে চেঁচিয়ে বলেন, “আরে সামনে আসুন! আপনাকে দেখি ভাল করে।” এতেই পালানোর উপক্রম করেন সেই সাংবাদিক। বিরাটও তাঁকে ধাওয়া করেন। সে এক সাংঘাতিক কাণ্ড।তারকাদের সঙ্গে সাংবাদিকদের এই সেয়ানে সেয়ানে সম্পর্কই বছরের পর বছর ধরে চলে আসছে। আবার পরস্পরকে না হলেও যে নয়!