সাফল্যের পথ মসৃণ ছিল না পরিচালকের। শুধুমাত্র মায়ের সমর্থনটুকু পেয়েছিলেন। ফাইল চিত্র।
বেড়ে উঠেছিলেন মুম্বইয়ের বস্তিতে, একটিই ঘর। বাবা ছিলেন মদ্যপ। সেই পরিবেশ থেকেও যে সঞ্জয় লীলা ভন্সালী হয়ে ওঠা যায়, তা মুখের কথায় হয়তো কেউ বিশ্বাস করতেন না। যদি না দেখিয়ে দিতেন ভন্সালী নিজে। এখন গোটা বিশ্ব তাঁকে চেনে। দেশ-বিদেশের প্রথম সারির পরিচালকদের মধ্যে তিনি এক জনপ্রিয় নাম।
কিন্তু সাফল্যের পথ মসৃণ ছিল না পরিচালকের। শুধুমাত্র মায়ের সমর্থনটুকু পেয়েছিলেন। ছেলের স্বপ্ন সফল করতে সব রকম ভাবে পাশে থেকেছেন তিনি। এক সাক্ষাৎকারে সঞ্জয় এবং তাঁর মা লীলা ভন্সালী সেই যন্ত্রণার দিনগুলোর কথা উল্লেখ করেছিলেন।
ঘরেতে হাঁড়ির হাল। বেঁচে থাকার উপকরণ সংগ্রহ করতে কী করতে হয়েছে সে সময়?
সঞ্জয়ের মা লীলা বলেন, “সামনের দোকান থেকে শাড়ি নিয়ে আসতাম, মাঝরাত অবধি সেলাইয়ের কাজ করতাম। ফলস পাড় লাগাতাম। কখনও ৪টে শাড়ি পেতাম, কখনও ১২টা, কখনও আবার ২৪টা। এই পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে।”
তরুণ বয়সেও ওই ঘুপচি বস্তিতেই কেটেছে ভন্সালীর। জানতেন, এই পরিস্থিতি থেকে তাঁদের বেরিয়ে আসতেই হবে।
পরিচালক বলেন, “যতই কঠিন শোনাক, স্বপ্নের মধ্যেও দেখতাম, ইঁদুর আর আরশোলা আমার গায়ের উপরে ঘুরছে।”
কিন্তু সেই অস্বাচ্ছন্দ্যের দিনগুলিতেও আনন্দের কিছু ঝলক ছিল। ভন্সালী জানান, তাঁরা রেডিয়ো শুনতেন একসঙ্গে। মা সেই ঘুপচি ঘরেই নাচতেন। রান্না করতে করতে গান গাইতেন লীলা, গলা মেলাতেন ভন্সালী। বললেন, “মায়ের ওই নাচ আর গান করার মুহূর্তগুলোই প্রিয় মুহূর্ত ছিল।”
মায়ের প্রতি কৃতজ্ঞতায় আপ্লুত ভন্সালী জানান, তাঁর হয়ে ওঠায় মায়ের ভূমিকা অনেকখানি। মায়ের নাম লীলা, সেই নামটিই সঞ্জয় মধ্যনাম হিসাবে ব্যবহার করেন। যেটি খুব প্রচলিত অভ্যাস নয় এই সমাজে। বাবার নেশাগ্রস্ততা নিয়ে অকপট ‘দেবদাস’ পরিচালক জানিয়েছিলেন, বাবার সমস্যা ছিল। কিন্তু ছেলের প্রতি তিনি হিংস্র আচরণ করেননি কখনও। বাবার এই মদ্যপানের সমস্যাই তাঁকে ‘দেবদাস’-এর মতো ছবি বানাতে প্রভাবিত করেছিল বলে জানিয়েছিলেন ভন্সালী।
বলেন, “দেবদাসের কাজ শুরু হয়েছিল বাবার মৃত্যুর সময়। তিনি অ্যালকোহলিক ছিলেন। সিরোসিস-এ আক্রান্ত হয়ে মারা যান। ”