স্কুল খোলার খবর শুনে সমর্থনের সুর টলিউড জুড়ে।
দু’বছর বন্ধের পরে খুলছে কলেজ-বিদ্যালয়ের দরজা। ১৫ নভেম্বর থেকে আবার আগের মতোই কাঁধে ব্যাগ নিয়ে পড়াশোনা করতে যাবে শিক্ষার্থীরা। সরকারি এই সিদ্ধান্তে খুশি কচি-কাঁচারা। কিন্তু তাদের অভিভাবক? তাঁরা কি নিশ্চিন্তে ছাড়তে পারবেন সন্তানদের? জানতে আনন্দবাজার অনলাইন যোগাযোগ করেছিল নীলাঞ্জনা সেনগুপ্ত, বিরসা দাশগুপ্ত, সুদীপ্তা চক্রবর্তী, বিশ্বনাথ বসু, জয়জিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে।
কী মত তাঁদের?
নিয়মিত স্কুলে যাবে শিশু অভিনেত্রী ইদা দাশগুপ্তও। ঘটনায় যত না খুশি ইদা বেশি খুশি তার পরিচালক বাবা বিরসা দাশগুপ্ত। তাঁর সাফ জবাব, ‘‘অনলাইনে পড়াশোনা হয় না, প্রমাণিত। তাই এ বার স্কুল-কলেজ খোলাই উচিত। নিয়ম মেনে চললে কিচ্ছু হবে না।’’ ‘মুখোশ’ ছবির পরিচালক মনে করেন, স্কুলের মাঠে দৌড়ঝাঁপ, বন্ধুদের সঙ্গে নিয়মিত দেখা, শিক্ষকদের মুখোমুখি হয়ে পড়া বুঝে নেওয়া খুব দরকার। আশ্বাসও দিলেন, এর আগেও বিশ্ব মহামারিতে আক্রান্ত হয়েছে। মানব সভ্যতা ধ্বংস হয়নি। এ বারেও হবে না।
আপাতত এই বিষয়ে মুখ খুলতে নারাজ যিশু-ঘরনি নীলাঞ্জনা সেনগুপ্ত। তাঁর কথায়, ‘‘সারা বা জারার স্কুল থেকে এখনও কোনও মেল পাঠায়নি। ফলে, বিষয়টি নিয়ে এক্ষুণি কিছু বলতে পারব না।’’ স্কুল খুলছে না বিশ্বনাথ বসুর দুই ছেলেরও। অভিনেতা জানিয়েছেন, তাঁর বড় ছেলে পঞ্চম শ্রেণির পড়ুয়া। ছোট ছেলে এখনও প্রথম শ্রেণিতেই ওঠেনি। তবু তিনি খুশি, বাকি পড়ুয়াদের জন্য। রসিকতা করে বলেছেন, ‘‘ছেলেপুলেরা স্কুলে যাবে না, ক্লাস ডুব দিয়ে সিনেমা দেখবে না, প্রেম করবে না! এ কেমন কথা? খুব শীঘ্রই রবীন্দ্রনাথের অবুঝ-সবুজেরা যে ধূসর হতে চলেছে!’’ তার পরেই তাঁর স্পষ্ট কথা, সব যদি স্বাভাবিক নিয়মে চলতে পারে তা হলে স্কুলও খোলা উচিত। তিনিও মুখ্যমন্ত্রীকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
ছেলের সঙ্গে জয়জিৎ বন্দোপাধ্যায়।
স্কুল খোলার সরকারি সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণার পরেই ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছিলেন সুদীপ্তা। তিনি খুশিমনে স্বাগত জানিয়েছেন। তাঁর দাবি, ‘চার দেওয়ালের মধ্যে বন্দি জীবন। টানা দু’বছর ধরে শুধু বাড়ির লোকের মুখ দেখা। নিয়মিত স্কুলে যাবার আনন্দ থেকে বঞ্চিত। বন্ধুদের সঙ্গে খেলতে না পারার হতাশা ছোটদের কুরে কুরে খাচ্ছে। অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ১৫ নভেম্বর স্কুল খোলার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই। মুখ্যমন্ত্রীকে জানাই ধন্যবাদ।’ এ ক্ষেত্রে সুদীপ্তার যুক্তি, সতর্কতা মেনে নির্বাচন থেকে পুজোর বাজার, ঠাকুর দেখা থেকে পুণ্যস্নান সবই হল। তাই তাঁর বিশ্বাস ছোটরাও পারবে স্কুলে কোভিড-নিয়ম মেনে চলতে। অভিনেত্রীর ধারণা, বরং শিক্ষার্থীরাই শেখাবে নিয়ম মেনে চলা কাকে বলে।
সমর্থনের সুর জয়জিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের গলাতেও। তাঁর ছেলে যশোজিৎ নবম শ্রেণির ছাত্র। অভিনেতার দাবি, ‘‘ছেলে প্রচণ্ড উত্তেজিত। ফেসশিল্ড, মুখোশ, স্যানিটাইজারের তালিকা বানিয়েছে। বলেছে, বাবা স্কুলে যাব। সাবধানতা মেনে। তাই এ গুলো এনে দিতে হবে।’’ ছেলের সচেতনতায় খুশি জয়জিৎ। তিনিও সুদীপ্তার কথারই পুনরাবৃত্তি করেছেন, এই প্রজন্ম অনেক সজাগ। ওরাই পারবে সমস্ত সমস্যার মোকাবিলা করতে। শিক্ষার অগ্রগতি হোক। এক জন বাবা হিসেবে মন থেকে চাইছেন তিনি।