রূপাঞ্জনার প্রশ্নে ইন্ডাস্ট্রির নতুন প্রজন্মের অভিনেতারা কী বললেন?
বিরক্ত রূপাঞ্জনা মিত্র। উঠতি নায়িকাদের ব্যবহার, তাঁদের আচরণে বিব্রত অভিনেত্রী। একটি মাত্র ধারাবাহিক। তার পরই হাতে দামি মোবাইল, হিরের আংটি। নেপথ্যে কি ইন্ডাস্ট্রির ‘সুগার ড্যাডি’রা? প্রশ্ন তুললেন রূপাঞ্জনা।
হয়তো মফসস্ল থেকে আসা উঠতি কোনও মডেল-অভিনেত্রী। কী ভাবে ইন্ডাস্ট্রিতে জায়গা করে নেওয়া যায়, সেই রাস্তাই খুঁজছেন। স্বপ্ন দেখেন, এক দিন তিনিও হবেন খ্যাতি-যশ-সাফল্যের শীর্ষে। কিন্তু দীর্ঘ পথ তাঁর না-পসন্দ। তাঁর চাই ‘ইনস্ট্যান্ট’ উপায়। অগত্যা খোঁজ পড়ে ‘সুগার ড্যাডি’র। যাঁদের আগে অনেকে ‘গডফাদার’ বলতেন। হালে নাম পরিবর্তন হয়েছে মাত্র। হয়তো তারও আগে তাঁদের অন্য কোনও নাম ছিল! কিন্তু এই সুগার ড্যাডিরা কারা?
মূলত ধনী কোনও প্রভাবশালী ব্যক্তি। যাঁরা শুধু আর্থিক সাহায্যই করবেন না, পাশাপাশি বিভিন্ন পার্টিতে নিয়ে গিয়ে ইন্ডাস্ট্রির বাকি প্রভাবশালীদের সঙ্গে আলাপ-পরিচয় করিয়ে দেবেন। যিনি কেরিয়ারের যাবতীয় দায়িত্ব নেবেন। তবে সবটাই ব্যক্তিগত বোঝাপড়ার উপর দাঁড়িয়ে। ‘দেওয়া-নেওয়া’র হিসেব-নিকেশ করা হয়ে যায় শুরুতেই। নবাগতরা তাঁদের মাটি শক্ত করবেন, আর সুগার ড্যাডিরা বিভিন্ন পার্টিতে সুন্দরী কমবয়সিদের নিয়ে গিয়ে কলার তুলবেন। আরও বোঝাপড়া থাকলে সেই পার্টি শেষ হবে কোনও পাঁচতারা হোটেলের ঘরে কিংবা কোনও ফ্ল্যাটের বেডরুমে। এই মোটামুটি বোঝাপড়া। তবে এই নিয়মের মাঝে অনেক সময়ে পিছিয়ে পড়েন এমন কিছু অভিনেতা-অভিনেত্রী, যাঁরা শুধু মাত্র নিজেদের প্রতিভার উপর ভরসা করে ইন্ডাস্ট্রিতে আসেন। আর তাতেই চটেছেন রূপাঞ্জনা।
আনন্দবাজার অনলাইনকে অভিনেত্রী বলেন, “এটা কি বেশ্যাখানা তৈরি করে ফেলবে সকলে? যারা কষ্ট করে নিজের জায়গা তৈরির চেষ্টা করে, তাদের কী হবে? কেউ তো ভরসাই করতে পারবে না। নতুন অভিনেতাদের একটু ভাবা উচিত।” রূপঞ্জনার এই বক্তব্যে কেউ সহমত, কেউ কেউ আবার পুরোপুরি মানতে নারাজ। নতুন প্রজন্মের যাঁরা এখন খুব নতুনও নয়, আবার অভিজ্ঞও তাঁদের বলা যায়, এই বিষয়ে তাঁদের কী অভিমত? ছোট পর্দার দুই অভিনেতা ঊষসী রায় এবং গৌরব রায়চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল আনন্দবাজার অনলাইন। ঊষসী বলেন, “আমার সত্যিই এই বিষয়ে ধারণা কম। আশপাশে কাউকে এমন দেখিনি। যদি আমার কথা বলেন, তা হলে বলব আমি অনেক কষ্ট করে নিজের জায়গা তৈরি করেছি। আমি বিশ্বাস করি কষ্ট করলে কেষ্ট মেলে। আর যা রটে, সে ক্ষেত্রে বলব কুছ তো লোগ কহেঙ্গে।”
অন্য দিকে গৌরবের গলায়ও অনেকটা একই সুর। তাঁর কথায়, “এটা সম্পূর্ণ নিজেদের ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। আমাদের হস্তক্ষেপ করা উচিত বলে মনে হয় না। যদি তাঁরা ভাল কাজ করেন, সৎ পথে থাকেন তাঁদেরই ভাল হবে, আর যদি খারাপ কিছু করেন তা হলে তা সব সময় প্রকাশ্যে আসবে। আমাদের সমাজের ইতিবাচক দিকেই মনযোগ দেওয়া উচিত।”
তবে এই প্রবণতা কি হালে তৈরি হয়েছে? না কি ইন্ডাস্ট্রিতে নিজেদের জায়গা তৈরি করে নিতে সব সময়ই এই ধরনের রাস্তা বেছে নিতেন কিছু অভিনেতা? এই প্রশ্নে রূপাঞ্জনার স্পষ্ট জবাব, “হয়তো ছিল, কিন্তু এত বাড়বাড়ন্ত ছিল না। সেই সময়ে পরিবার, মা-বাবার একটা ভয় থাকত। এখন সেটাও উবে যাচ্ছে দিনে দিনে।”