মেয়ে নিতারার সঙ্গে টুইঙ্কল খন্না। ছবি: সংগৃহীত।
বর্ণ বৈষম্যের শিকার ১২ বছরের তারকা কন্যা। বাইরে কোথাও নয়, একেবারে নিজের ঘরেই এমন পরিস্থিতির মুখে পড়েছে অক্ষয়-কন্যা নিতারা। এমনই অবস্থা যে শেষ পর্যন্ত হাল ধরতে হয় টুইঙ্কলকে।
অক্ষয়-টুইঙ্কলের মেয়ে নিতারা। সম্পর্কে রাজেশ খন্না-ডিম্পল কাপাডিয়ার নাতনি। ক্যামেরার সামনে খুব বেশি আসতে স্বচ্ছন্দ নয় বালিকা নিতারা। যখনই তাঁকে প্রকাশ্যে দেখা গিয়েছে হয় বাবা অক্ষয় নয় তো মা টুইঙ্কলের হাত ধরে। তবে তারকা সন্তান নিতারা সর্বক্ষণই প্রায় প্রচারের আলোয়। এমনিতেই তারকা সন্তানদের নিয়ে বাড়তি কৌতূহল থাকে দর্শকদের। এ বার নিজের বাড়ির অন্দরেই বর্ণবিদ্বেষের শিকার টুইঙ্কল-কন্যা। জানা গিয়েছে, দাদা আরভের গায়ের রং নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে শুরু করেছিল নিতারা। সাঁতার ছাড়তে চেয়েছিল সে।
এই পৃথিবীতেই ঘটে গিয়েছে, জর্জ ফ্লয়েডের হত্যার মতো ঘটনা। গোটা পৃথিবীর মানুষ নেমে পড়ছিল রাস্তায়। ‘ব্ল্যাক লাইভ ম্যাটারস্’-এর মতো আন্দোলন হয়েছে। প্রতিবাদের জেরে একাধিক প্রসাধনী সংস্থা তাদের পণ্যের নামও বদলে ফেলেছে। কিন্তু এ সব কি কেবল বাহ্যিক? মানুষের মনের ভিতরের কালো, থুড়ি অন্ধকার দিকটা কি চিরকালই গায়ের ত্বকের ‘কালো’ রং নিয়ে নাক কুঁচকে যাবে?
বলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে অনেকেই বর্ণবিদ্বেষের শিকার হয়েছেন। সেই তালিকায় রয়েছেন মিঠুন চক্রবর্তীর মতো তারকারও। তবে নিজের বাড়ির ভিতর থেকে এমন কটুকথা শুনতে হল টুইঙ্কেল-কন্যা নিতারাকে। টুইঙ্কল বলেন, ‘‘আমাদের আত্মীয়রাই নিতারার কাছে এসে ফিসফিস করে বলেন, ‘মিষ্টি দেখতে কিন্তু দাদার মতো ফর্সা নয়।’ তার পর থেকেই দাদা আরভের মতো ফর্সা হতে চাইতো মেয়ে।’’ শেষে ফ্রিদা কাহলোর সাহায্য নিতে হয় অভিনেত্রী।
ফ্রিদা কাহলো। ছবি: সংগৃহীত।
মেয়ে নিতারার হাতে তুলে দেন মেক্সিকান শিল্পী ফ্রিদা কাহলোর আত্মজীবনী। তাঁর জীবনের বেশির ভাগটাই বিষাদ, আনন্দ সামান্যই। তবু অজস্র রঙে ভরিয়ে তুলতেন ক্যানভাস। হয়তো শারীরিক অক্ষমতা আর মানসিক অস্থিরতাকে জয় করার তীব্র ইচ্ছেতেই। ৪৭ বছর বয়সে প্রয়াত এই শিল্পী বলতেন, যার সঙ্গে চেনাজানা আর বোঝাপড়া অন্তহীন, তেমন ভাল বিষয়বস্তু আর কোথায় পাবেন?
সেই বাস্তবকে ছুঁয়ে ছিল তাঁর ডায়েরিও। লেখা-ছবি-আঁকিবুকিতে সাজানো এই ব্যক্তিগত রোজনামচায় তিনি ক্রমাগত গাঁথতেন দৈনন্দিন অনুভূতিমালা। তাঁর চেহারা যে আর পাঁচজনের মতো এমনটা নয়। তাই ফ্রিদাকে দেখিয়ে মেয়ের আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনেন। ফ্রিদাকে দেখার পর নিতারা জানান, তিনি দাদার মতো ফর্সা হতে চান না। কারণ সাদা তো হালকা রং সহজে দাগ লেগে যায়। বাদামী গায়ের রংয়ে দাগ লাগানো সোজা নয়।