রেচেল, ভিভান
করোনাভাইরাস শুধু কাজ নয়, ছোট পর্দার অভিনেতাদের সামাজিক জীবনেও প্রভাব ফেলেছে বিস্তর। চোদ্দ দিনের কোয়রান্টাইন-পর্বে কেউ চিনতে পেরেছেন প্রকৃত বন্ধুদের, কেউ পাশে পেয়েছেন সহকর্মীদের।
কলকাতায় ওয়েব সিরিজ়ের শুটিংয়ে এসে মডেল-অভিনেত্রী রেচেল হোয়াইট করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। সেই অভিজ্ঞতা প্রসঙ্গে অভিনেত্রী বললেন, ‘‘কলকাতায় ফ্ল্যাটে বয়স্ক মায়ের সঙ্গে থাকি। কোভিড পজ়িটিভ জেনেও কেন আমাকে ঢুকতে দেওয়া হল, তা নিয়ে আবাসনের নিরাপত্তারক্ষীকে অন্য ফ্ল্যাটের লোকেরা রীতিমতো শাসিয়েছিল। বাড়ি থেকে বার করে দেওয়ারও ভয় দেখিয়েছিল প্রতিবেশীরা। শ্বাসকষ্টের সমস্যা হচ্ছিল, আমাকে হাসপাতাল নিয়ে যাওয়ার মতোও কেউ ছিল না।’’ পরে অবশ্য পাশে পান ইন্ডাস্ট্রির কিছু সহকর্মীকে। তাঁদের সাহায্যেই সুস্থ হয়ে ফিরে যান মুম্বই।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পরে ছোট পর্দার অভিনেতা ভিভান ঘোষের কথায়, ‘‘যে সকল প্রতিবেশী-বন্ধুরা পাশে থাকবে ভেবেছিলাম, সকলেই মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল।’’ সেই কঠিন দিনগুলোয় হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল ‘কৃষ্ণকলি’-র টিম। ধারাবাহিকের সহকর্মীদের হাত ধরেই লড়েছেন ভিভান।
রেচেল কিংবা ভিভান ইন্ডাস্ট্রির সহকর্মীদের সহযোগিতা পেলেও অভিনেত্রী প্রীতি বিশ্বাসের অভিজ্ঞতা আবার অন্য রকম। সুস্থ হয়ে ওঠার পরেও কাজে ফেরার পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছিল সহকর্মীরাই। ‘‘ধারাবাহিক ‘সৌদামিনীর সংসার’-এর প্রধান নেগেটিভ আন্নাকালীর চরিত্রে অভিনয় করার সময়েই আক্রান্ত হই। রিপোর্ট নেগেটিভ এলে শুটিংয়ে ফিরতে চাইলেও ধারাবাহিকের কয়েকজন শিল্পী আমার সঙ্গে কাজ করবে না বলে জানায়,’’ বললেন প্রীতি।
বিষটি আর্টিস্ট ফোরামের নজরে এনেছিলেন প্রীতি। তার পরে সংশ্লিষ্ট চ্যানেল পাশে দাঁড়ায় তাঁর। প্রীতির কথায়, ‘‘শুটিংয়ে ফিরলেও আমার সঙ্গে অচ্ছুতের মতো ব্যবহার করা হত। ইন্ডাস্ট্রিরই কয়েক জন মানুষ মানসিকভাবে শক্ত হওয়ার পরামর্শ দেন আমায় সেই সময়ে।’’
এক সময়ে সেলফি তোলার জন্য অনুরোধ করতেন যাঁরা, অভিনেতা রাহুল মজুমদারকে তাঁরাই এখন এড়িয়ে চলেন। রাহুলের কথায়, ‘‘সুস্থ হয়ে রাস্তায় বেরোতেই আমার সঙ্গে অস্পৃশ্যের মতো ব্যবহার করা হয়েছে।’’ তবে এখন পরিস্থিতি অনেকটাই পাল্টেছে। ইন্ডাস্ট্রি ফের কাছে টেনে নিয়েছে ‘ভাগ্যলক্ষ্মী’র বোধায়নকে।