(বাঁ দিকে) সায়নী ঘোষ। নুসরত জাহান(ডান দিকে)। ছবি: সংগৃহীত।
১২ বছর আগে পরিচালক রাজ চক্রবর্তীই তাঁকে প্রথম ‘বড়’ সুযোগ দিয়েছিলেন। ‘শত্রু’ সিনেমায় নায়িকা নুসরত জাহানের বোনের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন অভিনেত্রী সায়নী ঘোষ। এখন অবশ্য তিনি শুধু অভিনেত্রী নন, তিনি নেত্রীও বটে। বর্তমানে তাঁর আরও এক পরিচয়— যুব তৃণমূল সভানেত্রী। রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার পর বেশ অনেক বারই বিতর্কে জড়িয়েছে তাঁর নাম। যদিও সে নিয়ে মাথা ঘামাতে নারাজ সায়নী। তবে তাঁর এক সময়ের ‘পর্দার দিদি’ সম্প্রতি জড়িয়েছেন বিতর্কে। নুসরতের পাম অ্যাভিনিউয়ের ফ্ল্যাটকাণ্ড প্রসঙ্গে কী মত স্পষ্টবক্তা সায়নীর?
সায়নী সাধারণত বিতর্কে মন না দিয়ে নিজের কাজ নিয়েই মেতে থাকেন। এক দিকে যেমন সামলাচ্ছেন দলের কাজ, তেমনই টুকটাক কাজ করছেন টলিপাড়াতেও। তবে ইদানীং সিনেমা বা সিরিজ়ে অভিনয় অনেকটাই কমিয়ে দিয়েছেন সায়নী। মুক্তির অপেক্ষায় তাঁর নতুন সিরিজ় ‘আবার প্রলয়’। সচেতন ভাবেই কাজ বাছাই করছেন তিনি। তা কি শুধু মাত্র রাজনৈতিক কেরিয়ারের স্বার্থে? আনন্দবাজার অনলাইনকে সায়নীর স্পষ্ট উত্তর, “হ্যাঁ অবশ্যই সচেতন ভাবে সিদ্ধান্ত নিচ্ছি। এখন আর ‘চরিত্রহীন’-এর মতো সিরিজ় করতে পারব? তা হলে তো পার্টির চরিত্র বা সংগঠনের যাঁরা যাঁরা আছেন, তাঁদের চরিত্র নিয়ে টানাটানি হয়ে যাবে।”
বহু প্রস্তাব তাই নিজেই ফিরিয়ে দিতে বাধ্য হচ্ছেন সায়নী। ‘আবার প্রলয়’-এর প্রচার ঝলকে যদিও খুব কমই দেখা গিয়েছে তাঁকে। এ ক্ষেত্রে অবশ্য অভিনেত্রীর মত, সেখানে কম দেখা গেলেও অনেকটা চমক অপেক্ষা করছে। এই সিরিজ়ে ভোল বদলেছে কৌশানী মুখোপাধ্যায় থেকে ঋত্বিক চক্রবর্তীরও। সায়নী বলেন, “প্রতিটি চরিত্রই চমক নিয়ে আসছে।”
জুন মাসের শেষ সপ্তাহে ইডির তরফ থেকে তাঁকে তলবের নোটিস পাঠানো হয়। ৩০ জুন সাড়ে ১১ ঘণ্টা ধরে তাঁকে জেরা করেন ইডির আধিকারিকেরা। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তাঁকে ডেকে পাঠানো হয়েছিল। তার পর বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে তাঁকে। পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারও সেরেছেন তিনি। সিরিজ়ের সাংবাদিক সম্মেলনে রাজনীতি প্রসঙ্গ উঠতেই সায়নীর উত্তর, “মহিলাদের দিকে বাণ বেশি আসে। তাঁদের অনেক বেশি আতশকাচের নীচে থাকতে হয়। আর অভিনেত্রী যখন হয়েছি তখন তো বিষয়টা আরও পরিষ্কার হয়ে যায়। এখন রাজনীতিক। আমি তো নিজের জীবনে সব সময় কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সুতরাং আমায় তো এমন পরিস্থিতি সামাল দিতে হবে এবং সেই বিচক্ষণতাও রাখতে হবে।”
সম্প্রতি নুসরত জাহানকে নিয়েও বিতর্ক তৈরি হয়েছে। ২৪ কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। সায়নীর কণ্ঠে নুসরতের পাশে থাকার সুর। তাঁর মতে , আদালত কোনও নির্দেশ দেওয়ার আগেই সংবাদমাধ্যমে কিছু লিখে দেওয়া কাম্য নয়। তাঁর কথায়, “আমি নিজের ব্যক্তিগত জায়গা থেকে যা বুঝেছি মিডিয়া ট্রায়াল একটি বিশাল বড় ব্যাপার। আদালতের তরফে কিছু জানানোর আগেই মিডিয়াতে লেখা হচ্ছে। অভিযোগ প্রমাণের আগে দোষী বলা হচ্ছে। সেটা তো ঠিক নয়। আমার সঙ্গে নুসরতের কথা হয়নি। তবে এটা ঠিক, ভিউজ় বা টিআরপির জন্য অন্য কারও ক্ষতি হচ্ছে সেটা ভাবা উচিত।”
আপাতত অভিনেত্রীর লক্ষ্য ২০২৪ সালের লোকসভা ভোট। সায়নী বললেন, “এই সময় আমি কোনও কাজে হাত দিচ্ছি না। বড় দায়িত্ব আসতে চলেছে আগামী বছর। প্রচারের ক্ষেত্রে বিশেষত। আপাতত সেই দিকেই নজর দিতে চাই।”