(বাঁ দিক থেকে) জিতু কমল, ঋতাভরী চক্রবর্তী, প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, রাজ চক্রবর্তী, খরাজ মুখোপাধ্যায় এবং আবীর চট্টোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত।
একটি ছবি মুক্তি পেতেই সুপারহিট। আবার অন্য একটি ছবি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন দর্শক। কোন ছবি চলবে আর কোনটা চলবে না, তা কি অনুমান করা সম্ভব? বর্তমান প্রজন্ম কী দেখতে পছন্দ করছে? শনিবার কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবে তার আঁচ পাওয়া গেল। এ দিন চলচ্চিত্র উৎসবে ‘সিনে আড্ডা’র বিষয় ছিল, ‘আজকের প্রজন্মের কাছে কোনটা আকর্ষণীয়? কাল্পনিক না বাস্তবধর্মী চলচ্চিত্র’। মঞ্চে এই বিষয়ে বললেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, খরাজ মুখোপাধ্যায়, আবীর চট্টোপাধ্যায়, ঋতাভরী চক্রবর্তী এবং জিতু কমল। সঞ্চালনায় ছিলেন রাজ চক্রবর্তী।
আলোচনার শুরুতেই প্রসেনজিৎ শ্রোতাদের মনে করিয়ে দিলেন, সিনেমা মানেই কল্পনা। তিনি মনে করেন, কল্পনার মিশেলে বাণিজ্যিক ছবি যতখানি প্রয়োজন, ঠিক ততটাই বাস্তবধর্মী ছবিরও প্রয়োজন। বললেন, “‘শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদ’ ছবিটা না করলে আমার মনে হয় না, ‘উৎসব’ করতে পারতাম। কারণ, বাণিজ্যিক ছবিই আমাকে তারকা তৈরি করেছে।” একই সঙ্গে প্রসেনজিৎ জোর দিলেন সাহিত্য-নির্ভর বাংলা ছবির উপর।
চলচ্চিত্র উৎসবে লরেন্স কার্দিশকে সংবর্ধনা জানাচ্ছেন অপর্ণা সেন। ছবি: সংগৃহীত।
ঋতাভরী যেমন এই বিতর্কে প্রবেশ করতেই চাইলেন না। তাঁর যুক্তি, “যিনি পেন্টিং পছন্দ করেন, তাঁর কাছে পাবলো পিকাসো এবং রাজা রবি বর্মার ছবি সমান গুরুত্বপূর্ণ।” অন্য দিকে নতুন প্রজন্ম কী দেখতে পছন্দ করে, সেই প্রশ্ন দর্শকের উপরেই ছেড়ে দিতে চাইলেন আবীর। বললেন, “আমাদের তাঁদের থেকেই বেশি করে শোনা উচিত। কারণ, দিনের শেষে ছবি তৈরি হয় দর্শকদের কথা ভেবেই।” খরাজ মনে করেন, সময়ের সঙ্গে দর্শকদের চাহিদা অনুযায়ী অভিনেতাদের বদলাতে হয়। বললেন, “আগের মতোই লার্জার দ্যান লাইফ চরিত্র দর্শক এখনও দেখতে চান। শুধু খেয়াল রাখতে হবে, অভিনয়টা যেন বাস্তবধর্মী হয়।” জিতু বললেন, “আমার সেই ছবিই পছন্দ, যেখানে কল্পনা বাস্তবের কাছাকাছি যায়।”
সব শেষে প্রসেনজিৎ বলেন, “আগে দেখতাম, ১০-১২ বছর অন্তর বাংলা ছবির ধারায় পরিবর্তন আসে। এখন দেখি, খুব দ্রুত বদল আসছে। কারণ, ওটিটির জন্য প্রতি দিন অগণিত কনটেন্ট দর্শক দেখছেন এবং তাঁদের চাহিদা বদলে যাচ্ছে।” সেই সঙ্গে তিনি শ্রোতাদের অনুরোধ করেন, “অন্যান্য ভাষার কাজ অবশ্যই দেখুন। পাশাপশি, বাংলা ছবি নিয়ে গর্ববোধ করুন। এখানেও ভাল কাজ হয়।”
শনিবার উৎসবে সত্যজিৎ রায় স্মারক বক্তৃতা দেন আমেরিকান পরিচালক লরেন্স কার্ডিশ। শিশির মঞ্চে তাঁর বক্তৃতা শুনতে উপস্থিত ছিলেন অপর্ণা সেন।