(বাঁ দিকে) চিরঞ্জিৎ চক্রবর্তী, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক (ডান দিকে)। ছবি: সংগৃহীত।
জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের গ্রেফতারি নিয়ে রাজ্য রাজনীতি এখন সরগরম। এক সময়ে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার তৃণমূলের জেলা সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন জ্যোতিপ্রিয় ওরফে বালু। দীর্ঘ দিন তাঁকে কাছ থেকে দেখেছেন ওই জেলারই বারাসত বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক তথা অভিনেতা চিরঞ্জিৎ চক্রবর্তী। বালুর গ্রেফতারির ঘটনাকে কী ভাবে দেখছেন চিরঞ্জিৎ? আনন্দবাজার অনলাইনকে বারাসতের বিধায়ক বললেন, ‘‘এখনও তো অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি! গ্রেফতার তো যে কেউ হতে পারে। অন্যায় ভাবে গ্রেফতার করে জেলে পুরে রেখে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু আগে অভিযোগ তো প্রমাণিত হোক!’’
চিরঞ্জিৎ বারাসত কেন্দ্রের তিন বারের নির্বাচিত বিধায়ক। শেষ বার নির্বাচিত হয়েছেন ২০২১ সালে। তার আগে পর্যন্ত উত্তর ২৪ পরগনায় তৃণমূলের জেলা সভাপতি ছিলেন জ্যোতিপ্রিয়। তখনও পর্যন্ত উত্তর ২৪ পরগনায় জ্যোতিপ্রিয়ই ছিলেন তৃণমূলের ‘শেষ কথা’। জেলা সভাপতি হওয়ায় জেলা স্তরে চিরঞ্জিতের ‘নেতা’ ছিলেন জ্যোতিপ্রিয়ই। সেই জ্যোতিপ্রিয়ের গ্রেফতারি কি চিরঞ্জিৎকে বিস্মিত করেছে? চিরঞ্জিতের জবাব, ‘‘একটু হলেও তো বটেই। কেউ অপরাধী হতেই পারেন। আমি সেটা অস্বীকার করছি না। কিন্তু তাঁকে অপরাধী ঘোষণা করার আগে তো তাঁর অপরাধ প্রমাণ করতে হবে।’’ এরই সঙ্গে তাঁর সংযোজন, ‘‘সবাইকে ধরে ধরে জেলে ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে! এ দিকে একটা মামলারও কোনও রকম নিষ্পত্তি হয়নি।’’
জেলায় জ্যোতিপ্রিয়ের ‘দাপট’ নিয়েও অবগত চিরঞ্জিৎ। কথাপ্রসঙ্গে স্মৃতিচারণ করলেন, ‘‘আমি নিজে দেখেছি, তখন ওঁর কথায় জেলায় কাজ হত। জেলা সভাপতি পদে থাকলে সেটাই তো হওয়া স্বাভাবিক। এখন উনি আর ততটা ইনভল্ভড নন। কিন্তু আমার সঙ্গে ওঁর খুব ভাল সম্পর্ক ছিল।’’
তৃণমূল বিধায়কের বক্তব্য, ২০২৪ সালের লোকসভা ভোট যত এগিয়ে আসছে, ততই তৃণমূলের উপর এই ভাবে চাপ সৃষ্টি করার চেষ্টা করা হচ্ছে। চিরঞ্জিতের কথায়, ‘‘মাঝেমধ্যে আবার দেখছি, ওদের (তদন্তকারী সংস্থা) তরফে কার কত সম্পত্তি, সে সবও ঘোষণা করে দেওয়া হচ্ছে এবং তার পরে তল্লাশি করা হচ্ছে।’’ তবে চিরঞ্জিৎ মনে করেন এই ভাবে ‘হেনস্থা’ করেও রাজ্যের বিরোধী দল কোনও সুবিধা করতে পারবে না। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা সিআইডি দিয়ে কেন্দ্রকে কিছু করতে পারি না! কেন্দ্রের সিবিআই বা ইডি কিন্তু রাজ্যকে ধরতে পারে। ফলে ওরা নিজেদের সেই শক্তি ব্যবহার করছে। তবে এতে ওরা কোনও সুবিধা করতে পারবে না।’’ চিরঞ্জিতের মতে, কোন দল বেশি ‘দুর্নীতিগ্রস্ত’ তা মানুষ জানেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘ওরা তো এমন আইন আনার চেষ্টা করছে, যেখানে রাজনৈতিক দলে কী ভাবে ফান্ডিং আসছে, তা প্রকাশ্যে না আনলেও চলবে! ফলে বোঝাই যাচ্ছে দুর্নীতির পক্ষে কারা।’’