বারণ আছে, তাই বিলেতে বন্ধ শ্যুটিং

কাজ করতে ‘নিষেধ’ কেন? ফেডারেশনের দাবি, বিদেশে শ্যুটিংয়ের ক্ষেত্রে নিয়মমাফিক ১৯ জন চলচ্চিত্রকর্মীকে নিয়ে যায়নি প্রযোজক সংস্থা এস কে মুভিজ। ট্রলি, আর্ট সেটিং, প্রোডাকশনের কাউকে নিয়ে যাওয়া হয়নি। তাই কাজ আটকে গিয়েছে। প্রযোজকদের তরফে পাল্টা দাবি, ভিসা-সমস্যায় দেরি হচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত ১৯ জনই বিলেতে পৌঁছেছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০১৭ ০৬:২৯
Share:

শ্যুটিং করতে বিলেতে গিয়েও তাঁরা কাজ করছেন না বলে অভিযোগ। প্লাইমাউথের কাছে টরকোয়ে-তে বাংলা ছবি ‘চালবাজে’র শ্যুটিং তাই আপাতত থমকে। একটি ভিডিও ক্লিপে দেখা যাচ্ছে, টেকনিশিয়ানরা বলছেন, ‘‘ফেডারেশন আমাদের বারণ করেছে।’’

Advertisement

ফেডারেশন মানে ‘ফেডারেশন অব সিনে টেকনিশিয়ান্স অ্যান্ড ওয়ার্কাস অব ইস্টার্ন ইন্ডিয়া’। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে হোয়াট্সঅ্যাপে টলিউডের অনেকের হাতে হাতে ঘুরছে এই ভিডিও ক্লিপ।

কাজ করতে ‘নিষেধ’ কেন? ফেডারেশনের দাবি, বিদেশে শ্যুটিংয়ের ক্ষেত্রে নিয়মমাফিক ১৯ জন চলচ্চিত্রকর্মীকে নিয়ে যায়নি প্রযোজক সংস্থা এস কে মুভিজ। ট্রলি, আর্ট সেটিং, প্রোডাকশনের কাউকে নিয়ে যাওয়া হয়নি। তাই কাজ আটকে গিয়েছে। প্রযোজকদের তরফে পাল্টা দাবি, ভিসা-সমস্যায় দেরি হচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত ১৯ জনই বিলেতে পৌঁছেছেন। শেষ তিন জন পৌঁছেছেন গত মঙ্গলবার। তবু শ্যুটিং শুরু করা যাচ্ছে না।

Advertisement

প্রশাসনের একটি সূত্রের খবর, নেদারল্যান্ডসে মুখ্যমন্ত্রীর কানেও ঘটনাটি পৌঁছেছে। তবে এখনও সমাধান-সূত্র বেরোয়নি। টুইটারে ‘শ্যুট শুড নট স্টপ’ হ্যাশট্যাগ দিয়ে নায়ক জিতের আশঙ্কা, এ রকম চলতে থাকলে সিনেমার জন্য টাকা ঢালতে অনেকেই উৎসাহ হারাবেন।

টলিউডের কোনও শ্যুটিং— কোথায়, কখন, কী ভাবে হবে— সে বিষয়ে রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের ভাই তথা ফেডারেশন সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাসই যে শেষ কথা, এমনটাই চাউর রয়েছে ইন্ডাস্ট্রিতে। আগেও ফেডারেশনের বিরুদ্ধে নানা রকম অসহযোগিতার অভিযোগ উঠেছে। বিলেতের এই বিভ্রাট তার শেষতম নমুনা হিসেবে দেখছে ইন্ডাস্ট্রি। দরকার না-থাকলেও বাড়তি কলাকুশলী নিতে বাধ্য হওয়া, বা রকমারি ওভারটাইমের খাঁই মেটানো নিয়ে কমবেশি অভিযোগ রয়েছে বহু প্রযোজকেরই। ফেডারেশনের অপছন্দে আউটডোরে এক-দু’দিন শ্যুটিং বন্ধ থাকার ঘটনাও ঘটেছে!

কেন এমন হচ্ছে? ফেডারেশন-সভাপতি স্বরূপবাবু বলছেন, ‘‘গরিব কলাকুশলীদের স্বার্থ দেখতেই হবে।’’ চালবাজ-এর শ্যুটিং ভেস্তে যাওয়া নিয়েও তাঁর দাবি, ‘‘এ ছাড়া উপায় ছিল না। ওই প্রযোজক ইচ্ছে করে বারবার নিয়ম ভাঙেন। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে দুই মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস ও ইন্দ্রনীল সেনের মধ্যস্থতায় বরং ওঁদের কিছু দিন ছাড় দেওয়া হয়। এ বার ওঁদের (প্রযোজক) বয়কট করব।’’ অরূপ ও ইন্দ্রনীলকে ফোন করে সাড়া মেলেনি।

ইন্ডাস্ট্রি সূত্রের খবর, ‘তুই যে আমার’ ও ‘চালবাজ’ নামে পরপর দু’টি ছবির শ্যুটিং ফেলা হয়েছিল বিলেতে। দ্বিতীয় ছবিটির কথা আগে জানানো হয়নি বলেও উষ্মা প্রকাশ করেছে ফেডারেশন। তবে প্রযোজকদের তরফে দাবি, টেকনিশিয়ানদের ভিসা-সমস্যার কথা ঢের আগে ফেডারেশনকে তাঁরা জানিয়েছিলেন। এ মাসের গোড়ায় ১১ জন কলাকুশলীকে নিয়ে লোকেশনে পৌঁছয় ইউনিট। পরে বাকিরা গিয়েছেন। কিন্তু শ্যুটিংয়ের ঠিক আগে গোলমাল শুরু হয়েছে। প্রযোজক সংস্থার তরফে হিমাংশু ধানুকা মুখ্যমন্ত্রীকে তাঁর বিপদের কথা জানিয়েছেন।

এ দিকে স্বরূপের বক্তব্য, শীঘ্রই টেকনিশিয়ানদের তাঁরা ফিরিয়ে আনবেন। চেনাজানাদের ধরে পাউন্ড জোগাড় করে ফেডারেশনই ওঁদের খাওয়াচ্ছে বলে দাবি তাঁর। প্রযোজক হিমাংশু ধানুকা কিন্তু টুইটারে ছবি দিয়ে অভিযোগ করছেন, খাবার সাজিয়ে দিলেও ফেডারেশনের ‘নিষেধে’ হোটেলের ঘর থেকে নেমে খেতে আসছেন না টেকনিশিয়ানরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement