এক সময়ের দুই সেরা খেলোয়াড় পিচে থাকলে যে রান উঠবে, তা তো নিশ্চিত। কিন্তু ঠুকে ঠুকে যতটা রান ওঠে, সেটাই ভরসা। চার বা ছয়ের ঝড় তোলা খেলার রোমাঞ্চ একেবারেই নেই।
পরিচালক উমেশ শুক্ল খুব সাধারণ ভাবে পুরো গল্পটা বলেছেন। ১০২ বছরের বৃদ্ধ দত্তাত্রেয় ভকারিয়ার (অমিতাভ বচ্চন) মনের বয়স যেন আটকে আছে টিনএজে। অন্য দিকে তারই ৭৫ বছরের ছেলে বাবুলাল (ঋষি কপূর) খিটখিটে, পিটপিটে। দত্তাত্রেয়র একমাত্র ইচ্ছে, সবচেয়ে বেশি বয়স পর্যন্ত বেঁচে থেকে নতুন রেকর্ড তৈরি করার। তার জন্য তাকে আরও ১৬ বছর বাঁচতে হবে। কিন্তু তার ছেলের গোমড়া মুখ ও বুড়োটে হাবভাবই তার দীর্ঘায়ুর পথে বাধা বলে মনে করে সে। তাই দত্তাত্রেয় ঠিক করে যে, ছেলেকে বৃদ্ধাশ্রমে পাঠিয়ে দেবে। ছেলে তার সিদ্ধান্ত মেনে না নিলে সে বাবুলালকে কয়েকটি শর্ত দেয়। ছবির মোদ্দা গল্প এটাই।
কিন্তু সব ক’টি শর্ত জুতসই ভাবে সাজাতে পারেননি পরিচালক। বরং কিছু শর্ত বেশ হাস্যকরই লাগে। এই বাবা-ছেলের সম্পর্ককে কেন্দ্রে রেখেই ছবি এগোতে পারত আরামসে। সেখানে আনা হয়েছে আর এক বাবা-ছেলের গল্প। বাবুলাল আর তার ছেলের গল্প। সেই ছেলে এমন এক এনআরআই যে কুড়ি বছরে এক বারও দেখা করতে আসেনি তার বাবার সঙ্গে।
১০২ নট আউট
পরিচালনা: উমেশ শুক্ল
অভিনয়: অমিতাভ বচ্চন,
ঋষি কপূর, জিমিত ত্রিবেদী
৪.৫/১০
ছবির সমস্যা হল ঠিক এইখানেই। চরিত্রগুলো হয় পুরো সাদা, নয় পুরো কালো। মনুষ্য চরিত্র তো ধূসর। সেখানে এই রকম সোজা পথে হাঁটাটা নিরাপদ খেলা নয়, বরং না-খেলার সামিল। ছবি জুড়ে আবেগ ভরপুর। কিন্তু সেখানে দর্শককে নিজেকে বুঝতে না দিয়ে, চরিত্রের মুখ দিয়ে সেগুলো ব্যক্ত করাটাও খুব নাটুকে লেগেছে। গুজরাতি এক নাটক অবলম্বনে এই ছবি। কিন্তু তা নাটকই থেকে গেল, সিনেমায় উত্তরণ ঘটল না।
ছবির একমাত্র প্রাপ্তি অমিতাভ বচ্চন ও ঋষি কপূরের অভিনয়। তাঁদের শরীরী ভাষা, শুধুমাত্র চোখের তারায় কষ্ট ফুটিয়ে তোলা, বাবা-ছেলের সম্পর্কের টানাপড়েন... এগুলোই যেন শূন্য মঞ্চে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কিছু মুক্তো।