বিধানচন্দ্র
কোনও একমুখী ধারণায় বাঁধা যাবে না বিধানচন্দ্র রায়ের চরিত্রকে। তাঁর চরিত্রে রয়েছে একাধিক পরত। এই প্রবাদপ্রতিম পুরুষের জীবন আধারেই তৈরি হচ্ছে বাংলা ছবি। টলিউড ইন্ডাস্ট্রি সূত্রে জানা যাচ্ছে, প্রযোজনা সংস্থা এসভিএফ এই প্রজেক্টটি নিয়ে কাজ করছে। তবে সবটাই এখনও প্রাথমিক স্তরে। বিধানচন্দ্র এক দিকে যেমন বিখ্যাত চিকিৎসক ছিলেন, অন্য তিনি স্বদেশী আন্দোলনের সঙ্গে যুক্তও ছিলেন। সবচেয়ে বড় কথা তাঁকে পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম সফল মুখ্যমন্ত্রী বলা হয়। তাই এই ছবি একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়ের দলিল হতে চলেছে। তবে নির্মাতারা বিধানচন্দ্রের জীবনের অন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দিকে তাঁদের ফোকাস রাখতে চান। বিধানচন্দ্র এবং কল্যাণী সরকারের প্রেম এই ছবির ভরকেন্দ্র।
কল্যাণী ছিলেন আর এক বিখ্যাত চিকিৎসক নীলরতন সরকারের কন্যা। কল্যাণীকে বিয়ে করার আর্জি নিয়ে নীলরতনের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন বিধানচন্দ্র। তবে তিনি প্রত্যাখ্যাত হন। নীলরতন সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন, তিনি মনে করেন না বিধানচন্দ্র তাঁর কন্যার ভরণপোষণের দায়িত্ব নিতে সক্ষম। ভগ্নহৃদয়ে বিধানচন্দ্র উচ্চশিক্ষায় মন দেন। বলা হয় কল্যাণীর কারণে তিনি সারা জীবন সংসার করেননি। একই অবস্থা ছিল উল্টোদিকেও। কল্যাণীও একনিষ্ঠ ছিলেন বিধানচন্দ্রের প্রতি। বছর তিনেক পরে কল্যাণী আত্মহত্যা করেন। বিধানচন্দ্র যে কল্যাণীকে কোনও দিন ভোলেননি, তার প্রমাণ পাওয়া গেল তিনি বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরে। পশ্চিমবঙ্গ তখন পূর্ব পাকিস্তান থেকে আসা উদ্বাস্তু সমস্যায় জেরবার। বিধানচন্দ্র বুঝেছিলেন, কলকাতার কাছাকাছি নতুন টাউনশিপ তৈরি করতে হবে। সেই মতোই নদিয়া জেলায় গড়ে তোলা হয় নতুন টাউনশিপ। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তাঁর নাম দেন কল্যাণী। এ ভাবেই নিজের প্রেমকে স্মরণীয় করে গিয়েছিলেন বিধানচন্দ্র।
ছবিটিকে তাঁর বায়োপিক বলা যাবে না। ওই সময়ের পরিস্থিতি এবং তাঁর ব্যক্তিগত জীবনের অনেকটাই ধরা হবে পর্দায়। আগামী বছরের গোড়া থেকেই ছবিটির কাজ শুরু হবে। তবে ছবিটি কে পরিচালনা করবেন তা এখনই জানা যাচ্ছে না। প্রযোজনা সংস্থা এ ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করতে চায়নি। বিধানচন্দ্র এবং কল্যাণীর চরিত্রে কারা থাকবেন সেটাও চূড়ান্ত নয়।