খুশির ইদ, বিনোদনের জিত!

বাংলা বাণিজ্যিক ছবি দশ বছর আগে যেমন ছিল, তার চেয়ে অনেক বদলেছে। মানে ফেসলিফ্টটা হয়েছে।

Advertisement

অন্তরা মজুমদার

শেষ আপডেট: ১৬ জুন ২০১৮ ০০:০১
Share:

ইদের দিনে রিলিজ়। স্বাভাবিক ভাবে‌ই বিনোদনের বারুদ ঠাসা থাকবে। সঙ্গে কাতুকুতু পাঞ্চলাইন, সাঁই সাঁই অ্যাকশন দৃশ্য, রোম্যান্টিক গানের সঙ্গে মাখোমাখো ডান্স— জাফরান ছ়ড়ানো ফিরনির মতোই জমাটি হওয়ার কথা ‘সুলতান: দ্য সেভিয়ার’-এর (তামিল ছবি ‘বেদালম’-এর রিমেক)।

Advertisement

হল কি?

বাংলা বাণিজ্যিক ছবি দশ বছর আগে যেমন ছিল, তার চেয়ে অনেক বদলেছে। মানে ফেসলিফ্টটা হয়েছে। কিন্তু এখনও বেশ কিছু ছবি রিলিজ় করে, যেখানে যুক্তি আর মুক্তির পথ পায় না! ছবির শুরুতেই চকচকে ব্যাংককে বসে কারা যেন ঠিক করে, নারীপাচারকারীদের তিন চাঁইকে নিকেশ করবে। একটাই গাড়িতে জনা পঁচিশ লোক ফিল্ডে চলে যায় (কে কোথায় বসল ড্রাইভার জানে)। কিন্তু প্রথম চাঁইকে শেষ করতে গিয়ে কম্যান্ডিং অফিসার নিজেই নিকেশ হয়ে যায়। পাল্টা চাল খেলে এই তিন পাচারকারীকে এক হাত নিতে সিনে আসে রাজা, থুড়ি সুলতান (জিৎ)। তার আবার দ্বৈত সত্তা (ডিজ়অর্ডার নেই)। দিনে ভাল, রাতে কালো গোছের। এই সুলতানই কী ভাবে শেষ বাজি জিতে যায় মাশাল্লাহ্‌— তাই নিয়েই ছবি। হলে দেখলে বুঝতে পারবেন, জিৎ কোন লেভেলের নায়ক। তাঁর প্রতিটা দৃশ্যে শুধু সিটি বাজাতে আর হাততালি দিতেই যে কত জন ভিড় করেন, চোখে না দেখলে সলমন খানও বিশ্বাস করবেন না!

Advertisement

তবে ওই যে, যুক্তি এখানে বোবা ও কানা! না হলে কয়েক কিলো অসঙ্গতি চিত্রনাট্যে গুঁজে দিতেন না ‘সুলতান’-এর নির্মাতারা। অ্যাকশন, কমেডি, ইমোশন, ড্রামা— বাণিজ্যিক ছবির যা যা উপাচার, সবই রয়েছে। বোর হবেন না। কিন্তু অসঙ্গতির কারণে হয়তো থরথর আবেগের দৃশ্যে আপনার হাসি পেল! বা ভয়ানক টেনশনের সময়ে আপনি হোয়্যাটসঅ্যাপ চেক করছেন! বা চিজ় পপকর্নের টাবে একটা ক্যারামেল দানা কী ভাবে এল— সে দিকে মন দিয়ে ফেলছেন!

সুলতান: দ্য সেভিয়ার পরিচালনা: রাজা চন্দ অভিনয়: জিৎ, প্রিয়ঙ্কা, মিম, শুভাশিস, কাঞ্চন ৪.৫/১০

‘ফাটবে ফুটবে, বাড়িওয়ালা বুঝবে...’ কোন বাড়িওয়ালা? সে কী বুঝবে? আর সে-ই সব বুঝবে, কিন্তু দর্শক কিচ্ছু বুঝবে না? এক একটা পাঞ্চলাইনের এত অহরহ ব্যবহার কেন? দশ বার কাউকে কোপালে তার গোটা দেহটা পরিষ্কার থাকে, অথচ মুখটা শুধু রক্তাক্ত হয়? ছুরির আঘাতে মৃতপ্রায় ব্যক্তি টানা পাঁচ মিনিট সংলাপ বলে হঠাৎ খেয়াল করে মরতে হবে? বাইকের সাইলেন্সার দিয়ে অ্যাকচুয়ালি শত্রু নিধন করা যায়? সিনেমা ফেসবুক হলে প্রতিক্রিয়ায় ‘ওয়াও’ ছাড়া কিছু দেওয়া যেত না!

তবে জিৎ গোটা ছবিতে মুক্ত হস্তে বিনোদন বিলিয়েছেন। তুলনায় বাংলাদেশি অভিনেত্রী মিমের বেশি কিছু করার ছিল না। বরং আর এক অভিনেত্রী প্রিয়ঙ্কা সরকার অসম্ভব ভাল। তেমনই ভাল শুভাশিস মুখোপাধ্যায়। শুধু চিত্রনাট্যে আর একটু মন দিলে ছবিটাও ভাল হতো!

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement