বাজারে ব্যস্ত আদিদেব
মঙ্গলবার সক্কাল সক্কাল বড় চমক নেটমাধ্যমে! বাজার করতে বেরিয়ে পড়েছে একরত্তি আদিদেব চট্টোপাধ্যায়। ছোট্ট ছোট্ট পায়ে পৌঁছে গিয়েছে ফলের বাজারে! খুদের ধারেপাশে কিন্তু কেউ নেই। আদিদেবের তাতে ভ্রূক্ষেপও নেই। গটগটিয়ে সে দেখে বেড়াচ্ছে, কোথায় কমলালেবু আর কোথায় আপেল! নিজের হাতে ফল বেছে রাখছে বিক্রেতার ঝুড়িতে। ছোট্ট ছেলের এমন গম্ভীর ভাবভঙ্গি নেটাগরিকদের যেন ছেলেবেলা ফিরিয়ে দিয়েছে। ছোট্ট ভিডিয়োটি দেখে কেউ কেউ লিখেওছেন, ‘ছেলে বড় হয়ে গিয়েছে। বাজার করে আনছে। সুদীপার আর দুঃখ কী?’
শুধু বাজার করেই ক্ষান্ত হয়নি আদিদেব। প্লাস্টিকের ব্যাগে ভরা ফল দু'হাতে রীতিমতো দোলাতে দোলাতে বাড়ি ফিরেছে। হঠাৎ খুদের এমন বাজারের শখ? সদ্য স্কুলে ভর্তি হয়েছে সে। এখন কি ছুটি? জানতে আনন্দবাজার অনলাইন যোগাযোগ করেছিল জি বাংলার ‘রান্নাঘর’-এর সঞ্চালিকার সঙ্গে। সুদীপা ভাগ করে নিয়েছেন তাঁর অভিনব ভাবনা। জানিয়েছেন, ওকে বাড়ির আর দোকানের সব কাজের সঙ্গে হাতে-কলমে পরিচিত করবেন বলেই প্রায়ই বাজারে নিয়ে যান। এ দিনও আদির সঙ্গে তিনিই ছিলেন। আপাতত স্কুলে গরমের ছুটি। এই অবসরকে পুরোপুরি কাজে লাগাতে চাইছেন আদির মা। যুক্তি, নিজে যাচাই করে কেনাকাটা করলে, বাড়ির কাজে যুক্ত থাকলে, আত্মসম্মান আর আত্মবিশ্বাস, দুই-ই বাড়বে। হঠাৎ বাইরের দুনিয়ার মুখোমুখি হয়ে ঘাবড়ে যাবে না। পরিবারের সবার থেকে ‘হ্যাঁ’ শোনার পাশাপাশি বাইরের লোকের থেকে ‘না’ শুনতেও অভ্যস্ত হবে।
সুদীপাও ছোট থেকে এ ভাবেই বড় হয়েছেন। দেখেছেন, একটু বড় হওয়ার পরেই দাদা জেঠুর হাত ধরে দুধ আনতে যেত। তিনি যৌথ পরিবারের সন্তান। কিন্তু এই প্রজন্ম অণু-পরিবারের সদস্য। অবসর বিনোদন বলতে মোবাইল, ভিডিয়ো গেম। বাইরের দুনিয়া, মানুষদের চেনেই না তারা। অতি যত্নে বড় হয়। বাড়ির চৌকাঠ পেরোলেই সেই যত্ন উধাও। তত দিনে তারাও বড়। ফলে, হয় অবসাদ, নয় মানুষ সম্বন্ধে ভীতি তৈরি হয়। আদিদেব যাতে এ সবের শিকার না হয়, তাই এই পদক্ষেপ। বাকি মায়েদের কাছেও সুদীপার তাই আন্তরিক আবেদন, ‘‘নিজের সন্তানদের ঘরের পাশাপাশি বাইরেটাও চেনান। তা হলে ভবিষ্যতে যে কোনও পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে পারবে।’’