শ্রীলেখা মিত্র
‘‘যখন সবাই টাকা এবং খ্যাতির জন্য বিজেপি-তৃণমূলে যোগ দিচ্ছিল, আমি তখন একা এই সিপিএম-এর পাশে দাঁড়িয়েছিলাম। আর সেই দলের সদস্যরাই এখন আমার নামে নানা কথা বলে বেড়াচ্ছে।’’ সুইজারল্যান্ডের মতো সুন্দর দেশে গিয়েও মন ভাল নেই শ্রীলেখা মিত্রের। সারমেয়র মৃত্যুখবর পাওয়ার পর থেকে হোটেলের ঘর থেকে বেরোচ্ছেন না তিনি। কেবল বিস্কুট খেয়ে পেট ভরাচ্ছেন। কুকুরছানার কথা বলতে বলতে কেঁদে ফেললেন অভিনেত্রী।
চলতি বছরের ১৪ জুলাই পথপশুদের আশ্রয় দেওয়ার ভাবনা থেকেই কফি ডেটে যাওয়ার কথা নেটমাধ্যমে জানান শ্রীলেখা মিত্র। কিছু ক্ষণের মধ্যেই অভিনেত্রীর ডাকে সাড়া দেন শশাঙ্ক ভাভসার নামের এক রেড ভলান্টিয়ার। তিনি শ্রীলেখার শর্ত মেনে এক অনাথ পথপশুকে দত্তক নেওয়ার কথাও জানান। কিন্তু দেড় মাসের মধ্যে ঘটনার মোড় ঘুরেছে বিবাদের দিকে।
সারমেয়র মৃত্যু হয়েছে চার-পাঁচ দিন আগে। সোমবার খবর পৌঁছেছে শ্রীলেখার কাছে। তার আগে শশাঙ্ক কাউকে কিছু জানাননি। সে দিনই নেটমাধ্যমে হতাশা, ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন শ্রীলেখা। তাঁর ডেট-সঙ্গীকে নেটমাধ্যমে হুমকি দিয়ে বলেছেন, ‘এর শেষ দেখে ছাড়ব শশাঙ্ক।’ কিন্তু বুধবার সকালে কয়েক জন পথপশুপ্রেমী দক্ষিণেশ্বরে তাঁর বাড়ি গিয়ে মারধর করেছেন বলে অভিযোগ তোলেন শশাঙ্ক। সারমেয় দত্তক নেওয়ার ঘটনার জল গড়িয়ে এখন আইনের দরজায়। মারধর করা হয়েছে বলে বেলঘরিয়া থানায় মামলা দায়ের করেছেন শশাঙ্ক।
সেই প্রসঙ্গে আনন্দবাজার অনলাইনকে শ্রীলেখার আক্ষেপ, ‘‘আমার নির্বুদ্ধিতার জন্য সব হল। আমি কেন খোঁজখবর না নিয়ে ছোট্ট কুকুরছানাকে কারও হাতে তুলে দিলাম! আসলে রেড ভলান্টিয়াররা তো মানুষের প্রাণ বাঁচায় বলেই জানতাম। তাই আর দ্বিধা জাগেনি মনে। কেবল কফি ডেটের জন্য শশাঙ্ক কুকুর দত্তক নিল?’’ সারমেয়র মৃত্যুর জন্য নিজেকে দোষারোপ করতে করতে কেঁদে ফেলেন শ্রীলেখা।
শশাঙ্ককে মারধর করার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে, শ্রীলেখা জানান, পথপশুপ্রেমীরা আবেগতাড়িত হয়ে শশাঙ্ককে মারধর করেছেন। তা ছাড়া তিনি হাজার মাইল দূরে থাকায় এই ঘটনার সম্পর্কে কিছু জানতেন না। কিন্তু তাও তাঁকে নিয়ে কুৎসিত মন্তব্য শুনতে হচ্ছে। শশাঙ্কর মামলা দায়ের নিয়ে আপাতত তাঁর কাছে কোনও খবর নেই। সে সব বিষয়ে তিনি এখন কিছু ভাবতেও রাজি নন। তাঁর আফসোস, ‘‘সিপিএম-এর লোকেরা বলছে, পার্টির নাকি আমাকে মাথায় তোলা উচিত হয়নি। আমি নাকি জঘন্য মানুষ। এখন আমাকে এ সব শুনতে হবে! তার উপরে কেউ সেই কুকুরছানাটির কথা ভাবছে না কেন?’’