RG Kar Protest

‘বিচার চাই, কিন্তু পেটে লাথি মেরে নয়’, ক্ষোভ নিয়ে কালিকাপ্রসাদকে খোলা চিঠি পৌষালীর

“প্রতিবাদ চলবেই, কিন্তু কিছু মানুষের রুজিরুটিতে আঘাত করা হচ্ছে কেন?” প্রশ্ন তুললেন পৌষালী।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৪:৩৭
Share:

কালিকাপ্রসাদ ভট্টাচার্য ও পৌষালী বন্দ্যোপাধ্যায়। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে জারি রয়েছে আন্দোলন। সোমবার প্রশাসনিক বৈঠক থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “একমাস হয়ে গেল। এ বার উৎসবে ফিরুন।” এই মন্তব্যের পরেই সমাজমাধ্যমে আন্দোলনকারীরা সুর চড়িয়ে জানিয়েছেন, তাঁরা উৎসবে ফিরছেন না। এক মাসও বাকি নেই দুর্গাপুজোর। এর মধ্যেই বাতিল হচ্ছে একের পরে এক অনুষ্ঠান। বিষয়টি নিয়ে এ বার ক্ষোভ উগরে দিলেন গায়িকা পৌষালী বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

প্রতিবাদ চলবেই। কিন্তু কেন কিছু মানুষের রুজিরুটিতে আঘাত করা হচ্ছে? প্রশ্ন তুললেন পৌষালী। বুধবার প্রয়াত সঙ্গীতশিল্পী কালিকাপ্রসাদ ভট্টাচার্যের জন্মদিনে একটি খোলা চিঠি লেখেন গায়িকা। চিঠির শুরুতেই তিনি লেখেন, “কালিকাদা, তোমায় খোলা চিঠি দিলাম। চারদিকে একটা ভীষণ দুঃসময় জান তো! তার মধ্যেই তোমার জন্মদিন এল। আজকের এই দিনটা, আমি জানি দুঃখ রঙে রাঙানো বারণ, তবু বার বার চোখের সামনে ঝাপসা হয়ে আসে কালিকাদা। সাত বছর হয়ে গিয়েছে চর্মচক্ষে তোমায় দেখতে পাই না। মানুষের মধ্যে কী চূড়ান্ত দীনতা! মাঝে মাঝে ভাবি ভাগ্যিস তুমি নেই। তোমার তো একটা মেরুদণ্ড ছিল। তুমি এই সমাজ সহ্য করতে পারতে না।”

আনন্দবাজার অনলাইনকে পৌষালী বলেন, “আন্দোলন চলবেই। আমিও আন্দোলনে শামিল হয়েছি। আমরা ঠিক ও ভুল চিনতে শিখছি। কিন্তু কোনও ভাবে নির্দিষ্ট জীবিকার মানুষেরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এটা কি আমাদের ভুল না?”

Advertisement

গায়িকা জানান, কিছু অনুষ্ঠান তাঁরা নিজেরাই বাতিল করেছেন। কিন্তু তার পরেও একের পর এক অনুষ্ঠান বাতিল হচ্ছে। তাঁর কথায়, “পর পর অনুষ্ঠান বাতিল হচ্ছে। অবশ্যই আমাদের মনখারাপ। কিন্তু শিল্পীদের তো এটা পেশা। সেখানে লাথি মারলে তো মুশকিল। আন্দোলন করতে হলে তো সকলের কথা ভেবেই করতে হবে। প্রত্যেক পেশার মানুষ কাজ করছেন। বেতন পাচ্ছেন। মঞ্চে গান গাওয়া তো আমাদেরও পেশা। সকলে তো লক্ষ লক্ষ টাকা পারিশ্রমিক পান না। কেউ কেউ ১২০০, ২০০০ বা ১০০০০ টাকার পারিশ্রমিকও পান। সকলেরই তো খেয়াল রাখতে হবে। গানবাজনার জায়গা থেকেই আমাদের অন্ন আসে। আমি আর্জি জানাচ্ছি মাত্র। মতামত চাপিয়ে দিচ্ছি না।”

শুধু শিল্পী নয়। পুজোর সময় রাস্তায় যাঁরা খাবারের দোকান নিয়ে বসেন তাঁদের হয়েও প্রশ্ন তোলেন পৌষালী। তিনি বলেন, “পুজোর মাধ্যমে বহু মানুষের জীবিকা চলে। বহু ছোট ছোট ব্যবসা এই পুজোর উপর নির্ভর করে থাকে। তাঁদের জন্যও কথা বলছি। আমি আন্দোলনে আছি। আবার মনুষ্যত্ব বোধেও আছি। সুবিচার আমিও চাই, কিন্তু পেটে লাথি মেরে নয়।”

কালিকাপ্রসাদের উদ্দেশে লেখা খোলা চিঠিতে পৌষালীর প্রশ্ন, “বিপ্লবে, দুঃসময়ে বড় মাছ ছোট মাছদের গিলে খায়। এই মাৎস্যন্যায় চিরন্তন। কিন্তু এর আগে প্রতিবাদের ভাষায় এত ভাবলেশহীন ভাবে পেটে লাথি মারার কর্মসূচী কখনও দেখিনি। যাঁদের অর্থ ও অন্ন সুনিশ্চিত, তাঁদের বিপ্লবের ভাষায় কত মানুষের দু’মুঠো অন্নের নিশ্চয়তা ভেঙে তছনছ হয়ে যেতে পারে, একবার কেউ ভাবছেন না। সহকর্মী? সতীর্থ? আইডল? দীর্ঘশ্বাস! তুমি থাকলে এমনটা ভাবতে?”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement