Sharmila Tagore

হিন্দি ছবিতে অভিনয় মেনে নেয়নি আমার স্কুল, তবে পাশে ছিলেন মানিকদা: শর্মিলা ঠাকুর

দীর্ঘ দিন পর বাংলা ছবিতে অভিনয় করবেন শর্মিলা ঠাকুর। সুমন ঘোষ পরিচালিত ‘পুরাতন’ ছবিতে শর্মিলার সঙ্গে থাকবেন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত এবং ইন্দ্রনীল সেনগুপ্ত।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৭:১১
Share:

শর্মিলা ঠাকুর। —নিজস্ব চিত্র।

সময় পেলেই তিনি কলকাতায় চলে আসেন। তবে এ বার এসেছেন বাংলা ছবিতে তাঁর প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে। শর্মিলা ঠাকুরের চোখে কলকাতা এখন কতটা বদলেছে? প্রশ্ন শুনেই হেসে বললেন, ‘‘কলকাতা এখনও বদলায়নি। আগের দিন গাড়িতে আসার সময় দেখলাম আধুনিক কিছু বাড়ি হয়েছে। কিন্তু বাকিটা একই আছে। রাস্তায় গর্তগুলো একই রকম আছে।’’ কলকাতার খাবার এখনও খেতে ভাল লাগে শর্মিলার। কিন্তু জানালেন, রাস্তার ধারের ঘুগনি বা ফুচকা এখন চাইলেও তিনি খেতে পারেন না।

Advertisement

সম্প্রতি হিন্দি ওয়েব ফিল্ম ‘গুলমোহর’-এ অভিনয় করেছেন শর্মিলা। নতুন এই মাধ্যমে তাঁর অভিজ্ঞতা যে খুবই ভাল তা জানাতে ভুললেন না ‘কাশ্মীর কি কলি’ খ্যাত বর্ষীয়ান অভিনেত্রী। বললেন, ‘‘আমাদের সময় তো সেটে কী করব বুঝে পারতাম না। এখন দেখি সবাই খুব নিয়মমাফিক কাজ করেন। চিত্রনাট্য পড়ে ফ্লোরে আসেন। আগে ডাবিংয়ে খুব সমস্যা হত। এখন সিঙ্ক সাউন্ডের কল্যাণে সেই সমস্যা দূর হয়েছে।’’ তরুণ প্রজন্মের কলাকুশলীর জ্ঞান এবং ক্রমাগত শেখার প্রচেষ্টা তাঁকে আনন্দ দেয়। তবে এখন যে কোনও ইন্ডাস্ট্রিতেই অভিনেতার কাছে ইংরেজি হরফে চিত্রনাট্য আসে। বিষয়টায় আপত্তি রয়েছে শর্মিলার। স্পষ্ট বললেন, ‘‘আমার অসুবিধা হয়। হিন্দি, ইংরেজি বা বাংলা— যে ভাষার চিত্রনাট্য, সেই ভাষাতেই তা পড়তে আমি স্বচ্ছন্দবোধ করি।’’

এক সময় সত্যজিৎ রায়ের ছবির মাধ্যমে অভিনয় জীবন শুরু করেন শর্মিলা। পরে বলিউডে যখন কাজ করেছেন, তখন সেখানে পুরুষশাসিত ইন্ডাস্ট্রি। কী ভাবে মানিয়ে নিতেন? শর্মিলা বললেন, ‘‘আমি নিজেকে মহিলা হিসাবে দেখিনি। ইউনিটের অংশ হিসাবেই দেখতাম। তাই আলাদা কোনও পার্থক্য আমার চোখে পড়েনি।’’ এক সময় হিন্দি ছবিতে অভিনয় করছেন বলে তাঁর স্কুল কিন্তু তা সমর্থন করেনি। শর্মিলার কথায়, ‘‘আমাকে বলা হয়েছিল, বাকিদের উপর খারাপ প্রভাব পড়বে। তাই আমাকে স্কুল বদলাতে হয়।’’

Advertisement

তবে সমর্থন পেয়েছিলেন সত্যজিৎ রায়ের। শর্মিলা বললেন, ‘‘মানিকদা উৎসাহ দিতেন। মুচকি মুচকি হাসতেন।’’ শর্মিলা তখন ‘আরাধনা’ ছবিতে ‘মেরে স্বপনো কি রানি’ গানের শুটিং করছেন। এ দিকে সত্যজিৎ রায়ের ফোন। তিনি এক মাসের ডেট চাইলেন অভিনেত্রীর কাছে। শর্মিলা বললেন, ‘‘আমি শক্তিজিকে (পরিচালক শক্তি সামন্ত) বললাম। আর মানিকদাকে না বলা অসম্ভব। উনিও বাঙালি। তিনি বুঝলেন এবং আমাকে যেতে দিলেন।’’ মুম্বইয়ে পতৌদি পরিবারে থেকেও অন্দরমহলে বাঙালিয়ানাকে যত্নে লালন করে চলেছেন শর্মিলা। কী ভাবে? বললেন, ‘‘বাঙালি পরিবারে বড় হয়েছি বলেই সেটা সম্ভব হয়েছে। বাংলায় রবীন্দ্রনাথ পড়ার কোনও বিকল্প নেই।’’ এই প্রসঙ্গেই তিনি বললেন, ‘‘আমার স্বামী বাংলা জানতেন। সইফও একটু জানে। সোহা কিছু বাংলা ছবিতে কাজ করেছে।’’ সামনেই দুর্গাপুজো। শর্মিলা কি কলকাতায় আসবেন? অভিনেত্রী জানালেন, এখনও সে রকম কোনও পরিকল্পনা নেই। আপাতত বাংলা ছবিতে আরও এক বার শর্মিলাকে দেখার অপেক্ষায় দিন গুনছেন অনুরাগীরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement