ওয়েব নাটকের পোস্টার।
করোনা, লকডাউনের নতুন দিক, ওয়েব সিরিজের বদলে ওয়েব নাটক। এমন অভিনব ভাবনা, ‘হোল নাইন ইয়ার্ডস’ এবং ‘আলিয়ঁস ফ্রাঁসে দু বেঙ্গল’-এর। তাদের পছন্দ ১৯১২ সালে লেখা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের 'ডাকঘর'। অবসরের বিনোদনে দুই সংস্থা সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে নিয়ে আসছে ১০৮ বছর আগে জন্ম নেওয়া অমল আর ঠাকুর্দাকে।
নাটক রচনার পরের বছর ১৯১৩ সালে প্রথম এর ইংরেজি অনুবাদ মঞ্চস্থ হয়েছিল লন্ডনের আইরিশ থিয়েটারে। সেই নাটক দেখেছিলেন বিশ্বকবি স্বয়ং।
তারই বাংলায় ভার্সন ‘কাল্ট’ আখ্যা পেয়েছিল শম্ভু মিত্রের পরিচালনায় এবং অভিনয়গুণে। সেখানে ‘অমল’ চৈতি ঘোষাল, ‘ঠাকুর্দা’ শম্ভু মিত্র। পরিচালক অভ্রজিৎ সেন একালের প্রেক্ষাপটে ওই দুই কিংবদন্তি চরিত্রে বেছে নিয়েছেন ঋতব্রত, শান্তিলাল মুখোপাধ্যায়কে।
বাবা-ছেলেকে এর আগে বেশ কয়েকবার দেখা গেছে নাটকে, বড় পর্দায়। কখনও বাবা-ছেলে হিসেবে। কখনও সিনিয়র গোয়্ন্দার জুনিয়র হিসেবে। ‘অমল-ঠাকুর্দা’র জার্নি কেমন? সরল স্বীকারোক্তি শান্তিলালের, ‘‘কাস্টিং শোনার পরে এসব মাথায় আসে নাকি? শুধু মনে হয়েছিল, শম্ভু মিত্র যে নাটককে কিংবদন্তি বানিয়েছেন তাকে রিপ্রেজেন্ট করতে চলেছি। মানটা যেন রাখতে পারি।’’
সেই মান রাখতে নিশ্চয়ই অসম্ভব খেটেছেন বাবা-ছেলে? ‘ভিডিও কনফারেন্সে যতটা রিহার্স হয়, করেছি’ জানালেন ‘ঠাকুর্দা’।
আরও পড়ুন: যে আশাকে স্বামী ঘাড়ধাক্কা দিয়ে তাড়িয়েছিলেন, রাহুল তাঁকেই গ্রহণ করেছিলেন পরম আদরে
অফার পেলেন কীভাবে? সহজ উত্তর অভিনেতার, ‘‘ঋতব্রতর মাধ্যমে। ওর সঙ্গে প্রথমে যোগাযোগ করে সংস্থা। আমাদের অমল আর ঠাকুর্দা হিসেবে চেয়েছিলেন পরিচালক। কথা বলে মনে হল, একবার চেষ্টা করে দেখা যাক। তারপরেই....।’’
ওয়েব প্ল্যাটফর্মে নাটক কেমন লাগবে দর্শকদের? শান্তিলালের স্মিত জবাব, ‘‘অনেকটা শ্রুতি নাটকের মতো। এখানে তো ছড়িয়ে অভিনয়ের সুযোগ নেই। তাই বসে আমাদের চরিত্র ফুটিয়ে তুলব কণ্ঠ দিয়ে।’’
শান্তিলাল-ঋতব্রত ছাড়াও অভিনয় করবেন উন্মেষ গঙ্গোপাধ্যায়, সুপ্রতিম সিংহ, দেবপ্রিয় মুখোপাধ্যায়, তনিকা বসু, সুহোত্রা মুখোপাধ্যায় এবং সৌম্যদীপ চক্রবর্তী। অভ্রজিৎ জানিয়েছেন, নাটকে সঙ্গীতের বিষয়টিকেও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। গানঘরের দায়িত্বে দিব্যকমল মিত্র, মেঘাতিথি বন্দ্যোপাধ্যায়, রোহন চক্রবর্তী।
অনলাইনে এই নাটক দেখা যাবে ২৮ জুন, রবিবার, 'অফবিট' সাংস্কৃতিক সংস্থার জ়ুম অ্যাকাউন্টে। ভারতীয় সময় অনুযায়ী বিকেল ৫টা ও রাত ৮টায় দেখা যাবে নাটক। শম্ভুবাবুর চরিত্রে অভিনয় মানে তাঁর জুতোয় পা গলানো। একটু টেনশন? হো হো হাসির সঙ্গে অমায়িক উত্তর একুশের ‘ঠাকুর্দা’র, ‘আকাশের চাঁদের সঙ্গে বাঁদরের তুলনা হয়? এ জুতোয় পা গলানোর সাধ্যি কারও নেই। মাথায় করে রাখতে হয় এ জুতো।’