ভুগছিলেন মস্তিষ্কের অসুখে, প্রয়াত হলিউড অভিনেতা টম সাইজ়মোর। ছবি: সংগৃহীত।
প্রয়াত হলিউড অভিনেতা টম সাইজ়মোর। ৬১ বছর বয়সে জীবনাবসান অভিনেতার। ১৮ ফেব্রুয়ারি লস অ্যাঞ্জেলেসে নিজের বাড়িতে ব্রেন অ্যানিউরিজ়মের কবলে পড়েন টম। মস্তিষ্কের সেই অসুখের কারণে গত সপ্তাহ দু’য়েক ধরে ভর্তি ছিলেন হাসপাতালে। ৩ মার্চ ক্যালিফোর্নিয়ার হাসপাতালে জীবনাবসান হয় তাঁর। ঘুমের মধ্যে মৃত্যু হয় ‘হিট’ খ্যাত তারকার। অভিনেতার মৃত্যুর খবর জানান তাঁর ম্যানেজার চার্লস ল্যাগো।
যৌন হেনস্থা, গার্হস্থ্য হিংসার অভিযোগ উঠেছিল হলিউড অভিনেতার বিরুদ্ধে। ছবি: সংগৃহীত।
নব্বইয়ের দশকের নামজাদা অভিনেতা টম সাইজ়মোর। ‘ন্যাচরাল বর্ন কিলার্স’, ‘সেভিং প্রাইভেট রায়ান’-এর মতো ছবিতে অভিনয় করেছেন দাপটের সঙ্গে। পরবর্তী কালে গার্হস্থ্য হিংসা, যৌন হেনস্থা, অতিরিক্ত মাদক সেবনের মতো একাধিক অভিযোগে বিদ্ধ হন তিনি। একের পর এক আইনি জটিলতার প্রভাব পড়ে তাঁর কর্মজীবনেও। লাখপতি থেকে গৃহহীন হতে খুব বেশি সময় লাগেনি টম সাইজ়মোরের। এমনকি, জেলেও রাত কাটাতে হয়েছে অভিনেতাকে। ১৯৯৭ সালে তৎকালীন স্ত্রী মেইভ কুইনল্যানের উপর গার্হস্থ্য হিংসার অভিযোগ ওঠে টম সাইজ়মোরের বিরুদ্ধে। বছর দু’য়েক সেই মামলা চলার পর ১৯৯৯ সালে অভিনেতার বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ নস্যাৎ করে আদালত। সেই বছরই মেইভের সঙ্গে বিচ্ছেদ হয় টমের। ২০০৩ সালে ফের তাঁর বিরুদ্ধে হেনস্থার মামলা করেন অভিনেতার তৎকালীন প্রেমিকা হেইদি ফ্লেইস। মামলার জেরে জেলে যেতে হয় অভিনেতাকে। শুধু গার্হস্থ্য হিংসা নয়, একাধিক বার যৌন হেনস্থার অভিযোগেও বিদ্ধ হয়েছেন টম সাইজ়মোর। ২০০৩ সালে এক ছবির সেটে ১১ বছরের কিশোরীকে হেনস্থা করার অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। ২০১৭ সালে ‘মিটু’ আন্দোলনের সময় প্রকাশ্যে আসে সেই ঘটনা। যদিও ওই অভিযোগ সম্পূর্ণ ভাবে অস্বীকার করেছিলেন অভিনেতা। ২০০২ সালে আরও এক যৌন হেনস্থার মামলায় অভিযুক্ত হন টম। ২০১৬ সালেও তাঁর বিরুদ্ধে গার্হস্থ্য হিংসা অভিযোগ ওঠে। নিষিদ্ধ মাদক সেবনের অভিযোগে ২০০৭ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত জেলবন্দি ছিলেন এক সময়ের জনপ্রিয় হলিউড তারকা।
উজ্জ্বল সম্ভাবনা নিয়ে হলিউডে এসেছিলেন ডেট্রয়েটের টম সাইজ়মোর। ‘হিট’, ‘ন্যাচরাল বর্ন কিলার্স’, ‘সেভিং প্রাইভেট রায়ান’-এর মতো ছবিতে কাজ করে সুখ্যাতি পেয়েছিলেন তিনি। তবে তা দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। ২০১৩ সালে প্রকাশিত আত্মজীবনীতে টম লেখেন, ‘‘স্বল্প সম্বল থেকে লাখপতি হয়েছিলাম আমি। কয়েক লক্ষ টাকার বাড়ি, দামি গাড়ি থেকে শুরু করে রবার্ট ডি নিরোর সঙ্গে এক রেস্তরাঁর মালিকানাও ছিল আমার নামে। কোনও এক মন্ত্রবলে আমি এই সব কিছু পেয়েছিলাম। এখন আমার কাছে কিছুই নেই।’’