হর্ষদ মেহতার নাম কে না জানে! তাঁর উত্থান, শেয়ার বাজারে তাঁর আধিপত্য, আর্থিক কেলেঙ্কারি নিয়ে বলিউড একটি ছবি বানিয়ে ফেলেছে। কুকি গুলাটির ‘দ্য বিগ বুল’। কলঙ্কিত নায়কের ভূমিকায় ছিলেন অভিষেক বচ্চন। বাংলাতেও বড় মাপের আর্থিক কেলেঙ্কারি ঘটেছে নাকি কখনও? বিষয়টি নিয়ে কথা হচ্ছিল পরিচালক সত্যজিৎ দাসের সঙ্গে। তখনই পরিচালক কথা প্রসঙ্গে জানান, হর্ষদ মেহতার ডান হাত একটা সময়ে রাজত্ব করে গিয়েছেন শহর কলকাতার বুকে। নাম কেতন পারেখ। এই শহরেই ২০০৮ সালে তাঁর ১২০ কোটি টাকার কেলেঙ্কারির কথা এক সময় ফলাও করে উঠে এসেছিল সংবাদপত্রের পাতায়।
তার পরে ধামাচাপা পড়ে গিয়েছে। সম্প্রতি, সেই কেলেঙ্কারির উপর থেকে নাকি ফের পর্দা উঠতে চলেছে। এ বার চিরঞ্জিৎ চক্রবর্তীর কাঁধে পুরো দায়িত্ব। তিনিই প্রকাশ্যে আনবেন অপরাধীকে।
ঘটনা সত্যি? জানতে আনন্দবাজার অনলাইন যোগাযোগ করেছিল অভিনেতা-বিধায়কের সঙ্গে। চিরঞ্জিৎ এই মুহূর্তে আমেরিকায়, মেয়ের কাছে। এর পর দিদির সঙ্গে দেখা করতে যাবেন। প্রশ্ন শুনেই অট্টাহাসি। তার পরেই দাবি, ‘‘হ্যাঁ, চমকে ওঠার মতোই খবর বটে। সত্যজিতের আগামী ছবি ‘মানি মাফিয়া’ কেতন পারেখের জীবনের উপরে তৈরি। সেখানেই আমি তদন্তকারী অফিসার। আমিই ফাঁস করতে চলেছি যাবতীয় আর্থিক কেলেঙ্কারি।’’
কোনও ভাবে কি ছবিটি ‘দ্য বিগ বুল’ থেকে অনুপ্রাণিত? পরিচালকের যুক্তি, বাংলাতেও শেয়ার বাজার আছে। সেখানেও আর্থিক কেলেঙ্কারি আছে। তুলনায় সব কিছু আড়ালে হয় বলে অনেক খবর সাধারণের কানে পৌঁছয় না। কেউ বিষয়টিকে ছবির মাধ্যমে তুলে ধরার কথাও ভাবে না। ছবিতে কেতনের ভূমিকায় দেখা যাবে সুরজিত মানাকে। আছেন জয় সেনগুপ্ত, অনিন্দ্যপুলক বন্দ্যোপাধ্যায়, দেবপ্রসাদ হালদার, রিয়া সরকার প্রমুখ। ছবির শ্যুট হয়েছে কলকাতা জুড়ে। লালবাজার, শেয়ার বাজার, বিধাননগর, ডালহৌসি, ধর্মতলার মতো জনবহুল জায়গা ধরা পড়েছে ক্যামেরায়।
আবারও তদন্তকারী অফিসার। একঘেয়ে লাগেনি? ‘‘একেবারেই না’’, দাবি চিরঞ্জিতের। তাঁর মতে, চিত্রনাট্যের মতোই প্রতিটি চরিত্র জীবন্ত এবং যথাযথ। তাই একা তিনি নন, কোনও অভিনেতাই একঘেয়েমিতে ভোগেননি। বাংলা ছাড়াও হিন্দি, তামিল, তেলুগু-সহ মোট চারটি ভাষায় সর্বভারতীয় স্তরে মুক্তি পেতে চলেছে ‘মানি মাফিয়া’। দক্ষিণী ছবির সঙ্গে টক্কর দিতেই কি অবশেষে এই আয়োজন? বর্ষীয়ান অভিনেতার কথায়, ‘‘দক্ষিণী ছবি হাজার কোটির ঘরে। বাংলা ছবির সেখানে পৌঁছনোর সাধ্য নেই। তবে ছবির গল্প সর্বভারতীয় স্তরকে মাথায় রেখেই বানানো হয়েছে। তাই অনেক দিন পরে একটি বাংলা ছবি এক সঙ্গে চারটি ভাষায় মুক্তি পেতে চলেছে।’’