অঙ্কিতা। ছবি: নিরুপম দত্ত
পরিবারে সকলেই ইঞ্জিনিয়ার-ডাক্তার। তবু গোবরডাঙার সেই বাড়ির মেয়ে অঙ্কিতা ভট্টাচার্যের গানের পথে বাধা সৃষ্টি করেননি কেউ । ‘সা রে গা মা পা’ বিজয়ী অঙ্কিতা বলছিলেন, ‘‘যিশুদা যখন আমার নাম বলল, বিশ্বাস হচ্ছিল না। ওই মুহূর্ত ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না। ওই অনুভূতি সে দিনই প্রথম বার বুঝতে পারলাম।’’ অঙ্কিতার মা-ও ভাল গান গাইতে পারেন। ‘‘মায়ের যখন খুব অল্প বয়স, তখন আমি জন্মাই। তার পরে গান নিয়ে আর চর্চা করতে পারেননি মা। সেটা নিয়ে আমারও খারাপ লাগা ছিল।’’ তবে এই জয়ের পরে বাক্রুদ্ধ অঙ্কিতার মা। ‘‘মা তো কিছু বলতেই পারছিলেন না। খালি দু’চোখ বেয়ে ঝরঝর করে জল পড়ছে। আবার মায়ের চেয়ে বেশি ইমোশনাল বাবা।’’
দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী অঙ্কিতা। তাঁর স্কুলের প্রধান শিক্ষকও রবিবারের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। ‘‘হেডস্যর কারও কাছ থেকে টাকা না নিয়ে ৬০-৭০টি প্ল্যাকার্ড নিজে বানিয়েছেন। সেটা আমার স্কুলের দু’দিকের ২০ কিলোমিটার পর্যন্ত লাগানো হয়েছে। শুনলাম, স্কুলে আমাকে সংবর্ধনা দেওয়া হবে। এটা বড় প্রাপ্তি,’’ আপ্লুত কৃতী ছাত্রী।
গত সাত বছর ধরে অঙ্কিতা গান শিখছেন রথীজিৎ ভট্টাচার্যের কাছে। তাঁর পছন্দের শিল্পী শ্রেয়া ঘোষাল, অরিজিৎ সিংহ। তাঁর আইডল আশা ভোঁসলে। কিশোরকুমারের গান গাইতেও ভালবাসেন তিনি। শো চলাকালীন তাঁর লাকি চার্ম কী ছিল? ‘‘পারফর্ম করার আগে তিন জন প্রিয় মানুষের নামে প্রার্থনা করতাম। তবে যে দিন সেটা করতে ভুলেছি, সে দিনই পারফরম্যান্স খারাপ হয়েছে। এ ছাড়া বাবা-মা দু’জনে না এলে গান ভাল হয়নি,’’ হাসতে হাসতে স্মৃতিচারণা শিল্পীর। নাচ, আবৃত্তি, অভিনয়েরও শখ রয়েছে অঙ্কিতার। মায়ের হাতের মিক্সড ফ্রায়েড রাইস ও চিলি চিকেন তাঁর ফেভারিট।
আরও পড়ুন: ইন্ডাস্ট্রিতে ব্রাত্য কেন কঙ্গনা?
রিয়্যালিটি শোয়ের বিজয়ীরা কয়েক বছর পরেই হারিয়ে যান। ‘‘আমার লক্ষ্য প্লেব্যাক সিঙ্গার হওয়া। সেটাকে সামনে রেখে মাচা কম করতে চাই। ইউটিউবের মাধ্যমে নিজের গান শ্রোতার কাছে পৌঁছে দিতে চাই। মাচা ছাড়াও এমন অনেক কনসার্ট হয়, যেখান থেকে যোগাযোগ বাড়ে, পরিচিতি বাড়ে, সেখানে অংশ নিতে চাই। মাচা আর খাঁচার ফারাক জানি।’’ শোয়ে ‘বাচ্চা পার্টি’র অংশ হলেও এই কথার পরে তাঁকে আর বাচ্চা বলা যায় না। গানের সঙ্গে পড়াশোনাও চালিয়ে যাবেন অঙ্কিতা। ‘‘গ্র্যাজুয়েশন করতেই হবে। না হলে বাড়িতে বকুনি জুটবে,’’ জবাব তাঁর।