ছিলেন সাংবাদিক। কাজের সূত্রেই সাক্ষাৎকার নিতে গিয়ে আলাপ হবু স্বামীর সঙ্গে। কিন্তু বিবাহিত জীবন দীর্ঘ হয়নি সলমন খানের বোন শ্বেতা রোহিরার।
শ্বেতা সলমনের নিজের বোন নন। পাতানো বোন। সংবাদমাধ্যমে পরিচিত ‘রাখি সিস্টার’ নামে। সাংবাদিকতা করার সময়ে তিনি অভিনেতা পুলকিতের সাক্ষাৎকার নিতে গিয়েছিলেন। প্রথম আলাপ থেকেই ধীরে ধীরে বাড়ে ঘনিষ্ঠতা।
শ্বেতার সঙ্গে আলাপের সময় পুলকিত ছিলেন টেলিভিশন তারকা। জীবনের ওঠাপড়ায় তাঁর পাশে ছিলেন শ্বেতা। তাঁদের রূপকথার মতো বিয়ে জায়গা করে নিয়েছিল সংবাদ শিরোনামে। কন্যাদান করেছিলেন স্বয়ং সলমন।
তবে রোশনাইয়ের পাশাপাশি ছিল অন্ধকারও। প্রশ্নও উঠেছিল পুলকিত-শ্বেতার বিয়ে ঘিরে। অনেকেই বলেছিলেন, ভালবেসে নয়, শ্বেতাকে তিনি বিয়ে করছেন সলমনের ঘনিষ্ঠ হওয়ার জন্য।
পুলকিত-শ্বেতার বিয়ের এক বছরের মধ্যে ক্রমশ সত্যি হল এই আশঙ্কা। এক বছর কাটতে না কাটতেই সম্পর্কে ফাটল। ক্রমশ তিক্ত হতে থাকে তাঁদের সম্পর্ক। বিবাহবার্ষিকীও একসঙ্গে কাটাননি দু’জনে।
পুলকিতের প্রথম সিনেমা ‘বিট্টু বস’ মুক্তি পেয়েছিল ২০১২ সালে। তার মাত্র দু’বছরের মধ্যেই বিয়ে করে নেন তিনি। সাধারণত সুদর্শন অভিনেতারা অপেক্ষা করেন বিয়ের জন্য। কারণ প্রচলিত রীতি অনুযায়ী বিয়ের পরে নায়ক নায়িকাদের চাহিদা কমে যায়।
কিন্তু পুলকিত নাকি সলমনের প্রিয়পাত্র হওয়ার জন্যই তড়িঘড়ি বিয়ে করেন শ্বেতাকে। বিয়ের পরে সলমনের সঙ্গে পুলকিতের ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। খান পরিবারের অনুষ্ঠান থেকে জিমে শরীরচর্চা। সর্বত্র সলমনের পাশাপাশিই থাকতেন পুলকিত।
অন্য দিকে কিন্তু ক্রমশ ভেঙে পড়ছিল পুলকিত-শ্বেতার দাম্পত্যের ভিত। এক সাক্ষাৎকারে শ্বেতা জানিয়েছিলেন বিয়ের কয়েক মাস পরেই তাঁর গর্ভপাত হয়ে যায়। তখন থেকেই দু’জনের সম্পর্ক তিক্ত হতে থাকে।
গুঞ্জন উঠেছিল, ইয়ামি গৌতমের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার জন্যই গর্ভপাতের পরে অসুস্থ স্ত্রী শ্বেতার থেকে দূরে সরে গিয়েছিলেন পুলকিত। কিন্তু প্রথমে এই দাবি উড়িয়ে দিয়েছিলেন শ্বেতা। তিনি বিশ্বাসই করেননি ইয়ামির সঙ্গে পুলকিতের ঘনিষ্ঠতা থাকতে পারে।
পরে অবশ্য শ্বেতা স্বীকার করেছিলেন প্রথমে তাঁর ভুল হয়েছিল। ইয়ামির জন্যই ভেঙে গিয়েছে তাঁর দাম্পত্য। তবে পুলকিত কোনও দিন এই দাবি মেনে নেননি। তিনি বরাবর বলে এসেছেন, ইয়ামির সঙ্গে তাঁর কোনও সম্পর্ক ছিল না।
পুলকিত-শ্বেতার বিয়ে যেমন আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু ছিল, তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদ নিয়েও কম জলঘোলা হয়নি! একে অন্যের উদ্দেশে তাঁদের বিষোদ্গার প্রায়ই খবরে জায়গা পেত।
এক বার নাকি ইয়ামি থাপ্পড়ও মেরেছিলেন শ্বেতাকে। সিমলায় শ্যুটিং চলছিল ‘সনম রে’ ছবির। পুলকিতকে সারপ্রাইজ দিতে তাঁকে না জানিয়েই শ্বেতা গিয়েছিলেন সেখানে।
কিন্তু শুটিং স্পটে ইয়ামি-শ্বেতা মুখোমুখি হতেই বাড়ল বিপত্তি। উত্তপ্ত কথা কাটাকাটির সময়ে নাকি শ্বেতাকে চড় মেরেছিলেন ‘ভিকি ডোনার’-এর নায়িকা।
সলমন খান বহু চেষ্টা করেছিলেন বোনের ভাঙা সংসার জোড়া দিতে। কিন্তু সফল হননি। শেষ অবধি ২০১৫ সালে পুলকিত-শ্বেতার বিচ্ছেদ হয়ে যায়। বিবাহবিচ্ছেদের পরে বহু সাক্ষাৎকারে পুলকিতের উপরে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন শ্বেতা।
ডিভোর্সের পরে শ্বেতা এখন ব্যস্ত কাজ নিয়েই। কমিয়ে ফেলেছেন নিজের ওজন। তাঁর কাছে আসছে কাজের সুযোগও। টেলিভিশন বা শর্ট ফিল্মে অভিনয়ের প্রস্তাবে তিনি রাজি হননি। মন দিতে চান ছবি আঁকা আর লেখালেখিতেই।
এক সাক্ষাৎকারে শ্বেতা বলেছেন, তিনি পুলকিতের প্রাক্তন স্ত্রীর পরিচয়ে পরিচিত হতে চান না। পুরনো তিক্ততা ভুলে তৈরি করতে চান নিজের আলাদা পরিচিতি।
অন্য দিকে পুলকিতও ব্যস্ত কাজ নিয়ে। ‘ডলি কি ডোলি’, ‘ফুকরে রিটার্নস’, ‘বীরে কি ওয়েডিং’-সহ বেশ কিছু ছবিতে সম্প্রতি অভিনয় করেছেন তিনি। কিন্তু এখনও সুপারহিট ছবির অংশ হয়ে উঠতে পারেননি।
ইয়ামি গৌতমের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কও ভেঙে গিয়েছে। শোনা যায়, ইয়ামি-ই সরে এসেছেন পুলকিতের কাছ থেকে। ঘর ভাঙার অপবাদ নিজের ভাবমূর্তি থেকে মুছে ফেলতে নাকি মরিয়া ছিলেন ‘বালা’-র অন্যতম নায়িকা।
ইয়ামির পরে কৃতী খরবান্দার সঙ্গে পুলকিতের ঘনিষ্ঠতা নিয়ে গুঞ্জন রটেছিল। ‘পাগলপন্তী’ এবং ‘বীরে দি ওয়েডিং’ ছবিতে কীর্তি তাঁর সহঅভিনেত্রী ছিলেন।