ভাল চেষ্টা, তবু জমল না

ছবিতে সেফ পাকস্থলীর ক্যানসারে আক্রান্ত। যদিও নিরামিষ ভাবেই জীবন কাটিয়েছে সে। না মদ, না সিগারেট, এমনকী মাখনেরও এন্ট্রি ছিল না তার পাকস্থলীতে। তা সত্ত্বেও জীবনের এই অন্যায় অবিচারের জবাবে সেফ স্থির করে, না-করা সব কিছুকে চেখে দেখার।

Advertisement

মধুমন্তী পৈত চৌধুরী

শেষ আপডেট: ১৫ জানুয়ারি ২০১৮ ০০:৪০
Share:

ছবির পোস্টারে সেফ আলি খানের কাঁধে রাখা হলুদ পশমের ঝালর। সাত-আটেক রঙিন রবার ব্যান্ড দিয়ে টেনে টেনে বাঁধা ঝুঁটি, আর চোখের তলায় ঘেঁটে যাওয়া কাজলের পুরু আস্তরণ... ব্যাপারটা কী বলুন তো? কালাকান্ডি। মুম্বইয়ে চালু এই মরাঠি শব্দের মানে জীবনে ঝ়ঞ্ঝাট। ছবির নামে যে চমক, শেষ দৃশ্য পর্যন্ত সেই চমকের খেলা বজায় রেখেছেন নতুন পরিচালক অক্ষত বর্মা। তবে ছবির তিনটি পৃথক গল্প ঠিক যেন জমাট বাঁধল না।

Advertisement

ছবিতে সেফ পাকস্থলীর ক্যানসারে আক্রান্ত। যদিও নিরামিষ ভাবেই জীবন কাটিয়েছে সে। না মদ, না সিগারেট, এমনকী মাখনেরও এন্ট্রি ছিল না তার পাকস্থলীতে। তা সত্ত্বেও জীবনের এই অন্যায় অবিচারের জবাবে সেফ স্থির করে, না-করা সব কিছুকে চেখে দেখার। এলএসডির স্বপ্নঘোরে শুরু হয় তার অ্যাডভেঞ্চার। সফরসঙ্গী সেফের ভাই (অক্ষয়) যে কয়েক ঘণ্টা পরেই বিয়ের পিঁড়িতে বসবে এবং এক রূপান্তরকামী যৌনকর্মী।

আর একটি গল্পে প্রেমিকাকে এয়ারপোর্টে ছাড়তে যাওয়ার পথে তার বন্ধুর জন্মদিনের রেভ পার্টিতে গিয়ে আটকে পড়ে এক যুগল (কুনাল ও শোভিতা)। সেখান থেকে বেরোলেও আর এক দুর্ঘটনা পথ আটকে দাঁড়ায়। অন্য দিকে ডন বসকে টুপি পরিয়ে টাকা লোপাট করার ফন্দি আঁটে দুই নিচু স্তরের গুন্ডা (দীপক ও বিজয়)। সব কিছুরই সাক্ষী মুম্বইয়ের একটি রাত। লক্ষ্যণীয়, ছবির বেশির ভাগ চরিত্রের নাম জানা যায় না।

Advertisement

ছবির শেষে পরিচালক তিনটি গল্পকে মিলিয়ে দেন, তবে সেটা ছবির স্বার্থেই। দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই প্রথমার্ধের কমেডির জায়গা দখল করে ট্র্যাজেডি। মৃত্যু, শঠতার যুগপৎ আক্রমণে আপনি সিটে সটান হয়ে বসবেন। অক্ষতের লেখা এই গল্পে ভাবনাচিন্তার খোরাক আছে। আছে সেক্স, ডার্ক কমেডির মতো বিভিন্ন জঁর নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট। তবে তিনটি গল্পকে একসঙ্গে দে‌খাতে গিয়ে কোথাও কোথাও ছন্দপতন হয়েছে। ‘দিল্লি বেলির’ চিত্রনাট্যকার অক্ষতের ডার্ক কমেডি সাহসী, কিন্তু জমাটি নয়। আর কমেডির চেয়েও ট্র্যাজেডি বেশি দাগ কাটে।

কালাকান্ডি

পরিচালনা: অক্ষত বর্মা

অভিনয়: সেফ, কুনাল, শোভিতা,
দীপক, বিজয়, অক্ষয়

৫.৫/১০

বাণিজ্যিক সাফল্যের কথা না ভেবে সেফ যে ভাবে ভিন্নধর্মী ছবি নির্বাচন করছেন, তা অবশ্যই প্রশংসনীয়। রূপান্তরকামীকে বলা সেফের সংলাপ ‘মুঝে আপকা সামান দেখনে কা কিউরিওসিটি হ্যায়’ হিন্দি ছবির ইতিহাস মনে রাখবে। ছকভাঙা পুরুষের ছন্দহীন জীবন পরদায় সসম্মানে ফুটিয়ে তুলেছেন সেফ। দাগ কেটেছেন দীপক ডোব্রিয়াল ও বিজয় রাজ। শোভিতাও মন্দ নন। তবে কুনাল রায় কপূরের কিছু করণীয় ছিল না।

অনেক চরিত্রের ভিড়ে আর একটি চরিত্রও ছিল যে, সব গল্পেরই দোসর, আবার ভিলেনও।

মুম্বইয়ের বৃষ্টি...

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement