Rupanjana Mitra and Ratool Mukherjee Interview

আমার ছেলে রিয়ানকে বলেছি আমার আর রাতুলের বিয়ে পুজোর মতো: রূপাঞ্জনা মিত্র

আনন্দবাজার অনলাইনে বিয়ের ঠিক আগের দিন বিয়ের পরিকল্পনা জানালেন রূপাঞ্জনা মিত্র এবং রাতুল মুখোপাধ্যায়।

Advertisement

স্রবন্তী বন্দ্যোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ১৮:৪৮
Share:

রূপাঞ্জনা মিত্র ও রাতুল মুখোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র।

কাল তাঁদের বিয়ে। ব্লাউজ়ের ডেলিভারি, নখের সাজ। ছেলে আর হবু স্বামীর জন্য মিলিয়ে শার্ট কেনা, নিজের জন্য শাড়ি। আর তার মাঝেই আনন্দবাজার অনলাইনের মুখোমুখি রুপাঞ্জনা মিত্র এবং রাতুল মুখোপাধ্যায়।

Advertisement

প্রশ্ন: রূপাঞ্জনাকে বেশ লাজুক লাজুক লাগছে…

রূপাঞ্জনা: এ কী! না। আমি তো এই কালীঘাটে পুজো দিয়ে এলাম। বাচ্চাদের খাওয়ালাম। সঙ্কল্প করে এলাম। কাল বিয়ে! একটু চিন্তা তো হবেই।

Advertisement

রাতুল: (কোনও কথা নেই। রূপাঞ্জনার দিকে তাকিয়ে)

প্রশ্ন: কত দিনের বন্ধুত্ব আপনাদের?

রূপাঞ্জনা: সাড়ে ছ’বছরের বন্ধুত্ব। করোনার সময় আলাপ।

রাতুল: তিন দিনের মাথায় প্রেমের প্রস্তাব।

প্রশ্ন: এ রকম এখন হয়?

রাতুল: নিশ্চয়। রূপাঞ্জনাকে দেখেই খুব ভাল লেগে গিয়েছিল। মনে আছে আমার, শীতকালে আমাদের প্রথম দেখা।

রূপাঞ্জনা: রিয়ান সে দিন স্কুলে প্রথম মঞ্চে অনুষ্ঠান করেছিল। আর সেই অভিজ্ঞতাই আমি রাতুলকে বলেছিলাম।

রাতুল: আমি তো ওই লম্বা কালো কোট পরে ওকে আসতে দেখে মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম। মনে হয়েছিল যেন ধীর গতিতে আসছে।

রূপাঞ্জনা: আমি তো হেঁটেই আসছিলাম। ও ভেবেছে ‘স্লো মোশান’। (হাসি)

রাতুল: সেই দিন কথা বলে, দেখে মনে হয়েছিল আমরা ‘মেড ফর ইচ আদার’। আর এত দিন একসঙ্গে চলার পরে মনে হল, আমি ছোটবেলার সেই ‘মারিয়ো’ ভিডিয়ো গেমের মতো সব বাধা পেরিয়ে গিয়ে রাজকন্যা নয়, রানিকে পেলাম।

প্রশ্ন: বন্ধুত্ব, প্রেম এ বার বিয়ে। এটা কি আগে থেকেই ঠিক ছিল?

রূপাঞ্জনা: বিয়ের পরিকল্পনা আমাদের ছিলই। আমরা রিয়ানের জন্য অপেক্ষা করছিলাম। আমি রাতুলের কাছে কৃতজ্ঞ, ও আমার জন্য অপেক্ষা করেছে। আমরা কেউ কাউকে ছেড়ে যাইনি। আমাদের বিয়ের জন্য রিয়ানের বেড়ে ওঠা জরুরি ছিল।

প্রশ্ন: আপনারা যে বিয়ে করছেন, সেই বিষয়ে কী বললেন ছেলে রিয়ানকে?

রূপাঞ্জনা: আমরা ওকে বুঝিয়েছি। আমার জীবনে বন্ধু এল, সেই বন্ধুকে ছেলের সঙ্গে আলাপ করিয়েছিলাম আমি। ওরা নিজেদের মতো করে মিশতে শুরু করল। যে যে বিষয়ে রিয়ান ভয় পেত, রাতুল পড়াশোনার সেই সব বিষয় ধরিয়ে দিল। রিয়ান এখন আমাকে ভয় পায়। আর রাতুলের কাছে ওর যত আবদার। ওকে ‘চ্যাম্পস’ বলে ডাকে। বরাবর রিয়ানের সঙ্গে আমি আর রাতুল খোলাখুলি কথা বলি। ও খুব পরিণত। আমার বাড়িতে পুজোর পরিবেশ আছে। রিয়ান জানে বুধবার গণেশজির পুজো হয়। মঙ্গলবার হনুমানজির। বিয়ে তো আসলে পুজো। রিয়ানকে বলেছি এটা পুজো। আর রাতুল আমাদের সঙ্গে থাকবে এটা ভেবে রিয়ানও খুব খুশি।

প্রশ্ন: কখনও শুনতে হয়েছে যে, বয়সের থেকে বড় একজন মহিলাকে বিয়ে করছেন যার ছেলে আছে?

রাতুল: এটা তো সমাজের ধারণা। এ সব নিয়ে ভাবি না। আমি এমনিতেই পাঁচ ওভার নিয়ে ভাবি। পরেরটা পরে ভাবব।

রূপাঞ্জনা: আমার ঠাকুমা আর ঠাকুরদার মধ্যে ১৮ বছরের তফাত ছিল। ওঁদের প্রেমে তো কোনও দিন ঘাটতি দেখিনি। বিয়ের ক্ষেত্রে মেয়ে বড় হলে আজও আলাদা ভাবে দেখা হয়। মনে করা হয়, স্বামী বয়সে বড় হবে। বড় হলে তার কাছে শিখবে। কিন্তু শেখা তো পারস্পরিক। আমাদের দু’জনের নিজস্ব বোঝাপড়াই আসল। রাতুল এমন একজন মানুষ যাকে আমি সব বলতে পারি। ওর ক্ষেত্রেও তাই। আমরা বিয়ের কার্ড করিনি কাগজ বাঁচাব বলে। ই-কার্ড করেছি। সেটা যখন পাঠালাম, জানালাম আমরা বিয়ে করছি, তখন দেখলাম সবাই খুব খুশি। ইন্ডাস্ট্রির মানুষও অভিনন্দন জানিয়েছেন।

প্রশ্ন: কী রঙের পোশাক পরছেন বিয়ের দিন?

রাতুল: রূপাঞ্জনা পোশাকের ব্যাপারে খুব খুঁতখুঁতে।

রূপাঞ্জনা: বিয়ের পোশাক, তাই সিঁদুরের রং ভেবেছি। খুব সুন্দর একটা বেনারসি। আমাদের গায়েহলুদ থেকে সিঁদুরদান সব হবে। বিয়ের জন্য রাতুলেরও দেখলাম ওই সিঁদুর রং পছন্দ। আমাদের বিয়ের দিনে পরার জন্য রিয়ানের পাঞ্জাবি কিন্তু রাতুল কিনে দিয়েছে। রাতুল যা কেনে প্রয়োজনে আমাকে হোয়াট্স‌অ্যাপ কলেও দেখায়। এই আদানপ্রদানই আমাদের সম্পর্ককে সুন্দর চেহারা দিয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement