(বাঁ দিক থেকে) শ্রীলেখা মিত্র, কৌশানী মুখোপাধ্যায়, পায়েল সরকার, রুদ্রনীল ঘোষ। গ্রাফিক্স: সনৎ সিংহ।
২ অক্টোবর মহালয়া। শারদীয়া দোরগোড়ায়। কলকাতা কি ভুলে গিয়েছে আরজি কর-কাণ্ড? এমনটা যে নয়, শুক্রবার তার আভাস পাওয়া গেল। এ দিনের ঘোষণা, স্বাধীনতা দিবসের আগের রাতের মতোই দেবীপক্ষের সূচনার আগের রাতে ফের পথে নামবে শহরবাসী। তাঁদের পাশে থাকবেন বাংলা বিনোদন দুনিয়ার খ্যাতনামীরাও। আনন্দবাজার অনলাইনের মারফত এমনই বার্তা দিয়েছেন তাঁরা।
স্বাধীনতা দিবসের আগের রাতের মতো আরও এক বার রাত এবং দেবীপক্ষের ভোর দখল। কতটা যুক্তিযুক্ত? বিষয়টিকে কী চোখে দেখছেন তাঁরা? এ ভাবে বিচার আসবে? দেবীপক্ষের প্রথম সকালে কী প্রার্থনাই বা জানাবেন? আনন্দবাজার অনলাইন প্রশ্ন রেখেছিল শ্রীলেখা মিত্র, পায়েল সরকার, কৌশানী মুখোপাধ্যায়, লহমা ভট্টাচার্য, রুদ্রনীল ঘোষের কাছে।
প্রত্যেকে সমস্ত অন্যায়ের বিনাশ চাইছেন দেবীর কাছে। পাশাপাশি, আরজি কর-কাণ্ডের জন্য, নির্যাতিতার জন্য ন্যায় বিচার চাইছেন তাঁরা। শ্রীলেখা যেমন বলেছেন, “প্রথমে মা, পরে বাবার জন্য তর্পণ করছি গত কয়েক বছর। তর্পণ মানে আমার কাছে পূর্বসূরিদের স্মরণ করার দিন। একই সঙ্গে দেবীপক্ষের সূচনা মানেই অশুভের বিনাশ, শুভের প্রতিষ্ঠা। সেই জায়গা থেকে চাইছি, এ বারের দেবীপক্ষ যেন নির্যাতিতার জন্য ন্যায় নিয়ে আসে।” পরিচালক-অভিনেত্রীর মতে, এ বছরের পুজো অন্য রকম। তিনি মন থেকে কোনও কিছুতেই উৎসাহ পাচ্ছেন না। তবে রাত দখলে পথে নামার ইচ্ছে রয়েছে।
রুদ্রনীল ঘোষ আরজি কর-কাণ্ডের শুরু থেকে সরব। এ দিনও প্রসঙ্গ জেনে তিনি নিজেই একটা বক্তব্য লিখে পাঠিয়েছেন আনন্দবাজার অনলাইনকে। তাঁর বার্তা, “ছোট থেকে মহালয়ায় রাত আর রেডিয়ো দখল করতাম। শেষে ভোর দখল করে শান্ত হতাম বীরেন্দ্রকৃষ্ণের গলা পেয়ে। সেই অনুভূতি থেকে বলছি, পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান পরিস্থিতিতে রোজ দিন-রাত দখল করা উচিত প্রত্যেকের। যাতে গণতন্ত্রের প্রতিমা, ন্যায়বিচারের মন্ত্র আর যেন চুরি না হয়।” তাঁর আরও বক্তব্য, যাঁরা মহালয়ার অর্থ জেনে রাত জাগবেন তাঁদের তিনি শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন। পাশাপাশি কটাক্ষও ছুড়েছেন, “যাঁরা সনাতনী হয়েও সনাতন ধর্মাচরণ নিয়ে অশ্রদ্ধা করেন তাঁরা মহালয়ের পুণ্য তিথিতে রাত-ভোর জাগলে, তাঁদের নেতারা বকবেন কি না সেটাই চিন্তার। সঠিক তদন্তে ন্যায়বিচার আসুক। দোষীরা দ্রুত শাস্তি পাক, অন্তর থেকে চাইছি।”
প্রায় একই কথা শোনা গিয়েছে পায়েল-লহমার কাছে। পায়েল জানিয়েছেন, কেউ যে নির্যাতিতাকে ভোলেননি তার প্রমাণ মহালয়ার আগের রাতের পথ দখল। তিনি এর প্রয়োজনীয়তা দেখছেন। পাশাপাশি এ-ও বলেছেন, “এখন বিচারের ভার সুপ্রিম কোর্টের উপরে। তদন্তে সিবিআই। ফলে, রাতারাতি কিছু একটা হয়ে যাবে এমন সম্ভব নয়। তদন্তকারী অফিসারদের সময় দিতে হবে। আমরা কেবল বিশেষ দিনে ঈশ্বরের কাছে নির্যাতিতার জন্য ন্যায় চাইতে পারি।”
এ বছর কৌশানীর পুজোর ছবি ‘বহুরূপী’ মুক্তি পাচ্ছে। শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের বিপরীতে দেখা যাবে তাঁকে। ছবির প্রচারে তুমুল ব্যস্ত তিনি। তাই আগে হয়ে যাওয়া রাত-ভোর দখলে তিনি অংশ নিতে পারেননি। সেই আফসোস প্রকাশ করে নায়িকা বলেছেন, “ব্যস্ততার কারণে পথে নামতে পারিনি। কিন্তু প্রত্যেক মুহূর্তে নির্যাতিতার পাশে রয়েছি। উনি ন্যায় পান, ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা জানিয়েছি। সেই জায়গা থেকেই বলছি, এই ধরনের কর্মসূচির প্রয়োজন। শহরবাসী কাজে থাকুন, পুজোয় থাকুন। পাশাপাশি, প্রতিবাদেও পাশে থাকুন। যাতে অন্যায়ের বিনাশ হয়ে দেবীপক্ষে ন্যায় আসে।”