টুকটুকির কাহিনি জেনে এবার তাঁর পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস দিলেন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত।
উত্তর ২৪ পরগনার হাবড়ার মেয়ে টুকটুকি দাস এখন সারা দেশ জুড়ে সংবাদ শিরোনামে। ইংরেজিতে স্নাতকোত্তর টুকটুকি হাবড়া রেলস্টেশনের দু নম্বর প্ল্যাটফর্মে চায়ের দোকান খুলেছেন। নাম ‘এম এ ইংলিশ চাইওয়ালি’। ব্র্যান্ডটিকে বড় করে তোলাই স্বপ্ন এই তরুণীর। এই নামে তাঁর ইউটিউব চ্যানেল দ্রুত জনপ্রিয় হয়েছে। এদিকে চায়ের পাশে শিঙাড়ার জন্যেও ভিড় জমছে তাঁর এক চিলতে প্ল্যাটফর্ম-স্টলে। দরিদ্র কিন্তু মেধাবী, লড়াকু মেয়েটির কাণ্ড বিশেষ আলোড়ন তুলেছে সমাজে। ক্রমশ সার্থক হয়ে উঠছে স্বাধীনচেতা টুকটুকির স্বপ্ন।
টুকটুকির কাহিনি জেনে এবার তাঁর পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস দিলেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। আনন্দবাজার অনলাইনকে তিনি জানিয়েছেন, ‘‘টুকটুকির জন্য আমি গর্বিত, আনন্দিত। ও একটা উদাহরণ হয়ে উঠেছে। টুকটুকি ব্র্যান্ড বানাতে চায়, ওর মধ্যে সেই ক্ষমতা আছে। সব কাজ এরকম শূন্য থেকেই শুরু হয়। টুকটুকি এমএ পাশ করেছে। ওর মধ্যে শিক্ষার আলো আছে, যা ওকে এই কাজে অনেক শক্তি দেবে। আমি বিশ্বাস করি যে অধ্যবসায় এবং বিশ্বাসের জোরেই তার ‘এম এ ইংলিশ চাইওয়ালি’ ব্র্যান্ড বড় হবে অনেক। টুকটুকিকে অন্তর থেকে ভালবাসা জানাই।’’
ঋতুপর্ণার মতে এই যে মেয়েরা স্বাধীন চিন্তা নিয়ে জীবনে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে, সমাজের এই ছবিটা তাঁকে বেশ আনন্দ দেয়। তিনি মনে করেন অর্থের থেকেও বেশি প্রয়োজন ভেতরের ইচ্ছাশক্তির।
ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তের শুভেচ্ছার কথা জেনে আপ্লুত টুকটুকি বললেন, ‘‘ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত! ও, এরকম স্বপ্নের মানুষ আমার মাথায় হাত রেখে আশীর্বাদ করলে আমার স্বপ্ন সফল হবেই। ম্যাডামের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। নতুন নিজস্ব দোকান খুলতে পারলে ম্যাডামকে আমন্ত্রণ জানাব। সেই দিনের অপেক্ষায় আছি।’’
নতুন প্রজন্মের মেয়ে টুকটুকির স্বপ্ন আজ একটি সদর্থক দৃষ্টান্ত।
টুকটুকির প্রেরণা, মধ্যপ্রদেশের লাবরাভদা গ্রামে কৃষকের ছেলে ‘এমবিএ চাওয়ালা’ প্রফুল্ল বিল্লোর। চায়ের স্টল খুলে ব্যবসায়ী হওয়ার স্বপ্ন দেখেন তিনি। দোকানের নামে শিক্ষাগত যোগ্যতাকে জুড়ে দেন। সারা দেশে এখন তাঁর অনেকগুলি আউটলেট। অনুপ্রাণিত টুকটুকি দাস এই পথেই হাঁটতে শুরু করেছেন। সহমর্মী মানুষের ভালবাসাই তাঁর শক্তি।
হাবড়ার বিধায়ক ও মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক টুকটুকিকে সবরকম সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তাঁর কাছে চাকরি চাননি টুকটুকি, নিজস্ব বিপণি প্রতিষ্ঠার জন্য সহযোগিতা চেয়েছেন। জানা গিয়েছে মন্ত্রীর তরফে কলকাতা বা হাবরায় দোকানঘরের সন্ধান চলছে।