রিয়া চক্রবর্তী।
এ যেন উলটপূরাণ। নেটাগরিকদের কাঠগড়ায় অঘোষিত ‘ভিলেন’ রিয়ার জন্য ন্যায়বিচার চাইছে কারা? #জাস্টিসফর সুশান্তের পাশাপাশি কেনই বা সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রেন্ড হচ্ছে #জাস্টিস ফর রিয়া-ও! টুইটারেও তাঁর অনুরাগীর সংখ্যা দু’দিনে বেড়েছে বেশ খানিক।
ঘটনার শুরুটা দিন দুয়েক আগে। দীর্ঘ নীরবতা ভেঙে তিন-চারটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে মুখ খুলেছিলেন রিয়া। উত্তর দিয়েছিলেন অনেক না জানা প্রশ্নের। সুশান্তের সঙ্গে তাঁর ইউরোপ ট্রিপ থেকে শুরু করে মহেশ ভট্টের সঙ্গে সম্পর্ক...ইত্যাদি। আর তাতেই নেটাগরিকদের একাংশের মনে রিয়ার বিরুদ্ধে পুঞ্জীভূত রাগ-অভিমানের পাহাড় গলতে শুরু করেছে।
She is growing. Silent supporters please pray for her. #JusticeForRhea pic.twitter.com/vhf3iSLoC8
তাঁরা বলছেন, “সত্যিই তো এ ভাবে ভেবে দেখিনি! তিনটি কেন্দ্রীয় সংস্থার রায়দানের আগেই কী করেই বা একজনকে দোষী তকমা দিয়ে দিতে পারি?” আর একজনের প্রশ্ন, “সুশান্তের প্রেমিকা ছিলেন রিয়া। আর এই সমাজে সব দোষ তো প্রেমিকাদেরই হয়ে থাকে তাই না। রিয়া দোষী কি নির্দোষ তা আমরা বিচার করবার কে? আইন নিজের হাতে নেওয়ার অধিকার কে দিয়েছে আমাদের?”
এক সাক্ষাৎকারে কথা বলতে বলতে কেঁদে ফেলেছিলেন রিয়া। সেই ভিডিয়ো শেয়ার করে আর একজন নেটাগরিক লিখছেন, “সুশান্তের ন্যায়বিচার যেমন চাই আমরা, তোমারও ন্যায়বিচার চাই। আজ পর্যন্ত সিবিআই থেকে মুম্বই পুলিশ যে যখন ডেকেছে তুমি গিয়েছ। যদি দোষী হও, কঠিন শাস্তি হোক তোমার। কিন্তু সত্যি যদি নির্দোষ হও যে পরিমাণ মানসিক চাপের মধ্যে দিয়ে তোমাকে প্রতিদিন যেতে হচ্ছে তাঁর জন্য আমি সবার তরফ থেকে ক্ষমা চাইছি।“ একাংশের বক্তব্য, “রিয়া সফ্ট টার্গেট, তাঁকে অপদস্থ করা যাচ্ছে সহজেই, কিন্তু রিয়ার উপর এই একবজ্ঞা রাগের বহিঃপ্রকাশের ফলে কি কোথাও গিয়ে আড়ালে চলে যাচ্ছে আসল অপরাধীরা? ভাবুন।“
আর এ সব কারণেই টুইটারেও আচমকাই ট্রেন্ড করতে শুরু করেছে #জাস্টিস ফর রিয়া। আসছে কমেন্ট, “ইনোসেন্ট আনটিল প্রুভেন গিল্টি”।
তবে বিরূপ মন্তব্যও রয়েছে। আর তার সংখ্যাটাই অনেকটা বেশি। তাঁদের কাছে রিয়ার সাক্ষাৎকার ‘পাব্লিসিটি স্টান্ট’ ছাড়া কিছুই না। তাঁদের হাজারও প্রশ্ন। ‘রিয়া কেন ড্রাগ দিয়েছিলেন সুশান্তকে’, ‘মহেশ রিয়ার সুগার ড্যাডি’ ইত্যাদি, ইত্যাদি। সব প্রশ্নের উত্তর অনুসন্ধান করছে অনুসন্ধানকারী দল।
কিন্তু মিডিয়া থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় রায় বের হওয়ার আগেই রিয়াকে দোষী ভেবে ফেলে চরিত্র- পরিবার নিয়ে যে কুৎসিত আক্রমণ গত দু’মাস ধরে চলে আসছে, এই নতুন ট্রেন্ডে তাতে কোথাও গিয়ে ভাঁটা পড়ল কি? নীরবতা ভেঙে কি তবে ঠিকই করেছেন বাঙালি মেয়ে?