Rezwana Choudhury Banya

Rezwana Choudhury Bannya: বাংলাদেশে যৌনকর্মীর সন্তানদের রবীন্দ্রনাথের গান শেখাবেন রেজওয়ানা

রবীন্দ্রনাথের গান মানুষের জীবন তৈরি করে, এই বোধ থেকেই আগামিতে যৌনকর্মীর সন্তানদের রবীন্দ্রগান এবং শিক্ষা দেওয়ার পরিকল্পনা করছেন রেজওয়ানা।

Advertisement

স্রবন্তী বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০২১ ১৪:০৯
Share:

সঙ্গীতশিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা।

অপর্ণা সেনের ‘সোনাটা’ ছবিতে নিজের গলায় রবীন্দ্রসংগীত গাইতে হবে। তাতে শাবানা আজমির ভরসা হয়ে উঠেছিলেন তিনি। সঙ্গীতশিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা। রেজওয়ানার গাওয়া গান শুনেই অনুশীলন করেছিলেন শাবানা।
করোনা পরবর্তী কলকাতায় এই প্রথম মঞ্চে গান গাইবেন ষাট পেরনো শিল্পী। ২৪ ডিসেম্বর উত্তম মঞ্চের এই সান্ধ্য আসরে তাঁর সঙ্গী আর এক বিশিষ্ট শিল্পী প্রমিতা মল্লিক। আনন্দবাজার অনলাইনকে রেজওয়ানা বললেন, “ঢাকায় এখন অনুষ্ঠান হচ্ছে। ওখানে করোনার প্রকোপ কম। কলকাতায় করোনার পরিস্থিতি অবশ্য জানি না। তবে এত দিন পরে মঞ্চে গান গাইতে ভাল লাগবে।”
রবীন্দ্রনাথের গান তাঁর পথ চলার সঙ্গী। রেজওয়ানা মনে করেন, “রবীন্দ্রনাথই প্রথম বিশ্ব-নাগরিকের কথা বলেছিলেন। এই ফেসবুক, টুইটারের দিনে এখন তো আমরা তা-ই।” নিজে যে খুব নেটমাধ্যমে সচল, তা একেবারেই নয়। ইমেল দেখেন মাঝে মাঝে। অন্য কিছুর সময় নেই। ইচ্ছেও নেই।
করোনা কালে বদলে গিয়েছে রবীন্দ্রসঙ্গীত শেখানোর পদ্ধতি। শিল্পীর কথায়, “অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার পদ্ধতিতে একটা বিষয় স্পষ্ট হল। যিনি গান শেখান, তাঁর পরিশ্রম অনেক বেশি। আর যাঁরা গান শিখছেন, তাঁদের অনেক বেশি সুবিধে হয়েছে। কারণ প্রত্যেক শিক্ষার্থী একা শেখেন। ফলে তাঁদের অনেক বেশি সময় দেওয়া যায়।”

Advertisement

করোনার পরে সঙ্গীত জগতের সমূহ ক্ষতি নিয়ে তিনি যারপরনাই চিন্তিত। প্রেক্ষাগৃহের মালিক থেকে যন্ত্রানুষঙ্গের শিল্পী, সকলেরই রোজকার দিনযাপনে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে এই অতিমারি। তবে এ নিয়ে সজাগ শিল্পী। বললেন, “বাংলাদেশের জাতীয় ভাষা বাংলা। তাই বাংলা গানের প্রচার বা প্রসার এ দেশে যেমন করে হয়, কলকাতায় সেটা হতে পারে না। বাংলা ওখানে তো প্রাদেশিক ভাষা।”
রবীন্দ্রনাথের গান গাওয়ার মধ্যেই নিজের জীবনকে আটকে রাখেননি রেজওয়ানা। ভেবেছেন তার বিস্তারের কথাও। বললেন, “শান্তিনিকেতনের মতো একটা পরিবেশ তৈরি করতে চেয়েছিলাম। সেই স্বপ্ন পূর্ণ হয়েছে। ‘রবীন্দ্রসৃজন কলা বিশ্ববিদ্যালয়’ তৈরি করেছি আমরা। বাংলাদেশ সরকারের অনুমতি নিয়ে। এটা গাজিপুরে, ঢাকা থেকে দেড়-দু’ঘণ্টার ড্রাইভ। ঘন জঙ্গল ঘেরা এলাকায় এই বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি হয়েছে।” প্রবীণ শিল্পী মনে করেন, পারফর্মিং আর্টিস্টদের পায়ের তলার মাটি শক্ত করা সহজ নয়। তার জন্য ধৈর্য, ঠান্ডা মাথা লাগে। লেগে থাকতে হয়। নতুন এই বিশ্ববিদ্যালয়ে গান শেখার পাশাপাশি সেই প্রশিক্ষণও দেওয়া হবে বলে জানালেন তিনি।

রবীন্দ্রনাথের গান মানুষের জীবন তৈরি করে, এই বোধ থেকেই আগামিতে যৌনকর্মীদের সন্তানদের রবীন্দ্রনাথের গান এবং শিক্ষা দেওয়ার পরিকল্পনা করছেন রেজওয়ানা। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তবেই এই কাজে হাত দেবেন শিল্পী।
তবে কলকাতার মানুষ আপাতত ২৪ ডিসেম্বরের দিকে তাকিয়ে। এক মঞ্চে অনেক দিন পরে রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা আর প্রমিতা মল্লিককে শুনবে কলকাতা। উদ্যোক্তাদের খবর, ইতিমধ্যেই এই অনুষ্ঠান নিয়ে যথেষ্ট আগ্রহ দেখা যাচ্ছে শহরের শ্রোতাদের মধ্যে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement