Movie Review of Munjya

সিজিআই-ই সার, না পাওয়া গেল ভয়, না পেল হাসি, আর ভূত! সে কোথায়?

ভূতের ছবি বলে প্রচারিত ‘মুঞ্জ্যা’ একটি সম্পূর্ণ ব্যর্থ ছবি হয়েই রয়ে গেল। কেন? আনন্দবাজার অনলাইনের বিশ্লেষণ।

Advertisement

শ্রাবন্তী চক্রবর্তী

মুম্বই শেষ আপডেট: ১১ জুন ২০২৪ ১৬:০৫
Share:

‘মুঞ্জ্যা’ ছবির পোস্টার। ছবি: সংগৃহীত।

হিন্দি ভাষায় ভাল কমেডি— হরর ধারার ছবি শেষ আমরা ভাল দেখেছি ‘স্ত্রী’ ছবিতে, আর সেই একই প্রযোজক যখন ‘মুঞ্জ্যা’ ছবি নিয়ে আসেন, তখন প্রত্যাশা বেশি থাকে বইকি। ছবির প্রথম তিরিশ মিনিট বেশ টান টান, কিছু মুহূর্ত বেশ রুদ্ধশ্বাস, কিন্তু কোথাও না কোথাও অতিরিক্ত হাস্যকৌতুক ছবির গতিকে শ্লথ করে দেয়। লোককাহিনিকে কেন্দ্র করে ভৌতিক ছবি এর আগে আমরা দেখেছি ‘কান্তারা’ এবং ‘তুম্বাড’-এ। ‘মুঞ্জ্যা’ ছবির গল্পও কোঙ্কন লোককাহিনিকে ভিত্তি করে বানানো হয়েছে।

Advertisement

আদিত্য সরপোতদার পরিচালিত এই ছবির প্রধান নায়ক মুঞ্জ্যা নিজেই (সিজিআই প্রযুক্তি দ্বারা বানানো), যার দুষ্টু-মিষ্টি অবতার আপনাকে ভয় কম দেখাবে, বরং হাসাবেই বেশি। ‘মুঞ্জ্যা’ মরাঠি সম্প্রদায়ে একটি ঐতিহ্যগত প্রথা। ধরুন, কমবয়সি একটি বিবাহিত ব্রাহ্মণ ছেলের বিয়ের ১০ দিন আগে মৃত্যু হল। তা হলে সে মুঞ্জ্যার আকার ধারণ করে আর অশ্বত্থ গাছের আশেপাশে বিরাজ করবে।

‘মুঞ্জ্যা’ ছবির একটি দৃশ্যে শর্বরী এবং অভয় বর্মা। ছবি: সংগৃহীত।

‘মুঞ্জ্যা’র গল্প শুরু ১৯৫২ সালে মহারাষ্ট্রের চেতুকবাড়ি গ্রামে, যেখানে ১০ বছরের একটি ছেলে প্রেমে পড়ে তার থেকে বয়সে বড় একটি মেয়ের। কিন্তু ছেলেটির প্রেম ব্যর্থ হয় এবং সে তার বোনের হাতে প্রাণও হারায়। আর তার পরেই ঘটে সব বিপত্তি।

Advertisement

ছবির নায়ক বিট্টুর (অভয় ভর্মা) উপর সেই ভূত ভর করে, কারণ বিট্টুর মধ্যে দিয়ে সে তার অপূর্ণ ইচ্ছা পূরণ করতে চায়।

ছবির দুই লেখক, নীরেন ভট্ট আর যোগেশ চান্দকর গত ১০ বছর ধরে হিন্দি ছবির চিত্রনাট্য লিখছেন। ভৌতিক ছবির একটা ব্যাকরণ থাকে, আর লেখকদ্বয় ‘মুঞ্জ্যা’-র মাধ্যমে একটা নতুন কিছু হিন্দি ছবিতে আনতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সেই লক্ষ্যে তাঁরা সফল হলেন কি? বক্স অফিসের হিসাব সাফল্যের সাক্ষী হলেও, ছবিটি যে সমালোচকের দৃষ্টিতে বিশেষ পাত্তা পাবে না, এহ বাহ্য!

গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।

অভিনেতা অভয় ভর্মাকে এর আগে আমরা ‘ফ্যামিলি ম্যান’, ‘অ্যায় ওয়াতন মেরে ওয়াতন’-এ দেখেছি, ‘মুঞ্জ্যা’-তে আগাগোড়া অভয় খুব সপ্রতিভ। প্রখ্যাত মরাঠি অভিনেত্রী সুহাস জোশীর বলিষ্ঠ অভিনয় নজর কেড়েছে এখানে। নায়কের মায়ের ভূমিকায় মোনা সিংহ ভাল অভিনয় করেছেন, কিন্তু ‘লাল সিংহ চাড্ডার’ পর মোনাকে কি আমরা শুধু মায়ের ভূমিকাতেই দেখতে পাব?

দক্ষিণী ছবির প্রখ্যাত অভিনেতা সত্যরাজ, যিনি ‘বাহুবলী’ ছবির কাটাপ্পা চরিত্রের জন্য বেশি পরিচিত, তাঁকে এ রকম একটা দুর্বল চরিত্রে দেখাটা খুব নিরাশাজনক। বিরতির পর নায়িকা শর্বরী কিছু দৃশ্যে ভাল অভিনয় করেছেন। কিন্তু ছবিতে বেশি সুযোগ পাননি। সচিন-জিগরের সঙ্গীত খুব সাধারণ।

২ ঘন্টার ছবি ‘মুঞ্জ্যা’তে সৌরভ গোস্বামীর সিনেমাটোগ্রাফি জোরদার, কিন্তু বিরতির পর গল্প অনুমানযোগ্য। যে কোনও ভূতের গল্পের ছবির প্রধান বৈশিষ্ট্য হওয়া উচিত অনিশ্চয়তা, ‘মুঞ্জ্যা’-তে তার বড় অভাব। তাই ‘মুঞ্জ্যা’ ছবিটি শেষ পর্যন্ত দাঁড়ায়নি, না হয়েছে ভূতের বা ভয়ের ছবি, না হয়েছে সম্পূর্ণ হাসির কমেডি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement