Bollywood and Lakshadweep

লক্ষদ্বীপ আর মলদ্বীপ গুলিয়ে মস্ত ভুল রণবীরের, সংশোধন করে বাঁচলেন রোষের হাত থেকে

দেশের প্রধানমন্ত্রীর অপমান মেনে নিতে পারেনি বলিউড। তাই দলে দলে লক্ষদ্বীপের প্রচার করছেন তাঁরা। সেই দলে নাম লেখাতে গিয়ে কেলোর কীর্তি করে ফেললেন রণবীর সিংহ।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০২৪ ১৮:৩০
Share:

রণবীর সিংহ। ছবি: সংগৃহীত।

ভারত এবং প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্যের জেরে ভারতীয়দের রোষের মুখে পড়েছে দ্বীপরাষ্ট্র মলদ্বীপের সরকার। এমনকি, মলদ্বীপকে বয়কট করার ডাকও দিয়েছেন বলিউড এবং ক্রিকেট মহলের তাবড় তারকারা। মলদ্বীপ না গিয়ে ভারতীয় দ্বীপগুলি ঘুরে দেখার আবেদন করে গলা মিলিয়েছেন তাঁরা।

Advertisement

বিতর্ক শুরু হতেই ভারত এবং প্রধানমন্ত্রীর পাশে দাঁড়িয়েছেন অক্ষয় কুমার, সচিন তেন্ডুলকর, সলমন খান, কঙ্গনা রানাউত, জন আব্রাহাম, শ্রদ্ধা কপূর, হার্দিক পাণ্ড্যের মতো তারকারা। মলদ্বীপ যেতে বারণ করার পাশাপাশি, দেশবাসীকে ভারতীয় দ্বীপগুলি অন্বেষণ করার বার্তাও দিয়েছেন তাঁরা। সারা আলি খান থেকে জাহ্নবী কপূর— সকলকেই এই দ্বীপগুলিতে যেতে উৎসাহ দিচ্ছেন। দিব্যি সেই দলে নাম লিখিয়েছিলেন রণবীর সিংহও। কিন্তু এমন একটা ভুল করে ফেললেন যে, উল্টো সকলের রোষের মুখে পড়তে হল তাঁকে।

অভিনেতা একটি ছবি টুইট করে লক্ষদ্বীপের জয়গান করতে গিয়েছিলেন। লিখেছিলেন, ‘‘২০২৪-এ চলুন ভারত ঘুরে দেখি। কত কিছু ঘুরে দেখার আছে আমাদের সমুদ্রসৈকতগুলিতে। চলো, ভারত দেখো।’’। সবই ঠিক ছিল। কিন্তু তিনি লক্ষদ্বীপকে গুলিয়ে ফেললেন মলদ্বীপের সঙ্গে। স্বাভাবিক, এত বার ওখানেই ঘুরতে গিয়েছেন। এমনকি, জীবনসঙ্গী দীপিকা পাড়ুকোনকে বিয়ের প্রস্তাবও দিয়েছিলেন মলদ্বীপেই। তাই দুর্বলতা তো থাকবেই। তাই হয়তো ভুলবশত, লক্ষদ্বীপের প্রচার করতে গিয়ে মলদ্বীপের ছবি ব্যবহার করে ফেলেছিলেন তিনি। ব্যস! আর যান কোথায়! নেটাগরিকরা তীব্র ভাবে বিদ্রুপ-রসিকতা শুরু করেন। নিজের ভুল বুঝতে পেরে তড়িঘড়ি সেই পোস্ট মুছে ফেললেন দীপিকার স্বামী।

Advertisement

ভারতের পাশাপাশি মলদ্বীপেও মন্ত্রীদের মন্তব্য ঘিরে বিতর্ক চলছে। ইতিমধ্যে তিন জন মন্ত্রীকে সাসপেন্ড করে দিয়েছে মলদ্বীপের মহম্মদ মুইজ়ু সরকার। তাঁরা হলেন মরিয়ম শিউনা, মালশা শরিফ এবং মাহজ়ুম মাজিদ।

কী নিয়ে এত বিতর্ক?

সম্প্রতি ভারতের ক্ষুদ্রতম কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল লক্ষদ্বীপে গিয়েছিলেন মোদী। সেই সফরের বেশ কিছু ছবি এবং ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে ভাইরাল করা হয়। অভিযোগ, মলদ্বীপের ওই মন্ত্রীরা তেমনই কিছু ছবিতে মোদীকে ‘পুতুল’ এবং ‘জোকার’ বলে মন্তব্য করেন। ভারত-ইজ়রায়েল সম্পর্ক নিয়েও আপত্তিকর মন্তব্য করা হয়। পরে অবশ্য বিতর্কের মুখে পোস্টগুলি মুছে দেওয়া হয়।

মন্ত্রীদের ওই মন্তব্যে ভারতের সমাজমাধ্যমে ব্যাপক শোরগোল শুরু হয়। সমালোচনার ঝড় বয়ে যায় চারদিকে। মলদ্বীপ সরকার প্রথম দিকে বিষয়টিকে তেমন গুরুত্ব না দিলেও পরে সে দেশের বিরোধী দলগুলিও এই ইস্যুকে কেন্দ্র করে সরকারের সমালোচনা শুরু করে। মলদ্বীপের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম সোলি (যাঁকে পরাজিত করে মুইজ়ু সম্প্রতি ক্ষমতায় এসেছেন) এবং আর এক প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট মহম্মদ নাসিদ মোদীর সমালোচনা করা মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের দাবি তোলেন। তাঁরা জানান, ভারত মলদ্বীপের গুরুত্বপূর্ণ ‘মিত্র’। সেই দেশের প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে এমন মন্তব্য দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে বড় প্রভাব ফেলতে পারে। এর পরই ঘরে-বাইরে চাপের মুখে মুইজ়ু সরকার তিন মন্ত্রীকে সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত নেয়।

মুইজ়ু চিনপন্থী শাসক হিসাবে পরিচিত। এর আগে মলদ্বীপে যিনি ক্ষমতায় ছিলেন, সেই সোলি আবার ভারত ঘেঁষা। ফলে তাঁকে হারিয়ে মুইজ়ু কুর্সিতে বসার পরেই মলদ্বীপ এবং ভারতের সম্পর্কে বদলের ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছিল। ক্ষমতায় আসার পরে ভারতের সেনাকে মলদ্বীপ থেকে সরে যেতে বলেন প্রেসিডেন্ট মুইজ়ু। অন্য দিকে, চিনের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতাও কারও নজর এড়ায়নি। তবে মন্ত্রীদের মন্তব্য ঘিরে বিতর্কে মু্ইজ়ুকেও কিছুটা পিছু হটতে হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement