রণদীপের মতে, তিনি এমন কিছুই করেননি, যে কারণে বিলাসবহুল জীবন উদ্যাপন করতে ইচ্ছে করবে। ফাইল চিত্র
পার্টি কিংবা পুরস্কার অনুষ্ঠান, তারাদের হাটে প্রায় কখনওই চোখে পড়েন না রণদীপ হুদা। প্রায় দু’দশক ইন্ডাস্ট্রিতে রয়েছেন অভিনেতা। একাধিক প্রশংসিত ছবিতে কাজ করেছেন, তবু তাঁর সাড়া পাওয়া যায় না কেন? সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে জিজ্ঞাসা করতে চমকপ্রদ উত্তর ‘হাইওয়ে’ নায়কের। জানালেন, দিনের শেষে তিনি নিজেকে মহান কিছু ভাবেন না। খ্যাতির জগৎ থেকে দূরে থাকতেই তিনি স্বচ্ছন্দ।
এ দিকে তিনি যে খ্যাতির চূড়ায় বসে আছেন দর্শকের মনেই! ২০০১ সালে মীরা নায়ার পরিচালিত ‘মনসুন ওয়েডিং’ দিয়ে অভিনয়ে পা রাখেন রণদীপ। তার পর বহু সফল ছবিতে মূল্যবান উপস্থিতি নায়কের। ‘ওয়ান্স আপন আ টাইম ইন মুম্বাই’(২০১০), ‘জিসম ২’(২০১২), ‘ককটেল’(২০১২) থেকে শুরু করে ‘সর্বজিৎ’(২০১৬)-এর মতো ছবিগুলি সেই তালিকায় উল্লেখযোগ্য। ২০২০ সালে ‘এক্সট্র্যাকশন’ ছবি দিয়ে হলিউডেও নিজেকে প্রমাণ করেছেন রণদীপ। তবু তাঁর মধ্যে কোনও তারকাসুলভ আচরণ লক্ষ করেননি অনুরাগীরা। সমাজমাধ্যমেও যে তিনি খুব বেশি প্রতিক্রিয়া জানান, তা নয়।
রণদীপের মতে, তিনি এমন কিছুই করেননি যে কারণে বিলাসবহুল জীবন উদ্যাপন করতে ইচ্ছে করবে। তাঁর কথায়, “মনে হয় না জীবনের খাতায় আমি বড় কিছু করেছি। পুরস্কারের কোনও গুরুত্ব নেই আমার কাছে। সেগুলো সবই আপেক্ষিক সিদ্ধান্ত। মতামত মাত্র। কিন্তু নিজের প্রতি সৎ থাকা জরুরি। নিজের চোখে এক জন আসল মানুষ হয়ে বেঁচে থাকা আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ। যা-ই হয়ে যাক, আমি ভান করতে পারব না।”
এর পরই অনুষ্ঠানের প্রসঙ্গ তুলে রণবীর জানান, মঞ্চে উঠে খ্যাতিমান-যশস্বী মানুষ হওয়ার ভান করা তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়। কারণ, তাঁর চোখে তিনি নিজে সেই মানুষ নন। অভিনেতার সাফ জবাব, “আমি মনে করি না, লোকের মন জুগিয়ে পার্টিতে গিয়ে ভাল অভিনেতা হিসাবে নিজেকে প্রমাণ করা যায়!”
সম্প্রতি ‘স্বতন্ত্র বীর সাভরকর’ ছবির জন্য ১৮ কেজি ওজন কমিয়ে ফেলেছেন রণদীপ। ছবিতে তিনিই নামভূমিকায়, মুক্তিযোদ্ধা বীর বিনায়ক দামোদর সাভারকরের ভূমিকায়। মাথায় কংগ্রেসি টুপি, চোখে গোল চশমা। মোটা কালো গোঁফের উপর স্পষ্ট ফুটে আছে গালের হাড়। ঠিক যেমন ছিলেন সাভারকর। সুঠাম-সবল রণদীপের এ হেন রূপান্তর দেখে তাজ্জব ভক্তরা। কী করে পারলেন এই অসম্ভবকে সম্ভব করতে?
অভিনেতার কথায়, “আমি আমার জীবনযাত্রা ইচ্ছেমতো বদলে ফেলতে পারি। চেহারা নিয়েও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করি, তার মূল কারণ আমি সহজাত ভাবে এক জন ক্রীড়াবিদ। আমি মনে করি, শরীর সব সময় সক্রিয় থাকা উচিত। কারণ সেটিই আপনি। আপনার শরীরই এক মাত্র যন্ত্র, যা আপনার মালিক।”
ছোটবেলায় স্কুলে নাটক করতেন। ঘোড়ায় চড়তেন। খেলাধুলো করতেন। আর এখনও তা-ই করছেন বলে জানান ‘স্বতন্ত্র বীর সাভারকর’-এর অভিনেতা। তাঁর কাছে সবটাই আনন্দের। সহাস্যে জানান, প্যাশন তাঁর আছে, যে কোনও চরিত্রে খাপ খাইয়ে নেওয়া তাঁর বাঁ হাতের খেল।