সামনে রণবীর। ম্যালে ভিড় করে শ্যুটিং দেখছেন পর্যটক, বাসিন্দারা। ছবি: রবিন রাই
এপ্রিলের ভোর পাঁচটার ম্যাল। জগিং করতে হাতেগোনা লোকজন রাস্তায়। আবহাওয়া মনোরম থাকায় হালকা পুলওভারও রয়েছে কারও কারও গায়ে। কিন্তু সবাই হঠাৎ দৌড়তে বা হাঁটতে গিয়ে থমকে গিয়েছেন ম্যালে। বৃহস্পতিবারের ভোরে চারদিকে লোকজন, গাড়ি, ক্যামেরা আর পুলিশ। উঁকি দিতেই মিলেছে ঝলক। তাই অনেকেই রোজকার জগিং বা মর্নিং ওয়াক বাদ দিয়ে দাঁড়িয়ে পডেছেন ‘জগ্গা জাসুস’ রণবীর কপূরকে এক ঝলক দেখতে।
শৈলশহরে রণবীর কপূর অনুরাগ বসুর ছবির শ্যুটিং করতে এসেছেন তা চাউর হয়ে গিয়েছিল বুধবার বিকেল থেকেই। কিন্তু পরেরদিন সকালেই এমনভাবে শ্যুটিং আর নায়ককে দেখার সুয়োগ মিলবে তা ভাবেননি অনেকেই। তাই হয়ত, এক একটি শ্যুটের পর হাততালি আওয়াজে কেঁপেছে ম্যাল চৌরাস্তা। এর মাঝেই ধীরে ধীরে ভিড়ও হতে শুরু হয় ম্যালে। ভোট ৫টা থেকে সকাল ৮টা অবধি পুরোদম শ্যুটিং। প্রথম দফায় পিকআপ ভ্যান পিছনে বসে কালো প্যান্ট এবং ছাই রঙের পুলওভার পরে বসে ছিলেন রণবীর। যা একটি গানের দৃশ্য বলে জানা গিয়েছে। এর পরে হোটেলে ফিরে পোশাক বদলে আসেন নায়ক। এ বার সবুজ প্যান্ট এবং নীল জ্যাকেট। এ বার চৌরাস্তার বইয়ের দোকান থেকে তিনি বার হচ্ছেন। কয়েকজন লোককে পুলিশের হাতে তুলে দিলেন। সঙ্গে সঙ্গে হাততালিতে ফেটে পড়ল ম্যাল। ছবিটির সঙ্গে জড়িতরা জানান, ম্যালের বইয়ের দোকানটি ছবিতে ব্যাঙ্ক। আর সেখানে আসা ব্যাঙ্ক ডাকাতদের ধরেছেন জগ্গা জাসুস। এই দৃশ্যের শ্যুটিং হয়েছে।
ম্যালে পরিচালক অনুরাগ বসু। নিজস্ব চিত্র।
পরিচালক অনুরাগ বসুও দার্জিলিঙের উৎসাহ দেখে উচ্ছ্বসিত। বললেন, ‘‘বরফির পর আমার এটা দ্বিতীয় ছবি দার্লিলিঙে। শৈলশহরের সঙ্গে আমার আবেগ জড়িয়ে গিয়েছে। আমি ঠিক করেছি, আমার প্রতিটি ছবিতেই দার্জিলিং থাকবে। আর আমি শুধু নই, আমার ক্যামেরামান রবি বর্মাও এখানে কবে আসব, কবে শ্যুট করব তা জানতে চেয়ে পাগল করে দিয়েছিল। সবাই আমরা পাহাড়ের সঙ্গে জড়িয়ে গিয়েছি। আর একটা তথ্য হয়ত অনেকে জানেন না, আমার ঠাকুমা ছোটবেলায় দার্জিলিঙের কারঝোরাতে থাকতেন, এখানেই তিনি স্কুলে পড়েছেন।’’
সিংতাম এলাকার মনীশ গুরুঙ্গ এই দৃশ্যে ছিলেন পুলিশ কনস্টেবলের চরিত্রে। তিনি বলেন, ‘‘আমার দাদা কলাকুশলীদের একটি গাড়ি চালাচ্ছেন। তাঁরা তাঁকে একজন লোক দরকার বলেছিলেন। আমি এক কথায় রাজি হয়ে যাই। কোনও গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র বা সংলাপ নয়। শুধুমাত্র রণবীরের পাশে থাকতে পেরেই দারুণ লাগছে।’’ বিকেলের পর ছবির সেট বসে সেন্ট পলস স্কুল। সেখানে কয়েক ঘণ্টার শ্যুটিং হয়েছে। আগামী তিনদিন পাহাড়ের ভুটিয়াবস্তি, মিরিক এবং সুকনায় ছবিটির শ্যুটিং হবে। অনুরাগ জানিয়েছেন, ছবির একটি অংশ জুড়ে রয়েছে ফ্ল্যাশব্যাক। সেখানে অভিনেতার ছবির চরিত্রের স্কুল-সহ কিছু জীবনের কিছু ঘটনা উঠে আসবে। গত দেড় বছর ধরে ছবির শ্যুটিং চলছে। এখন একেবারে শেষ পর্যায়ে এসে গিয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরের মাঝে ছবিটি রিলিজ করার পরিকল্পনা নিয়েছি। এর পরে কিছু শ্যুটিং মরক্কোতে হবে।’’
আরও পড়ুন:
‘জগ্গা’ হয়ে পাহাড়ে ফিরল ‘বরফি’